অর্পানেট ও একুশ শতাব্দীতে নেটওয়ার্কিং ভিশন

আমরা কিশোর বয়সেই তাদের একটু একটু করেই দেখার সুযোগ দিচ্ছি। কেন বিনোদনের জন্য তাদের হাতে তুলে দেই না গল্পের বই, মুক্তিযুদ্ধের, দেশের ইতিহাসের বই, মনীষীদের জীবনী কিংবা ছবি আঁকার রংতুলি।

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

শামীমা আফরোজ
কম্পিউটার বিজ্ঞানী ১৯৫০ সালে অধ্যাপক লিওনাড ক্রাইরনরক তার গবেষণাগার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে অর্পানেটের মাধ্যমে স্ট্যানফোড রিসাচ ইনস্টিটিউটে একটি বার্তা পাঠান। ব্যাস আর কি সেদিন থেকেই শুরু হয় ইন্টারনেট যাত্রার প্রথম ধাপ। ধীরে ধীরে ইন্টারনেট সংস্কৃতিতে যুক্ত হয়েছে ইলেকট্রনিক মেইল, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিং, ভয়েস ওভার প্রটোকল, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, ইন্টারেক্টিভ ভিডিও কল, ইন্টারনেট ফোরাম, অনলাইন কেনাকাটা, দ্রম্নতগতির ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক সেবা, ফাইবার অপটিকসসহ আরও কত কিছু। হতেই হবে, যুগের হাওয়া বলে কথা। যুগটা কি চলছে মনে আছে- না, এ জন্য আবার গুগলে সার্চ দিতে হবে; আপাতত হবে না- কারণ এগুলো সার্চ দিয়েই তবে লিখতে বসা। গ্রেগরীয় পুঞ্জিকা অনুসারে ২০০১ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত সময়কাল হলো ২১শ শতাব্দী। এটি ৩য় সহস্রাব্দের প্রথম শতাব্দী। এ সময়ে এসে আমার সন্তান, আপনার সন্তান আমাদের প্রত্যেকের সন্তান যারা কিশোর-কিশোরী, যারা তাদের ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে গড়ে তুলেছে ভার্চুয়াল জগৎ, গে কিশোর-কিশোরীর ভিশনটা কী? এ প্রশ্নটা কখনো কী আপনার সন্তানকে করেছেন, কখনো কী তাদের প্রশ্ন করেছেন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তারা কী দেখে, কী ধরনের মজা পায় এটা ব্যবহার করে, কতটা সময় ধরে সে এটাকে ব্যবহার করে, সবটুকুই কি আপনার চোখের সামনে ব্যবহার করে নাকি আড়ালেও? ওরাতো কিশোর, ওরা আমাদের সন্তান, তাই একজন সচেতন মা অথবা বাবা হিসেবে, একজন শিক্ষক হিসেবে সরাসরি আমাদেরই তাদের এ প্রশ্নগুলো করা উচিত। এমন অনেকগুলো কী, কেন, কেন অনেকদিন ধরে মাথায় ঘুরছিল- ব্যাস আর দেরি না, আর দেরি করা চলবে না, এখন যদি না পারি তবে আর কোনোদিনই পারব না; এ ভেবে অনেকগুলো প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম নিজের সন্তানের দিকে, ক্লাসের শিক্ষার্থীদের দিকে, আশপাশে পরিচিত কিশোর-কিশোরীর দিকে। তবে উত্তর পাওয়াটা এত সহজ ছিল না- কারণ কেউই অকপটে সব বলে দেবে এমনটাও না; তাই তাদের প্রথমে শর্ত? দিলাম। তোমাদের নাম প্রকাশ করতে লাগবে না; শুধু আমার প্রশ্নের উত্তর দিলেই চলবে। ওহঃবৎহবঃ ঁংধমবং ংঃধঃরংঃরপং-এর রিপোর্ট? অনুযায়ী ২০১৯-এর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইনটারনেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যবহারকারীর সংখ্যা এশিয়ায় ৫০.