সঙ্গ-নিরোধ ও প্রকৃত বাস্তবতা

হাটবাজার ব্যাপকভাবে প্রশস্ত করে না তুললে বা অন্তত পক্ষে কাঁচাবাজারগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারলে সঙ্গ-নিরোধ বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান কাগজে-কলমেই লেখা থাকবে। কিন্তু সঙ্গ-নিরোধ ব্যবস্থা কার্যকরভাবে গড়ে তোলা না গেলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিন্দুমাত্র কালবিলম্ব না করে সঙ্গ-নিরোধ বা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

রণেশ মৈত্র
বাংলাদেশ ইদানীং বলতে শুরু করেছে করোনার সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। খবরটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ভারতের একাধিক বিশেষজ্ঞ বলছেন, সামাজিক সংক্রমণ প্রতিরোধ করা কার্যত সম্ভব নয়। এটি আরও উদ্বেগজনক একটি বার্তা। উদ্বেগজনক যে, তা ভারত ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ ও মৃতু্য সরকার ঘোষিত তথ্যাবলিই প্রমাণ করে। তা হলে কী করা? আর কেনই বা এহেন ভয়ংকর পরিস্থিতির উদ্ভব হলো কিভাবেই বা সমস্যাটির হাত থেকে উত্তরণ ঘটানো সম্ভব। এ বিষয়গুলো মানুষ ও দেশ বাঁচানোর স্বার্থেই অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে গভীরভাবে ভাবতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে ভাবতেই হবে কারণ হাতে আর একদম সময় নেই। বিশেষ করে এ জন্য যে ঈড়সসঁহরঃু (সামাজিক) সংক্রমণ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং দ্রম্নত প্রতিরোধ করতে না পারলে দেশ ও জাতির ভয়াবহ ক্ষতি প্রায় সুনিশ্চিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা সবচাইতে বেশি জোর দিয়েছেন সঙ্গ-নিরোধের, যাকে বলা হয় ঝড়পরধষ ফরংঃধহপরহম বা শারীরিক দূরত্ব। এই দূরত্ব বজায় না রাখার জন্য একটি শস্তা অভিযোগ আমরা করছি তরুণদের বিরুদ্ধে। কাঠ গড়ায় দাঁড় করাচ্ছি তরুণদের। কিন্তু আমরা কি ভেবে দেখছি ওই তরুণরা, যারা অতি অল্পসংখ্যায়ই নিয়ম বিধি না মেনে বাইরে ঘোরাফেরা করছে তাদের দ্বারা কতটা সংক্রমিত হচ্ছে? এ যাবতকালের সংক্রমণের ইতিহাস (আমাদের বাংলাদেশকে নিয়ে যদি ভাবি) বলে যে, ব্যাপক সমাবেশ, বিদেশ থেকে আসা মানুষ, করোনাক্রান্ত রোগী, তার চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী বা তাদের পরিবারের আক্রান্ত লোকজন এই সামাজিক সংক্রমণের ভয়াবহ পর্যায়ে দেশটাকে ঠেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যে করোনা রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে একজন তরুণ চিকিৎসক প্রাণ হারালেন যার ফলে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে জনগণও নতুন করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এ কারণে তরুণদের নিয়ন্ত্রণ করা, ঘরে রাখার পরিবেশ তৈরি করা নতুন গুরুত্ব অর্জন করেছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রধানত দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করতে পারি। প্রথমত, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দিবারাত্র বিশ্বজোড়া করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রচার করে চলেছেন এবং তাতে তারা সফলতা অর্জন করলেও ২৪ ঘণ্টা প্রতিদিন একই খবর সর্বদা সব চ্যানেলে প্রচারিত হওয়ায় প্রচন্ড একঘেয়েমির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দর্শকদের মনে টেলিভিশনের খবরগুলো দেখার প্রতি আগ্রহ কমে আসছে। কিন্তু তরুণ-তরুণীদের কাছে কী আমরা তেমন প্রত্যাশা করতে পারি? এ ব্যাপারে মনোতাত্ত্বিকরা ভালো বলতে পারবেন। তবে সাধারণ জ্ঞানে আমার মনে হয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেশ-বিদেশের খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে খবরের বিশ্লেষণ, বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি, বাংলাদেশ গৌরব অর্জন করেছে- অতীতের এমন খেলাগুলো, নাটক, নৃত্য, কৌতুক প্রভৃতি দেখাতে পারেন এবং আমি নিশ্চিত, অনাগ্রহী তরুণদের একটি বড় অংশ এতে ঘরমুখী হতে আগ্রহী হবেন। দ্বিতীয়ত, ভালো ভালো উপন্যাস, ইতিহাস, জীবনী ও ভ্রমণ কাহিনী সংবলিত বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করা। এটা কিছুটা কষ্টসাধ্য হলেও এ পথে আকৃষ্ট করার এখনই সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত ময়। তরুণ-তরুণীরা একবার যদি পঠন-পাঠনে আকৃষ্ট হন দেশেরও বহুবিধ মঙ্গল। তবে একটি অংশ, সংখ্যায় তারা অত্যন্ত ক্ষুদ্র, আজ মাদকাশক্ত হয়ে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, তাদের ফেরানো, ঘরমুখী করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়েছে। এরা দুঃসাহসীও, কারণ এদের সঙ্গে সমাজের নানা প্রভাবশালী মহলের সম্পর্ক রয়েছে এবং এই প্রভাবশালীরা প্রধানত সরকারি দলের। আমলাদের একাংশও এদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই তরুণদের ঘরমুখী করা অত্যন্ত কঠিন, তাদের পেছনে শক্তিশালী নানা মহলের প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য মদদ থাকার কারণে। তবু সর্বাত্মক চেষ্টা, নরম-গরম আচরণের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তাদেরও ঘরমুখী করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতেই হবে। এক মুহূর্তও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে আমরা এবং সমগ্র বিশ্ববাসী আজ এক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি করোনাভাইরাস নামক এক ভয়াবহ শত্রম্নর বিরুদ্ধে। চলমান সামাজিক দূরত্ব বা দৈহিক দূরত্বের ব্যাপারে আমাদের তরুণ-তরুণীদের বিরুদ্ধে সমাজের প্রায় সব অংশের অন্তহীন অভিযোগের কারণে বিষয়টি নিয়ে এত দীর্ঘ আলোচনা করতে হলো। এবারে বিষয়টির অপরাপর দিক আলোচনা করা যাক। সর্বাধিক সংকট এখনো তৈরি করে রেখেছেন গার্মেন্টস মালিকরা। তারা লাখ লাখ গরিব শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দেননি নিজেদের প্রতিশ্রম্নতি ভেঙে এবং সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে। এই মালিকদের তাবৎ অন্যায় এবং আইন ভঙ্গ করার দীর্ঘকালের অভ্যাস নিরোধের ক্ষেত্রে সরকারের বড্ড বেশি নিস্পৃহতা। ফলে ওই মালিকরা বেপরোয়া। অভুক্ত লাখ লাখ শ্রমিক তাই বাধ্য হচ্ছেন দিনের পর দিন বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে। এতে করে সঙ্গ-নিরোধ প্রকল্প ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে। আর তার অমোঘ পরিণতি স্বরূপ ওই শ্রমিকদের দেহে করোনা আক্রমণের আশঙ্কা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেদিকে নজর না আছে শ্রমিকদের না আছে সরকারের। নিদেন পক্ষে মালিকরা বা সরকার যদি ওই বিক্ষুব্ধ ও বুভুক্ষু গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিতেন তাতেও এই সংকটজনক পরিস্থিতি হয়তো কিছুটা এড়ানো যেত। সরকার গার্মেন্টস শিল্প যাতে করোনাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, ওই শিল্পের রপ্তানি বাজার যাতে ব্যাহত না হয় সেই লক্ষ্যে মাত্র শতকরা দুইভাগ সুদে ৫,০০০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করায় শ্রমিক ও জনগণের মনে স্বভাবতই একটি আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছিল। এই প্রণোদনার মূল লক্ষ্য ছিল, শ্রমিকদের বেতন যেন নিয়মিত দেওয়া হয়। কিন্তু এই প্রণোদনাই কাল হয়ে দাঁড়ালো। মালিকরা ওই টাকা বিনাসুদে ছাড় দেওয়ার দাবি তুলেছে। প্রচ্ছন্ন কথা হলো বিনাসুদে ওই প্রণোদনার টাকা ছাড় পেলেই কেবল শ্রমিকদের এই অহেতুক জিদের কাছে আত্মসমর্পণ করায় বিষয়টি সংকটে পরিণত হচ্ছে। বিক্ষোভে বিক্ষোভে, না চাইলেও, শ্রমিকরা করোনাভাইরাসের আক্রমণের বাড়তি ঝুঁকিতে পড়বেন। ফলে সারাদেশে তার বিপজ্জনক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে। এ পর্যন্ত ১৫১ জন মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতু্যবরণ করেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯১৩ জন। জেলা থেকে জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে রোগ অতি দ্রম্নত। প্রতিরোধ প্রচেষ্টা দৃশ্যতই মুখ থুবড়ে পড়ছে। টেস্টিং কিটস আজও প্রতি জেলায় বসানো হয়নি। উপযুক্ত বা প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসহ আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থাও নেই অন্তত ৮০ ভাগ সরকারি হাসপাতালে। নিম্নমানের পিপিই, মাস্ক প্রভৃতি দুর্নীতিবাজ কন্ট্রাক্টরদের মাধ্যমে কিনে বা গোপনে তৈরি করে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের সরবরাহ করার অভিযোগও ব্যাপক। ফলে বহু ডাক্তার সেগুলো প্রত্যাখ্যান করছেন আবার যারা ব্যবহার করছেন তাদের অনেকে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন কোনো কোনো ডাক্তার করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃতু্যবরণ করছেন। আর অবশিষ্টরা অধিক পরিমাণে আতঙ্কিত হচ্ছেন। রংপুর মেডিকেল কলেজের ইন্টার্নি চিকিৎসকরা মানসম্মত স্বাস্থ্য নিরাপত্তামূলক পণ্যাদির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিগত ১৬ এপ্রিল থেকে কর্ম বিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে, বহু ক্ষেত্রেই দৈহিক (বা সামাজিক) দূরত্বের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশে হাসপাতালের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কম থাকায় এবং শয্যাসংখ্যা প্রতিটি হাসপাতালেই রোগীর সংখ্যার অনুপাতে অত্যন্ত কম থাকায় হাসপাতালগুলোর ভেতরে ও বাইরে প্রচন্ড ভিড় থাকার কারণে সঙ্গ-নিরোধ বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত দুরূহ। তদুপরি প্রতিটি রোগীর খবর জানার জন্য স্বজনরাও বিপুল সংখ্যায় ভিড় করে থাকেন। এ ক্ষেত্রেও সঙ্গ-নিরোধের আহ্বান অকার্যকর হয়ে পড়েছে। দেশজোড়া অসংখ্য কাঁচাবাজারে মানুষ যেভাবে গিজগিজ করে গ্রাহক-বিক্রেতা নির্বিশষে সেগুলোতেও মানুষে মানুষে পরস্পর দূরত্ব সামান্যতমও বজায় রাখা সম্ভব না। গ্রামীণ হাটবাজারগুলোতে অবস্থা আরও মারাত্মক। অথচ চিকিৎসা শাস্ত্রের নির্দেশনাটা যথাযথভবে না মানলে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে তা ভাবলেও শিউরে উঠতে হয়। অপরপক্ষে বিগত ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশটাকে 'করোনা ঝুঁকিপূর্ণ দেশ' হিসেবে ঘোষণা করে মানুষকে বিশেষ প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে না যেতে এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত আদৌ ঘরের বাইরে না যেতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকরা বেতন না পেলে কেন রাস্তায় নামবেন না? হাটবাজার ব্যাপকভাবে প্রশস্ত করে না তুললে বা অন্তত পক্ষে কাঁচাবাজারগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারলে সঙ্গ-নিরোধ বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান কাগজে কলমেই লেখা থাকবে। কিন্তু সঙ্গ-নিরোধ ব্যবস্থা কার্যকরভাবে গড়ে তোলা না গেলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিন্দুমাত্র কালবিলম্ব না করে সঙ্গ-নিরোধ বা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করার বিকল্প নেই: এক, সব সেক্টরের শ্রমিকের বেতন-ভাতাদি পরবর্তী মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে পরিশোধ করতে হবে- যাতে শ্রমিকদের আর রাস্তায় নামতে না হয়। কারখানা বন্ধ কী খোলা সে কারণে বেতন-ভাতা প্রদান বন্ধ রাখা যাবে না; দুই, সব শহরের কাঁচাবাজারগুলো দ্রম্নততার সঙ্গে বিকেন্দ্রিকরণ করতে হবে; পরিচ্ছন্ন ঢাকনা দিয়ে ভ্যানে করে শাকসবজি ও মাছ প্রভৃতি পাড়ায় পাড়ায় বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে; তিন, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং সে জন্য হিমাগারের (ঈড়ষফ-ঝঃড়ৎধমব) সংখ্যা কমপক্ষে দ্বিগুণ করতে হবে; চার, ২০২০ সালের জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা অব্যাহত রেখে কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন; পাঁচ, সব মন্দির, মসজিদ, গির্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় উপসানালয় বর্তমান বছরের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নিজ নিজ বাড়িতে উপাসনার ব্যবস্থা করতে হবে; ছয়, গৃহহীন সবার বাড়ি নিশ্চিত করার প্রকল্প দ্রম্নত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সাত, সবার বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। রণেশ মৈত্র : সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত