দ্রম্নত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে দ্রম্নত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনাভাইরাস আর একস্থানে সীমাবদ্ধ নেই। নতুন করে আরও ৪১ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে মারা গেছেন আরও পাঁচজন। মঙ্গলবার দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। আমরা বলতে চাই, যখন দেশে দ্রম্নত করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তখন বিষয়টা কতটা ভয়ানক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে সেটি আমলে নিতে হবে। একদিকে দেশে জনসংখ্যা বেশি, অন্যদিকে প্রস্তুতি কতটা এবং মানুষের সচেতনতার চিত্র আমলে নিয়ে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখ না যে, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল- মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোই যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও নাজুক প্রস্তুতি নিয়ে দেশের চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্টরা কীভাবে এ মরণব্যাধি মোকাবিলা করবেন! এ ছাড়া জনমনে উদ্বেগ-আতঙ্ক হুহু করে বাড়ছে বলেও জানা গেছে। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনার উপসর্গ নিয়ে বিনা চিকিৎসায় একের পর এক সন্দেহভাজন রোগীর মৃতু্য এবং অনেক হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে অস্বীকৃতির খবর বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে নানা ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। এই ভয়ানক সময়ে এটাও আমলে নেওয়া দরকার, জেলা শহরগুলোতে করোনা চিকিৎসায় চিকিৎসক-নার্সদের পলায়নপর মনোভাবের সংবাদ প্রকাশ পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে করোনার চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে আস্থার সংকটের বিষয়ও সামনে এসেছিল। উলেস্নখ্য যে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১৬৪ জন, যাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৩৩ জন এবং মারা গেছে ১৭ জন। অন্যদিকে বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ লাখের বেশি। মৃতের সংখ্যা ৭৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কার্যত করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্বেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে দেশেও দ্রম্নত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে এমতাবস্থায় যদি কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা এবং আতঙ্ক সৃষ্টি হয় তবে তা ইতিবাচক হবে না। আমরা মনে করি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজন হলে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দিকে দৃষ্টি দিলে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা অত্যন্ত ভয়ানক, একইসঙ্গে এ দেশেও এর সংক্রমণ বাড়ছে- ফলে সার্বিক এই বিষয়গুলোকে এড়ানোর কোনো প্রকার সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। কেননা, যদি কোনো ধরনের ঘাটতি থেকে থাকে তবে সংক্রমণ বাড়বে- যা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ছাড়া এর আগে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের কারণে জ্বর বা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত অনেক রোগীকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানেও পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা না থাকায় অনেক রোগী বিনা চিকিৎসায় আরও মুমূর্ষু হয়ে পড়ছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে চিকিৎসা করছেন না বলে স্বীকার করেছেন তারা। আমরা বলতে চাই, একদিকে করোনাভাইরাসের মহামারিতে সারা বিশ্বের মানুষ ভীত, অন্যদিকে যদি সার্বিক প্রেক্ষাপটে যথাযথ প্রস্তুতি নিশ্চিত না হয় এবং অন্যান্য রোগের চিকিৎসা না মেলে তবে বিষয়টি উৎকণ্ঠার। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রম্নত উদ্যোগ নেওয়ার বিকল্প নেই। সর্বোপরি বলতে চাই, করোনাভাইরাসের কারণে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা। সব জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার ট্রেন, বিমান ও নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, করোনা প্রতিরোধে এই বিচ্ছিন্নতা জরুরি এবং যথাযথ সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং দেশের চিকিৎসা খাতে যেন কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি না হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এই কঠিন সময় মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।