পরিবহণ শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

সরকারি সহায়তা প্রয়োজন

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশ লকডাউন। সড়কে ঘুরছে না গাড়ির চাকা। থেমে আছে পরিবহণ খাতের মানুষের জীবন-জীবিকা। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছে এ খাতের কর্মীরা। এর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে চলমান সাধারণ ছুটি আরও ১০ দিন বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন নির্দেশনা পালন সাপেক্ষে আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। করোনার কারণে সরকার প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে। পরে তিন দফায় বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। দীর্ঘ ছুটির কারণে দেশের স্বল্পআয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তারা কীভাবে বেঁচে থাকবে এই চিন্তায় দিশেহারা। সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করা হলেও এর সুফল পাচ্ছে না অনেকেই। ২৬ মার্চ থেকে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় পরিবহণ শ্রমিকরা পড়েছে ভীষণ বেকায়দায়। উপার্জন না থাকায় বাস ও গাড়ি চালকদের কেউ কেউ রিকশা চালাচ্ছে আবার কেউ ফেরি করে সবজি ও ফলমূল বিক্রি করছে। ভালো নেই রাইড শেয়ারিং চালকরাও। তাদের কেউ কেউ ডাব বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা বলছে, লকডাউন আরো দীর্ঘায়িত হলে না খেয়ে মরতে হবে তাদের। চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের। বাস মালিকরা বলছেন, শ্রমিকরা যেমন বেকার হয়ে পড়েছে, ঠিক তেমনি মালিকরাও বিপাকে। শ্রমিকদের কষ্ট দেখে সহানুভূতি জাগলেও ইচ্ছে হয় কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করার, কিন্তু তাদেরও সামর্থ্য নেই। পরিবহণ মালিকরা অসচ্ছল এ কথা কেউ মেনে নেবে না। আমরা মনে করি, তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। তারা ইচ্ছে করলে পরিবহণ শ্রমিকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন, নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী। আমরা লক্ষ্য করেছি, ব্যক্তি মালিকাধীন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারা তাদের কর্মচারীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ এই ক্রান্তিকালে মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য এই কথাটি সবার মনে রাখতে হবে। ১০ টাকা কেজি দরে ওএমএসের চাল পাচ্ছেন সারাদেশে এমন সুবিধাভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ। নতুন করে আরও ৫০ লাখ পরিবারকে এ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে সেই তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে মাঠ পর্যায়ে। নতুন করে যুক্ত করা পরিবারগুলোকে চাল সহায়তা দিতে ৮৭৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে সম্প্রতি এই অর্থ ছাড় করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা দিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নতুন রেশন কার্ড পাওয়া পরিবারে সরবরাহের জন্য সরকার জরুরি ভিত্তিতে দুই লাখ টন চাল সংগ্রহ করবে। করোনাভাইরাস মহামারিতে বেকার হয়ে পড়া নিম্নবিত্ত, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা দিতেই নতুন করে ৫০ লাখ পরিবারের জন্য রেশন কার্ড চালু করে তাদের ১০ টাকা কেজিতে ওএমএসের চাল দেবে সরকার। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দুর্যোগময় সময়ে মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণের আওতার বাইরে কেউ নেই বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। আমরা মনে করি, এই ত্রাণের আওতায় পরিবহণ শ্রমিকদের পরিবারকেও অন্তর্ভুক্ত করা হোক। সরকারের বিশেষ সহযোগিতা ছাড়া দেশের হতদরিদ্র মানষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সরকারের কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগই কেবল পারে দেশের গরিব মানুষকে রক্ষা করতে।