শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনার নির্দেশনা করোনা প্রতিরোধের বার্তা

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চললে করোনা-দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। 'কেউ বাইরে বেরোবেন না। ঘরে থাকুন। অন্যজনের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকুন'- এই আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হচ্ছে।
ড. মিল্টন বিশ্বাস
  ০৪ মে ২০২০, ০০:০০

বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রনায়ক যেখানে তাদের সরকারি লোকের ওপর নির্ভর করে করোনাভাইরাসের মহামারি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সার্বক্ষণিক ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায়। আমেরিকায় করোনাভাইরাস বেশি ছড়ানো এবং মৃতু্য ৫০ হাজারের অধিক হওয়ার কারণ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তথা নেতৃত্বের ব্যর্থতাকে দুষছেন বিশিষ্টজনরা। সেখানে ২১ জানুয়ারি প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ছয় সপ্তাহ পরে কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন ও সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থা শুরু করে সরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মিডিয়ার বদৌলতে নিউইয়র্ক সিটির গভর্নরের প্রেস কনফারেন্স দেখেছি কিংবা ইউরোপের অন্য কোনো নেতার বক্তব্য শুনছি কিন্তু ৮ মার্চে বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর শেখ হাসিনা নিজেই এ দেশের করোনা আক্রান্তের খবর, দ্রম্নত বদলে যাওয়া সারা দেশের মানুষের আচরণ সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। করোনা নিয়ে অপপ্রচার ও গুজবের বিরুদ্ধেও তাকে কথা বলতে হয়েছে। তখন থেকে তার দায়িত্ব পালনের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে গণভবন এবং ভিডিও কল থেকে শুরু করে মোবাইল, টেলিফোন, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে করোনা প্রতিরোধে দিক-নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। জরুরি প্রয়োজনে মন্ত্রী, সচিব কিংবা দলীয় নেতাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নিজের বাসভবনে মিটিং করছেন। উদ্ভূত নতুন নতুন অবস্থাভেদে তৃণমূল নেতাদেরও ভিডিও কলে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। শেখ হাসিনার যথাযথ নির্দেশনার কারণেই এ দেশে দ্রম্নত সময়ে আক্রান্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে, চিকিৎসার সুযোগও ক্রমাগত বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে যেখানে ২৮ লাখ আক্রান্ত, মৃতু্য ২ লাখ মানুষ সেখানে কেবল তার নেতৃত্বের গুণেই এ দেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে না। ৫৫ জেলায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের সাধারণ ছুটি আগামী ৬ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সবকিছুকেই পর্যবেক্ষণের আওতায় এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সরকারি প্রশাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা এবং চিকিৎসকরা মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।  

২.

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের সূচনা দিন অর্থাৎ ১৭ মার্চ থেকে সর্বস্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষিত হওয়ার পর, ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরু হয়। অর্থাৎ রোগী শনাক্তের ২ সপ্তাহ পরই হার্ডলাইনে চলে যায় সরকার। গত ১ মাসে দেশের আট বিভাগের জেলা প্রশাসক, চিকিৎসক, পুলিশ, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ব্রিফিং ও নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সংকট মোকাবিলার জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মতামতও নিয়েছেন। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য করণীয় ঠিক করে দিয়েছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে জাতিকে ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনার মধ্যে কয়েকটি হলো- '১. করোনাভাইরাস সম্পর্কে চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ভাইরাস সম্পর্কিত সচেতনতা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। ২. লুকোচুরির দরকার নেই, করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। ৩. পিপিই সাধারণভাবে সবার পরার দরকার নেই। চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবার জন্য পিপিই নিশ্চিত করতে হবে। এই রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত পিপিই, মাস্কসহ সব চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত রাখা এবং বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ৪. কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত সব চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে।' ৩১টি নির্দেশনার মধ্যে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের তিনি সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেন। আর ওই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মাঠপ্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, এমপি, মন্ত্রী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে।

