পাঠক মত

সবাই এক হয়ে এই মহামারি প্রতিরোধ করি

প্রকাশ | ১১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
৬৪টি জেলা আর ৬৮ হাজার গ্রাম নিয়ে আমাদের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। যেখানে ৭৭ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে ৬০% শতাংশ মানুষ দেশের এই সিংহভাগ মানুষই গ্রামে বাস আর এর বেশির ভাগ মানুষই দিন আনে দিন খায়। করোনা (কোভিড-১৯) বর্তমান পৃথিবীর এক অদৃশ্য ঘাতকের নাম। যার দ্বারা আক্রান্ত পৃথিবীর প্রায় ২১৩টি রাষ্ট্র ও অঞ্চল, এ থেকে রেহাই পায়নি আমাদের দেশও। এই করোনা মোকাবিলায় সরকার নানা রকম কার্যক্রম হাতে নেয় তারই ধারাবাহিকতায় সাধারণ ছুটিসহ সব ধরনের গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয় দোকানপাট থেকে শুরু করে সব কিছুই বন্ধ ঘোষণা করে সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ প্রদান করে এবং আইনের বাস্তবায়ন করার জন্য সেনা মোতায়েন করা হয় যা সত্যিকার অর্থেই একটি মহৎ ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত কিন্তু প্রশ্ন হলো- সরকার এত সবকিছু করার পরেও কেন আইন মানছেন না কিছু মানুষ?? আইন না মানা সবাই যে দিন আনে দিন খায় এমনটা নয়- তবে আমাদের দেশের গ্রাম ও শহরাঞ্চলেও গৃহহীনভাবে বাস করে অনেক মানুষ যারা কোনো রকমে প্রতিদিনের খাবার জোগাড় করে জীবনধারণ করে থাকে। তারা যদি হোম কোয়ারেন্টিনে থাকে তাহলে তারা তার পরিবার নিয়ে কি খেয়ে বাঁচবে? প্রশ্ন থেকেই যায়। আর যার জন্যই প্রথম কিছুদিন মানার চেষ্টা করলেও এর পরেই তারা আস্তে আস্তে বের হতে থাকে। আর তাই তাদের এই আইন না মানা দেখে আমার এই প্রবাদ বাক্যটিই মনে পড়ে 'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়' যেখানে তারা ঘর থেকে বের না হলে কি খেয়ে বাঁচবে? তাদের কাছে এসব আইন বিলাসিতা মাত্র। আসলে হবে কি তাদের মরতেই হবে হয় আইন ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে করোনার কবলে আর না হয় এই ক্ষুধার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে। তবে তাদের দ্বারা যে সমাজে আরও প্রকোপভাবে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে এ বিষয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথাই যেন নেই। থাকবেই বা কি করে, কারণ পেটে রাজ্যের ক্ষুধা নিয়ে তাদের দ্বারা হোম কোয়ারেন্টিন সম্ভব নয়। বিদেশফেরতও অনেক মানুষ আছে যাদের সংস্পর্শ সবার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ তারাও কিন্তু এই ৬৮ হাজার গ্রামের কোনো একটিতে ফিরে এসেছে। গ্রামে যে সবাই কাজ না করে না খেয়ে মরছে বিষয়টি এমনও নয় এখানে রয়েছে নানা রকম গুজব ও অপপ্রচার। আছে আইন না মানার আরও শত বাহানা। যদিও সেনাসদস্যসহ স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে বদ্ধপরিকর কিন্তু দেখা যায় জেলা উপজেলাপর্যায়ে তার নিয়মিত মনিটরিং থাকলেও ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ডপর্যায়ে দিনে ১-২ বার তা পরিদর্শন করে দায়িত্বপ্রাপ্তরা এতে ওই সাময়িক সময়ের জন্য দোকানপাট সবকিছু বন্ধ থাকলেও পরে আবার 'যাহাই লাউ, তাহাই কদু' রকমের একটা অবস্থা দেখা দেয় এসব গ্রামাঞ্চলে! যার জন্য এসব মানুষের সচেতন ও এই মহামারি সম্পর্কে সঠিকভাবে বোঝানোও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সবকিছু মিলিয়ে করোনার যে প্রকোপ তাতে যদি গ্রামে তা একবার ছড়িয়ে পড়ে তা কোনোভাবেই আমরা রক্ষা করতে পারব না- তাই শুধু সরকার না এর পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, এনজিও থেকে শুরু করে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গ্রামের জনসচেতনতা তৈরি ও খাদ্যের পরিপূর্ণতা আনয়নের মধ্যেই এসব অনাহারি মানুষের আইন মানতে বাধ্য করা সম্ভব। তাই সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, এনজিও থেকে শুরু করে সমাজের বিত্তশালী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আসুন আমরা সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হই এবং সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা সবাই এক হয়ে এই মহামারি প্রতিরোধ করি। আবু তালহা আকাশ শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