কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে

দেশের অর্থনীতি তুলনামূলক নিরাপদ

প্রকাশ | ০৫ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব প্রায় স্তব্ধ। বন্ধ সব কলকারখানা। আয়-উপার্জন নেই। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, বাড়ছে লাশের সারি। করোনাভাইরাসের প্রভাবে এমন আভাসও মিলছে, বিশ্ব অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে যেতে বসেছে। আর সেই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলক নিরাপদ অবস্থানে আছে গবেষণায় এমনটি উলেস্নখ করেছে নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট। আমরা মনে করি এই বিষয়টি ইতিবাচক। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার- অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা। খবরের মাধ্যমে জানা যায়, করোনাভাইরাসের এই সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের কোন দেশ কতটুকু অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় অবস্থান করছে, তা নিয়ে একটি গবেষণা তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সাপ্তাহিক নিউজপেপার দ্য ইকোনমিস্ট। এতে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। আর শুধু এটাই নয়- প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়েও বাংলাদেশের অর্থনীতি নিরাপদ আছে বলেও এই জরিপের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। এমনকি পাকিস্তান, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতির চেয়েও কম ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমিনভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখাও অপরিহার্য। মনে রাখা সমীচীন, বিশ্ব এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেশেও ছড়িয়েছে। ফলে এই কঠিন সময়কে মোকাবিলার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, করোনাভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতেও উদীয়মান সবল অর্থনীতি ৬৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। অর্থাৎ নবম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। ফলে দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমলে নিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতি যেন মোকাবিলা করা যায় সেই প্রস্তুতি জরুরি। ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সের বরাতে দ্য ইকোনমিস্ট এমনও বলছে, উদীয়মান এসব অর্থনীতির দেশের বন্ড ও শেয়ারবাজার থেকে করোনাভাইরাসের এই গত চার মাসে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি তুলে নিয়েছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। যা ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি। মূলত চারটি সম্ভাব্য সংস্থার নির্বাচিত অর্থনীতির দুর্বলতা পরীক্ষা করে এই জরিপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জনগণের ঋণ হিসেবে জিডিপির শতাংশ, বৈদেশিক ঋণ, ঋণের সুদ ও রিজার্ভ কভার। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা গবেষণা তালিকাটিতে শীর্ষে রয়েছে বতসোয়ানা। আর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ভেনেজুয়েলা। এ ছাড়া চীনের অবস্থান বাংলাদেশের পরে; ১০ নম্বরে। আর সৌদি আরবের অবস্থান বাংলাদেশের এক ধাপ আগে, অর্থাৎ আটে। আমলে নেওয়া সমীচীন, এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে- করোনাভাইরাস উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলছে কয়েকবার। হতে পারে তিনভাবে। এর মধ্যে ঘোষিত কঠোর লকডাউনের কারণে লোকজনের ঘরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ একটি। এ ছাড়া আকাশপথে বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষতি আরেকটি। এরপরও তুলনামূলক সবল আছে দেশগুলোর অর্থনীতি। এখন আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার করোনা মহামারির এই পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আগামী দিনের সম্ভাব্য সংকট কী রূপ হতে পারে সেটি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে করোনা রোধে উদ্যোগী হতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এই সংকটে যে কোনো ধরনের অনিয়ম বা অব্যবস্থাপনা হলে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এর আগে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্ব ব্যাপক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে আছে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই বিপর্যস্ত, অন্যদিকে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি- এমন অবস্থায় অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়টি কতটা জরুরি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমের কারণে অর্থনীতির ওপর প্রভাব কতটা তা বিবেচনায় রাখা অপরিহার্য। আমরা মনে করি, সামগ্রিক বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা যেমন মোকাবিলা করতে হবে, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়কেও এড়ানো যাবে না। সর্বাত্মক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।