করোনা মোকাবিলায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার গত দেড় মাসের কার্যসূচি ছিল নিম্নরূপ (সূত্র দৈনিক পত্রিকা)- ২০২০ সালের জানুয়ারিতে চীন থেকে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পর শেখ হাসিনা গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে করোনাভাইরাস বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লে ২ মার্চ সন্ধ্যায় গণভবনে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন করোনাভাইরাস নিয়ে ৩১টি নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। ৮ মার্চ  প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা ও সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের সূচনা হয়। ১৫ মার্চ  সন্ধ্যায় করোনাভাইরাস নিয়ে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন শেখ হাসিনা। ২৫ মার্চ দেশের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এ সময় দেশের পোশাক খাতসহ রপ্তানিশিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি। ২৫ মার্চ থেকে সেনাবাহিনী মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করে। ২৬ মার্চ থেকে সড়ক, নৌ, আকাশ পথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখে সবাইকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়। ৩১ মার্চ সকালে গণভবন থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভাগীয় কমিশনার, ৬৪ জেলা প্রশাসক, সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন। দীর্ঘ ৩ ঘণ্টার এই ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে নভেল করোনাভাইরাসের মহামারি সামলাতে মাঠপ্রশাসন কীভাবে কাজ করছে তা জানার পাশাপাশি তাদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

৩.

এপ্রিল মাসকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস বিস্তারের জন্য 'খারাপ সময়' হিসেবে উলেস্নখ করে এসময় দলীয় নেতাকর্মী এবং সরকারের সব স্তরে যেমন যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন, তেমনি দেশের কোথায় কী করতে হবে, কী ঘটছে- যাবতীয় বিষয়ে সার্বিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। ৫ এপ্রিল গণভবনে  প্রেস কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণে নতুন করে ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। নতুন চারটিসহ পাঁচটি প্যাকেজে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। প্রেস কনফারেন্সের পর তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনে 'প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে' অনুদান গ্রহণ করেন। ১৩ এপ্রিল  বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ১৫ এপ্রিল সারা দেশে 'ত্রাণ কমিটি' গঠনের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ধানমন্ডিতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে ৩টি নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী এসময় গরিব, অসহায়, দুস্থ মানুষের পাশে বিত্তবানদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ত্রাণ লুটের বিরুদ্ধেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ এপ্রিল করোনা মোকাবিলায় সুচিন্তিত নির্দেশনায় ৫ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে থেকে ১৯৯৫ এবং ২০০১-২০০৭ সাল পর্যন্ত জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সেই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা সম্পর্কে সচেতন। তিনি শ্রমজীবী মানুষ বা খেটে খাওয়া মানুষের ঘরের খবর জানেন, তিনি মধ্যবিত্তের কথাও ভাবেন। আবার দেশের শিল্প-কলকারখানা বাঁচাতে হবে তাও টের পান। এসব দিকে তিনি খেয়াল রেখেছেন। কিন্তু তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি। করোনা মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইনে থাকা চিকিৎসক, ব্যাংক কর্মকর্তা এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছেন তিনি। ডাক্তারদের পিপিই দেয়া হয়েছে, টেস্ট কিট এসেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন উপজেলা পর্যায় থেকে ১ হাজার টেস্টের নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বসুন্ধরা অস্থায়ী হাসপাতাল বানিয়ে দিয়েছে, বেক্সিমকো, স্কোয়ার, নাভানা, আকিজের মতো বড় বড় কোম্পানি সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের উদ্যোগে স্যানিটাইজার তৈরি করে জনগণের কাছে বিলিয়ে দিচ্ছে। বড় বড় কোম্পানি করোনা দুর্যোগে মাস্ক ও পিপিই তৈরি করে দেশের চাহিদা মেটাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রায় বিশের অধিক করোনা-পরীক্ষা কেন্দ্র নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ব্যক্তির করোনা টেস্ট সম্ভব। এভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনা ও বেসরকারি উদ্যোগের মহতী আয়োজনের মধ্যে জনগণের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করা। ছুটিতে গৃহে অবস্থান করে তার নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে এগিয়ে আসা।

৪.

কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই রোগে মৃতু্যহার মাত্র ৫.২৩ শতাংশ। আক্রান্ত হলেই মৃতু্য হবে এ ধরনের ভাবনা ঠিক নয়।

\হপ্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চললে করোনা-দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। 'কেউ বাইরে বেরোবেন না। ঘরে থাকুন। অন্যজনের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকুন'- এই আহ্বান জানানোর মধ্যদিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হচ্ছে।

\হবর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান ও তার দেয়া নির্দেশনা পালন করা আমাদের জীবন রক্ষার জন্য অত্যাবশ্যক। এজন্য তার প্রতিটি নির্দেশনা ও সতর্কতা পালনে মানুষকে বাধ্য করাও দরকার।      

ড. মিল্টন বিশ্বাস: কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম এবং অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ৎিরঃবৎসরষঃড়হনরংধিং@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<98240 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1