শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য কৃষক স্বার্থ সংরক্ষণ করুন

নতুনধারা
  ০৮ মে ২০২০, ০০:০০

করোনাকালে সরকার কৃষির ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ করোনা মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এর প্রভাব বাংলাদেশে কিছুটা হলেও পড়বে। বাংলাদেশ যেহেতু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ সেহেতু আমরা আশাবাদী হতে পারি। তা ছাড়া এবার দেশে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশ খাদ্যসংকটে পড়বে না। তবে করোনাকালে দেশের কৃষকরা বিপদে পড়েছে তাদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে।

গ্রীষ্মকালীন সবজিতে কৃষকের অধিক লাভ হয় প্রতি বছরই। এ বছর গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এমনকি এসব বাঁধাকপি বিক্রি করে শ্রমিকের খরচও উঠছে না। শ্রমিকের খরচ এবং পরিবহণের কথা চিন্তা করে কৃষকের বাঁধাকপি এখন খেতেই পচে যাচ্ছে। খরচের ভয়ে খেত থেকে তুলছেন না বাঁধাকপি। এদিকে স্থানীয় বাজারে যার দাম ২ থেকে ৫ টাকার মধ্যে। মাঠ থেকে যা আনতেই খরচ হয়ে যায় ৩ থেকে ৪ টাকা। কৃষকরা দাবি করছেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাঁধাকপি জেলার বাইরে পাঠাতে পারছেন না। বাইরে থেকে পাইকারি ক্রেতারাও আসতে পারছেন না। তাই বাঁধাকপি না কাটার কারণে খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারে এজন্য অন্যান্য জেলার বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কৃষিপণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে কুষ্টিয়া প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে খবরে প্রকাশ। এই চিত্র অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রেও।

আমরা মনে করি, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় কৃষকের জন্য আলাদা 'কৃষি বাজার' প্রতিষ্ঠা, কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে হিমাগার ও খাদ্যগুদাম নির্মাণের ব্যাপারে সরকারকে তৎপর ও মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া ক্রমবর্ধমান নগরবাসীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি নগরে নগরকেন্দ্রিক কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়েও বিশেষ নজর দিতে হবে। আপদকালীন সময়ে কৃষিপণ্য কীভাবে সরকারি উদ্যোগে বিক্রি করা যায়, সে উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই।

সরকার প্রতি বছর কৃষি খাতে সার, সেচ ও বিদু্যতে ভর্তুকি, নগদ সহায়তা ও প্রণোদনা হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। ব্যয়িত অর্থের সিংহভাগই খরচ হয় প্রভাবশালী ও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বড় কৃষকদের পেছনে। অথচ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক সব সময় সরকারের এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। তারা থাকেন উপেক্ষিত। দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরাই পারিবারিক শ্রম ও নিজস্ব মেধা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকে। তাদের একর প্রতি ফলন বেশি। তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী এবং কৃষির মূল চালিকাশক্তি। তাই কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এবং আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে- এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সরকারি ভর্তুকি ও প্রণোদনার সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের যদি ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা না যায় তা হলে তারা পণ্য উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তাই সরকারকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে এই চিরন্তন কথাটার বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<98679 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1