৩% যেখানে মিডেল ইস্ট ৩.৯%,অস্ট্রেলিয়া ০.৬%, নথ? আমেরিকা ৭.৬%, ইউরোপ ১৫.৯% (তথ্য সূত্র : িি.িরহঃবৎহবঃড়িৎষফংঃধঃং.পড়স)। তাছাড়া গেস্নাবাল ওয়েবের ইন্ডেক্স-এর মতে ২০১২ সালে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং পস্ন্যাটফর্মে প্রতিদিন গড়ে ৩৬ মিনিট ব্যয় করা হতো বর্তমানে যা এসে দাঁড়িয়েছে ৬ঘণ্টা ৪২ মিনিট (তথ্য সূত্র : বিধৎংড়পরধষ.পড়স)। আমার রিয়েলিটি জগৎকে ঘিরে যে সব মধ্যবিত্ত পরিবারের কিশোর-কিশোরীরা রয়েছে তাদের কে প্রথম প্রশ্ন করলাম- তোমাদের সবার কি নিজস্ব মোবাইল টেলিফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস আছে? জানা গেল ৬০% শিক্ষার্থীর নিজস্ব মোবাইল টেলিফোন আছে, বাকিরা মা, বাবা কিংবা বড় ভাই-বোনের থেকে নিয়ে ব্যবহার করে। বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে যেয়ে তোমরা মোবাইল টেলিফোনে বা তোমাদের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে কি দেখ? পছন্দ অনুসারে বেশির ভাগ দেখে ম্যাসেঞ্জার, লাইকি, ইউটিউব, টিকটক, ফেসবুক, নাটক, ইমো, ইন্সটাগ্রাম, ক্লিকবাজ, ব্যাচেলার বয়েজ, স্ন্যাপ চ্যাট, লাইভ চ্যাট। মনে মনে খুশি হলাম, যাক এগুলো ব্যবহার করে এমন কিই বা করা যায়। তারা বলে বেশিরভাগ ম্যাসেঞ্জারে গ্রম্নপ চ্যাট করে। অর্থাৎ তারা এ জগৎটাকেই দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ বলে মনে করতে শুরু করেছে। অনেকে বলে আমাদের টিকটকে মেয়েদের নাচের ভিডিও দেখতে ভালো লাগে। \হতোমরা নিজেরা টিকটকে ভিডিও বানাও না? অবশ্যই বানাই, কখনো বাড়িতে, কখনো পার্কে, রাস্তায় মোটকথা সুযোগ পেলেই বানাই। বাইরে কাউকে এটা বানাতে দেখ? অবশ্যই, আজকাল বাসে, পার্কে যে কোনো জায়গাতেই সবাই টিকটকের ভিডিও বানায়। অনেকে কিছুই পারে না, দেখলে মনে হয়, আমরা এর থেকে অনেক সুন্দর ভিডিও বানাই। প্রথম প্রথম এসব বানাতে লজ্জা লাগতো কিন্তু এখন স্বাভাবিক লাগে। টিকটকে মজার মজার ভিডিও, মেয়েদের নাচ, বুড়া মানুষের ঢং, মহিলাদের নেকামি, ভালোবাসা দেখতে কি যে মজা লাগে। তোমাদের তো প্রায় সবারই ফেসবুক একাউন্ট আছে, এটা কি নিজের নামে খোলা কিংবা প্রোফাইলে কার ছবি দেওয়া আছে আর কারাই বা তোমাদের বন্ধু? প্রায় সবারই একাউন্ট আছে দুই একজন ছাড়া। কারো কারো নিজের