দেশে রোগী বাড়ছে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা দ্রম্নত বাড়ছে। মৃতু্যর হারও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। যা দেশের মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা রাজধানী ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। ঢাকার পর নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ- এসব জেলা করোনার সংক্রমণ বিস্তারের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। \হতবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর যে ধরনের চিকিৎসা সুবিধার প্রয়োজন তার প্রচন্ড অভাব রয়েছে। এসব জেলায় যথেষ্ট পরিমাণে নিবিড় সেবা ইউনিট বা আইসিইউ, ভেন্টিলেশন এবং আইসোলেশন শয্যা নেই। গুরুতর রোগী হলেই তাদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে আর কোনো শহরে ভেন্টিলেশন সুবিধা সংবলিত পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ নেই। ফলে কোনো জেলা শহরের রোগীর ভেন্টিলেশন দরকার হলে তাকে ঢাকা পাঠানো ছাড়া গতি নেই। দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজারের ওপরে। কিন্তু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য সারাদেশে নির্ধারিত আটটি হাসপাতালে মোট আইসিইউ শয্যা রয়েছে মাত্র ১৯২টি, যার মধ্যে ৮৯টি ঢাকায়। চিকিৎসা সীমাবদ্ধতার কারণে বেশিরভাগ রোগীকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছে। তবে জটিল রোগীদের হাসপাতালে আনা হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের করোনাভাইরাসের সঙ্গে হৃদরোগ, উচ্চ ডায়াবেটিক, কিডনি সমস্যা বা অন্য কোনো জটিলতা রয়েছে, তাদের সবাইকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোয় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ কথা স্মরণে রাখতে হবে, যদি আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়, তাদের মধ্যে যদি জটিলতা বেশি থাকে, তখন হয়তো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। আরো একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের লক্ষণ থাকার পরেও অনেক রোগী সেটা লুকিয়ে রেখে চিকিৎসা নিচ্ছেন, যার ফলে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। দেশে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছে। এই তথ্য খুবই উদ্বেগজনক। দেশের জেলা বা উপজেলা শহরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অপ্রতুলতার অভিযোগ নতুন নয়। এবারে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম না পাওয়া। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার প্রথম পর্যায়ে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির ঘোষণা দেয়। পরবর্তী সময়ে তা দুই দফা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। এবার পহেলা মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হচ্ছে। এর মূল কারণ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু শত চেষ্টা করেও সামাজিক দূরত নিশ্চিত করা যায়নি। ঘরের বাইরে বের হলে বোঝার উপায় নেই যে, করোনা পরিস্থিতিজনিত ঝুঁকিতে আছে এ দেশ। এই পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন রীতিমতো বাজারে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। কেউ আসছে বাজার করতে, আবার কেউ কেউ অকারণেই ভিড় করছে। গাদাগাদি করে গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছে। অন্যদেরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। কিশোর তরুণরা আড্ডা দিচ্ছে। এ ছাড়া ত্রাণ নিতে, টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে, ১০ টাকা কেজির চাল নিতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। ফলে করোনার বিস্তার দেশব্যাপী বেড়েই যাচ্ছে। এই বিস্তার রোধ করতে না পারলে ইউরোপ ও আমেরিকার মতো বড় বিপদ হিসেবে আমাদের দেশেও দেখা দেবে। সুতরাং সময় থাকলে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া সমীচীন।