তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিক নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংরক্ষণ করুন

প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের মহামারিতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই সীমিত পরিসরে কারখানা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্পের দুই খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। রোববার থেকে বিজিএমইএর সদস্য ঢাকা ও আশপাশের অন্তত ২০০ কারখানা চালু হয়েছে। কেবল নিটিং, ডায়িং ও স্যাম্পল সেকশন চালু করেছে বিকেএমইএ। দুই সংগঠনের কারখানা চালু করতে অন্তত ৩০ শতাংশ শ্রমিকের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে। লকডাউন পরিস্থিতিতে যেসব শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কারখানার আশপাশে অবস্থান করছেন তাদের দিয়েই কারখানা চালুর কাজটি শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে দূরে থাকা শ্রমিকদের যেন না ডেকে আনা হয় সেই নির্দেশনাও রয়েছে কারখানা চালুর নির্দেশনায়। তবে দূরের শ্রমিকরাও কাজে যোগ দিয়েছে, এমন সচিত্র প্রতিবেদন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কেউ হেঁটে, আবার কেউ অতিরিক্ত ভাড়ায় রিকশা ও ভ্যানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে। \হউলেস্নখ্য, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে পোশাক কারখানাগুলো। তার এক মাসের মাথায় জরুরি রপ্তানি আদেশ পালন করতে কীভাবে স্বল্পপরিসরে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কারখানা চালু করা যায় সেই আলোচনা শুরু হয়। মালিকপক্ষের পাশাপাশি খাতসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবসায়ী মহল ও সরকারের পক্ষ থেকেও এই প্রস্তাবে সায় দেওয়া হয়। সামাজিক দূরত্ব রক্ষার এ সময়ে সতর্কতার সঙ্গে কীভাবে কারখানা চালু করা যায় তার একটি প্রটোকল তৈরি করে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ ছাড়া শ্রমিক ছাঁটাই না করতে কারখানার মালিকদের অনুরোধ করে সংগঠনটি। গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক বলেছেন, যেখানে মানুষের জীবনের নিশ্চিয়তা নেই সেখানে কলকারখানাগুলো চালু থাকে কীভাবে? এই প্রশ্নটির মধ্যে যুক্তি রয়েছে। কারণ কলকারখানাগুলো চালু থাকলে করোনার সংক্রমণ রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বিশ্বব্যা?পী মহামারির ম?ধ্যেও অ?নেক পোশাক কারখানার ক্রয়া?দেশ বহাল র?য়ে?ছে। এসব অর্ডার যেন বা?তিল না হয় তাই কারখানা খুলে দেয়ার জন্য চাপ দি?চ্ছেন পোশাক কারখানার মা?লিকরা। বিষয়?টি বি?বেচনায় সরকা?রের অনুম?তি?তে প্রথ?মে সী?মিত আকারে চালু থাকবে পোশাক কারখানা। প?রে ধা?পে ধা?পে সব কারখানা খুলে দেয়া হবে। বিষয়টির সঙ্গে দেশের অর্থনীতি ও শ্রমিকদের জীবিকা জড়িত। কিন্তু তাদের জীবনের নিরাপত্তার কথাও ভাবতে হবে। অন্যদিকে রাজধানীর মালিবাগের দুটি পোশাক কারখানার চার শতাধিক শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও মালিক প্রত্যেক শ্রমিককে দিতে চান মাত্র দুই হাজার করে টাকা। এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অমানবিক। সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় ৭০৯ জন শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ও পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন নারায়ণগঞ্জে ৮টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় একটি কারখানার শতাধিক শ্রমিক ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ মিছিল করে। মনে রাখতে হবে, তৈরি পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে, পাশাপাশি মালিকরাও তাদের শ্রমে-ঘামে বিত্ত-বৈভবে রাতারাতি ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। যাদের শ্রমে-ঘামে এই শিল্প দাঁড়িয়ে আছে, বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে, তাদের দুর্দিনে মালিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে তাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টিও। তাদের বেতন পরিশোধ করাসহ শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে কারখানা লে-অফ ঘোষণাও।