নামে একাউন্ট খোলা আছে, আবার কারো অন্য নামে, কেউ কেউ নামের আগে পরে ডিজে, প্রিন্সেস, বস এসব লাগায় যাতে সার্চ দিলেই নিজেকে একটু আলাদাভাবে চেনা যায়। কেউ কেউ আবার সম্পূর্ণ আলাদা এবং মজার মজার নাম ব্যবহার করে যেমন- আমি আছি তুমি নাই, খেকি কুত্তা, টেলেন্টেড বেয়াদব, আবাল পোলা, মুক্তি চাই, হৃৎপিন্ড, স্বপ্নের রাণী, দুলাভাই, কোকিল কোণ্ঠি, পোড়াকপাল, ইভটিজার, খায়া আর কাম নাই, জুতা চোর, কেমন লাগে, মরা কাক, অজানা বালক, আলিফ লায়লা, আঘাত দি অ্যাটাক, রঙ্গের ডিব্বা, অচেনা রাজপুত্র, ভাঙা মোবাইল, ১ টাকার ছ্যাকা, সার্কিট, ঘ্যাচাং রোমিও। কি অবাক করা কথা, আমাদের সন্তানরাই ভার্চুয়াল জগতের অপব্যবহারে প্রধান শিকার। তারা দিনে দিনে সীমাহীন কৌতূহল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নতুন কিছু জানার আগ্রহের দিকে। অথচ এ ব্যবহার তাকে ঠেলে দিচ্ছে কোনো ভয়ঙ্কর বিপদের দিকে। ধীরে ধীরে তারা হচ্ছে বিপদগামী। এ নেশাকে মনোবিজ্ঞানীরা ডিজিটাল মাদক বলে আখ্যায়িত করেছেন। নিজের ঘরে নিজের সন্তান মাদক নিচ্ছে আর আমরা নিশ্চুপ শুধু নীরব দর্শক। কারণ এ মাদকতো আমরাই তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। আমিইতো প্রধান মাদক সরবরাহকারী। আচ্ছা ফেসবুকে তোমাদের বন্ধু কারা? যারাই আমাদের রিকোয়েস্ট পাঠায় তাদের সবাইকে আমরা বন্ধু বানাই, না চিনলেও বানাই কারণ ফ্রেন্ডলিস্টের সংখ্যা কম বেশি নিয়ে পরিচিতদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। বেশি বন্ধু না থাকলে বন্ধুরা বলে বেল নাই, মেয়েরা পাত্তা দেয় না এসব। মেয়েরা বলে কাস নাই। বাবা, মা কিংবা পরিবারের কেউ তোমাদের ফেসবুকে বন্ধু থাকেন না? অসম্ভব, আগেই পরিচিতদের বস্নক মারি, একজন বলে আমি তো আগেই আমার বড় বোন ও দুলাভাইকে বস্নক করি কারণ তারা টের পেলে খবরই আছে। আমরা নিজেদের রিয়েল ছবি দেই না কেউ কেউ শুধু চোখ কিংবা হাতের চুড়ির ছবি দেয় যাতে কেউ না চিনতে পারে। তোমরা ফেসবুকে কী কর? কেউ গেম খেলছে লগইন করে, কেউ অন্যকে জানতে চায়, কেউ নিজেকে প্রকাশ করার নেশায়, তারা বলে মেয়েদের ছবিতে শুধু লাইক দিলে বলে লাইক উঠায় নে আর লাভ রিঅ্যাক্ট দে, না দিলে বস্নক দেয়। কেউ যদি মেয়েদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তাহলে তাকে পঁচানোর জন্য চলে নানা ধরনের পরিকল্পনা, কখনো তাকে নিজেদের ফোন দেয় ব্যবহার করতে এর পর লগ আউটের সুযোগ দেয় না এরপর ওই আইডিতে ঢুকে মেয়েদের ছবিতে লাইক দেয় আর মেয়েরা বস্নক দেয়, তা ছাড়া একটা আইডি আছে বোরহান নামে, সে নাকি অন্য একদেশের গোবাহিনীর পোশাক পরা প্রোফাইল ছবি দেওয়া, তার