ত্রাণ বিতরণ

স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি

প্রকাশ | ১১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার তিন দফায় ২০ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এই সময়ের মধ্যে জনগণকে ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে জীবনের তাগিদে রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় ত্রাণের অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে অসহায় মানুষকে। করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে ছুটির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের আয়ের পথ। এ অবস্থায় কর্মহীন অসহায় দরিদ্র মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আট ওয়ার্ডে পাঁচ শতাধিক কর্মহীন পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। প্রতিদিন ৫০০ পরিবারের মধ্যে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এতে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক কেজি পেঁয়াজ, আধা লিটার সয়াবিন তেল ও একটি সাবান দেয়া হচ্ছে। জীবনের তাগিদে বাধ্য হয়েই ত্রাণের আশায় সড়কে বের হয়েছেন অনেক প্রবীণ। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। ত্রাণ দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক অরাজনৈতিক সংগঠনও। সরকারের উদ্যোগে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রতিঘাত মোকাবিলায় সরকারের বিশেষ প্রণোদনাব্যবস্থা ও দরিদ্র মানুষের সাহায্যের ব্যাপারে সরকার মনোযোগী। সংকট সমাধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি মসুর ডাল ও একটি সাবান দেওয়া হচ্ছে। তবে ত্রাণ নিয়ে অভিযোগও রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, আমাদের তালিকা নেওয়া হলেও আমরা কোনো ত্রাণ পায়নি। কমিশনারের লোকজন এসে আমাদের নামের তালিকা ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে গেছেন। জানি না আমরা কবে পাবো ত্রাণ। এ ছাড়া কেউ আমাদের কোনো সহযোগিতা করছেন না কীভাবে বাঁচব জানি না বলেও তিনি উলেস্নখ করেন। এই অভিযোগ যদি সত্য হয়ে থাকে তবে দ্রম্নত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এটা সত্য, ঢাকায় দিনমজুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দৈনিক রোজগার করতে না পেরে থমকে গেছে তাদের জীবনযাত্রা। কর্মহীন এসব মানুষ পেটের টানে সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও ত্রাণের খোঁজে ছুটছেন রাজধানীর পথে পথে। ত্রাণের চেয়ে মানুষের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। কেউ যদি ত্রাণ দিতে আসেন জমায়েতের কারণে ত্রাণ দিতেও পারছেন না। সারাদিন অপেক্ষা করেও দিন শেষে ত্রাণ না পেয়ে শূন্য হাতে অনেকে ফিরছেন বাড়ি। দিন যত গড়াচ্ছে, দুর্ভোগ আরও বেশি হচ্ছে অসহায় মানুষের। ফুটপাতে এখন সাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি সড়কেই একটু সাহায্যের আশায় বসে বসে ক্ষণ গুনছেন অসহায় এসব মানুষ। তাদের চাহিদা বেশি নয় কোনোমতে দু'মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারলেই হয়। সমাজের অসহায় মানুষের পাশে বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের। দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের তালিকা প্রণয়নে দলীয়করণের অভিযোগ তোলা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। বিত্তদের পকেটে টাকা নাই, গরিবের পেটে ভাত নাই। চারদিকে কেবল নাই, নাই, নাই। এসব মানুষের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করতে সরকার সারা দেশে যেসব চাল বরাদ্দ করেছে ইতিমধ্যে এসব চাল বিতরণের জন্য তৈরি করা তালিকা নিয়ে দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির পক্ষ থেকে। আমরা মনে করি ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ গরিবের ত্রাণ মেরে খাওয়া বড় অপরাধ।