দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

আবারও শ্রমিক বিক্ষোভ

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনার ভয়াল থাবায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য জেলার সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন ঢাকা। কিন্তু অঘোষিত লকডাউনের মধ্যেই সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা না মেনেই সড়কে নেমেছেন পোশাকশ্রমিকরা। তারা বেতনের দাবিতে এবং শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। ঢাকার আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ করেছেন। দুই মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। অধিকাংশ শ্রমিককেই মার্চ মাসের বেতন দেওয়া হয়নি। এছাড়া এপ্রিল মাসের বেতনও বকেয়া রয়েছে। এই অবস্থায় তাদের না জানিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ছাঁটাইয়ের গুজব ও বেতনের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পলস্নীবিদু্যৎ এলাকায় মঙ্গলবার সকালে সান চেরি বডি ফ্যাশন লিমিটেড নামের পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছে। এখানেই শেষ নয়, রাজধানী ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনালে পরিবহণ শ্রমিকরা খাদ্য সহায়তার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা ঢাকার প্রবেশমুখে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া শ্রমিকরা বলেছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে তারা কোনো আর্থিক কিংবা খাদ্য সহায়তা পাননি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের হিসাব অনুযায়ী সংগঠনের রেজিস্টার্ড ৫০ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এর বাইরে আরও ২০ লাখ শ্রমিক রয়েছে। লকডাউনের পর পরিবহণ শ্রমিকরা যখন ত্রাণের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেছন, তখন প্রশ্ন উঠেছে যে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে যে চাঁদা তোলা হয় সেটি কোথায় যায়? এই প্রশ্নও অমূলক নয়। তবে সরকার এরই মধ্যে কারখানার শ্রমিকদের বেতনের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে মালিকদের। ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন পরিশোধ না করলে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। সরকারের এই পদক্ষেপ ইতিবাচক ও শ্রমিকবান্ধব। তারপরেও কোনো কোনো মালিক কেন শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করেননি, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি সরকার যেহেতু মালিকদের প্রণোদনা দিয়েছে সুতরাং মালিকদের উচিত দ্রম্নত শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা। এর অন্যথা হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে, অতীতের ইতিহাস তাই বলে। পাশাপাশি পরিবহণ শ্রমিকদের বিষয়টিও নজরে আসা দরকার। কোনোভাবেই শ্রমিক বিক্ষোভ প্রত্যাশিত নয়। \হদেশের সচেতন মহল মনে করে, সরকার শ্রমিকদের জন্য যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সে প্রণোদনা শ্রমিকদের দ্রম্নত দেওয়া উচিত। এটা তাদের ন্যায্যপ্রাপ্য। এর মধ্যে মালিকের কোনো অধিকার নেই, এ ব্যাপারে কোনো ধরনের টালবাহানাও কাম্য নয়। সরকারে কাছে আমাদের প্রত্যাশা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা দ্রম্নত পরিশোধ ও শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা হোক। \হমনে রাখতে হবে, তৈরি পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে, পাশাপাশি মালিকরাও বিত্ত-বৈভবের অধিকারী হয়েছেন শ্রমিকদের কারণেই। যাদের শ্রমে-ঘামে এই শিল্প দাঁড়িয়ে আছে, বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে, তাদের দুর্দিনে মালিকদের শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।