ছবি যদি স্ক্রিনশর্ট দিয়ে কোনো আইডিতে প্রোফাইল পিকচার দেওয়া হয় তাহলে গে আইডি ফেসবুক থেকে নাকি ব্যান করে দেওয়া হয়। কারো ফেসবুকে মার্কেট বেশি মানে আমাদের টার্গেট তার আইডি ব্যান করা। কী অবস্থা! ভাবা যায়, আমরাইতো এত কিছুু জানি না। তোমরা গেম খেল না? খেলি তো। ক্যানডি ক্রাস, টেমপেল রান, কল অব ডিউটিস,পাবজি, ফ্রি ফায়ারিং, লুডু স্টার, সাবওয়ে, ক্যাশ অফ ক্যান্স। গেমে পাওয়ার ভরার জন্য বিকাশ করি। টাকা ছাড়া গেম খেলে মজা নেই। ভেবে দেখলাম এসব গেমের প্রধান উপজীব্য হচ্ছে সহিংসতা, মারামারি, যুদ্ধ, আক্রমণ। এসব থেকে তারা কি শিখছে, কেমন হচ্ছে তাদের মনোভাব? আক্রমণাত্মক, হিংসা ও যুদ্ধ পরায়ন কিংবা পরাজয় মেনে না নেওয়ার মনোভাব আর এর ফলে বাস্তব জীবনে তখন সে পরজয়কে মেনে নিতে পারে না ফলে সৃষ্টি হয় হতাশা আর এ হতাশা এক সময়ে শিশুকে ঠেলে দেয় আত্মহত্যার দিকে। তারা খেলেও গ্রম্নপে; এতে তাদের চিন্তাধারাও একপেশে হয়ে যায়, যেখান থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। তখন ভার্চয়াল জগতের বাইরে বাস্তব জগৎ তার কাছে মনে হয় তুচ্ছ। এভাবে দিনের পরদিন চলতে থাকলে শিশু সেচ্ছায় নিজেকে গৃহবন্দি করে ফেলে। এত নষ্ট হয় তার সামাজিক দক্ষতা। তারা হয়ে যায় আত্মকেন্দ্রিক। তোমরা যে নেট চালাও কিংবা গেমের জন্য বিকাশ কর তার টাকা কিভাবে পেয়ে থাকো? কারো কারো বাড়িতেই নেট সংযোগ রয়েছে যার বিল বাবা-মা বহন করে, কেউ কম টাকায় তিন চার বাড়ি মিলে ভাগে নেট চালায়, কেউ টিফিনের টাকা থেকে জমায় তবে বেশির ভাগ তারা বাবা-মাকে খাতা বই কেনার জন্য মিথ্যা বলে টাকা দিয়ে কেনে, কেউ বলে স্কুলের বেতন ক্লাস থেকে চুরি হয়েছে। আবার কেউ প্রাইভেট পড়তে গেলে স্যারের বেতন কোনো মাসে দেয় না আর স্যারকে বলে এ মাসে বাবার সমস্যা আবার কোনো মাসে কিছু কম দেয়। বোঝা গেল এই বয়সেই তাদের আয় ইনকাম ভালোই হয়। ভালো, ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে মিথ্যা বলার প্রবণতা। তারা প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছে পারিবারিক বিচ্ছিন্নতার, শিখছে অন্যকে অবমাননা করা- কারণ ইন্টারনেটে অনুপযুক্ত ছবি বা বিষয়বস্ত পোস্টের মাধ্যমে তার বন্ধুদের সঙ্গে এই জাতীয় সামগ্রী ভাগ করে নিচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে অনুপযুক্ত সম্পর্ক। করছে সাইবার বুলিং, ট্রোলিং এগুলো যেন অপরিহার্য অঙ্গ। তোমরা সাধারণত রাতে কখন ঘুমাও? রাত ১২.৩০ কখনো ১টার দিকে কারণ রাতেই বেশি সুবিধা, বিছানায় শুয়ে শুয়ে চ্যাটিং এর আলাদা মজা। আবার খুব ভোরে ৫.৩০ থেকে ৭.