শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
দ্রম্নত রায় কার্যকর হোক

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ গ্রেপ্তার

নতুনধারা
  ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও মৃতু্যদন্ডাদেশপ্রাপ্ত খুনি আবদুল মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার রাতে মাজেদকে ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক ৩টার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি বিশেষ দল মিরপুর সাড়ে ১১ এলাকা থেকে মাজেদকে গ্রেপ্তার করে। মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃতু্যদন্ডাদেশপ্রাপ্ত পাঁচ খুনি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও এএম রাশেদ চৌধুরী। তারা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। এই পাঁচ খুনি বিভিন্ন দেশে পলাতক অবস্থায় আছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

উলেস্নখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু এই হত্যাকান্ডের বিচারে পদে পদে বাধা আসে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপরই দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর দায়মুক্তি আইন বাতিল করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী মহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকার দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল ১৫ জনকে মৃতু্যদন্ডাদেশ দিয়ে রায় দেন। নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃতু্যদন্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি শেষে ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত রায় দেয়। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্র্টের তৃতীয় বেঞ্চ ১২ জন আসামির মৃতু্যদন্ড বহাল রেখে তিনজনকে খালাস দেন। এরপর ১২ আসামির মধ্যে প্রথমে চারজন ও পরে এক আসামি আপিল করেন। কিন্তু এরপর ছয় বছর আপিল শুনানি না হওয়ায় আটকে যায় বিচার-প্রক্রিয়া। দীর্ঘ ছয় বছর পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে আপিল বিভাগে একজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাটি আবার গতি পায়। ২০০৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির লিভ টু আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে।

আপিলের অনুমতির প্রায় দুই বছর পর ২০০৯ সালের অক্টোবরে শুনানি শুরু হয়। ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পাঁচ আসামির আপিল খারিজ করে। ফলে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১২ খুনির মৃতু্যদন্ডাদেশ বহাল থাকে। এর মধ্য দিয়ে ১৩ বছর ধরে চলা এই মামলার বিচার-প্রক্রিয়া শেষ হলে দায়মুক্ত হয় বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মুহিউদ্দিন আহমেদের মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়। ওই রায় কার্যকরের আগেই ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আসামি আজিজ পাশা। বঙ্গবন্ধুর খুনি আবদুল মাজেদ ২৩ বছর ধরে কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। তিনি গত ১৬ মার্চ ঢাকায় ফিরেছেন। এত বছর তিনি কীভাবে প্রতিবেশী দেশে অবস্থান করলেন এটাই বড় প্রশ্ন।

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাটামারা গ্রামের মরহুম আলী মিয়া চৌধুরীর ছেলে ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ। ১৯৭৫ সালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকান্ডের সময় তিনি অন্য আসামিদের সঙ্গে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।

দেশে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এটি একটি ইতিবাচক খবর। এখন দ্রম্নত রায় কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি অন্য পলাতক আসামিদেরও দেশে ফিরিয়ে এনে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95706 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1