০০ এরপর তো স্কুল। কখনো বেশি রাত জাগলে সকালে উঠি না বলি মাথাব্যথা, মাঝে মাঝে সত্যি মাথা ব্যথা হয়। ভালো। খুবই ভালো; কারণ তারা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় এধরনের একটা ডিভাইস হাতে নিয়ে ঘুমাতে যায় ফলে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ের পরে ঘুমায়, তা ছাড়া যে সব কিশোর-কিশোরীরা ইলেকট্রনিক ডিভাইস বেশি ব্যবহার করে তাদের মস্তিস্কে রাসায়নিক পরিবর্তন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পারেন এ ধরনের কিশোর-কিশোরীর মধ্যে চলে আসে হতাশা, অবসাদ, অনিদ্রা, উদ্বেগ, অস্থিরতা। শারীরিক সমস্যার মধ্যে চলে আসে মেরুদন্ডের ব্যথা, চোখের সমস্যা, মাথা ব্যথা, অতিরিক্ত হেড ফোন ব্যবহারে হয় কানেরও ক্ষতি। তাদের মধ্যে চলে আসে আসক্তি- যা বিশ্বব্যাপী মানসিক সমস্যার একটা বড় কারণ। আমাদের মস্তিষ্কে থাকা সেরেব্রাম যা আমাদের অঙ্গ থেকে আসা অনুভূতিকে গ্রহণ করে ও বিশ্লেষণ করে গে সেরেব্রামকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করে দেয়; কিশোর বয়সে অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার। তাহলে এখন আমাদের কী করণীয়? এই প্রশ্নটা কিন্ত অতিরিক্ত ইন্টারনেট কিংবা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের জন্য না, এটা হলো এতকিছুর জানার পর সব বাবা-মা, শিক্ষকদের জন্য। কী করণীয় আমাদের, কীভাবে জানাতে হবে এই সব কিশোর-কিশোরীকে নেটওয়ার্কিংয়ের অপব্যবহারের কুফল, কীভাবে ধরে রাখতে হবে ধর্ম, দেশ ও সমাজের সংস্কৃতি, কীভাবে রাখতে হবে আমাদের সন্তানকে সুস্থ ও স্বাভাবিক, কীভাবে বজায় থাকবে পারিবারিক বন্ধন, কীভাবে দূর হবে সহিংসতা, প্রতিহিংসা, আত্মঘাতী হামলা, অনুপযুক্ত সম্পর্ক আর সাইবার অপরাধ। উপায় খুঁজতে গেলে অনেক সমাধান আসবে, অনেক সুন্দর সুন্দর পরামর্শ কিংবা মতামতও আসবে কিন্ুত্ম এসব কিছুর আগে তাদের হাতে এ ডিজিটাল মাদক তুলে দেওয়া বন্ধ করতে হবে। আমরা কিশোর বয়সেই তাদের একটু একটু করেই দেখার সুযোগ দিচ্ছি। কেন বিনোদনের জন্য তাদের হাতে তুলে দেই না গল্পের বই, মুক্তিযুদ্ধের, দেশের ইতিহাসের বই, মনীষীদের জীবনী কিংবা ছবি আঁকার রংতুলি। আগে নিজেকে এই মাদক দেওয়ার অভ্যাস বন্ধ করতে হবে, নিজেকে ব্যস্ত রাখার চিন্তা কিছুটা সময় বন্ধ রেখে সময় দিতে হবে নিজেদের সন্তানকে তাহলে তারা ইন্টারনেটকে আপন করে নেওয়ার সুযোগটাইতো পাবে না। অর্পানেট আবিষ্কারের সুফলে বদলাতে হবে নিজেদের নেটওয়ার্কিং ভিশন। শামীমা আফরোজ: সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার শিক্ষা) ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়