চাল উৎপাদনে অগ্রগতি এই স্থান ধরে রাখতে হবে

প্রকাশ | ১৮ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনা আতঙ্কে সারা বিশ্বই বিপর্যস্ত এবং দেশের মানুষও আতঙ্কিত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। আর এমন পরিস্থিতিতে দেশের জন্য সুসংবাদ বয়ে আনছে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, এ বিভাগের পূর্বাভাস বলছে, চলতি অর্থবছর (২০১৯-২০) চাল উৎপাদন ৩ কোটি ৬০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্যদিয়ে ইন্দোনেশিয়াকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যা সন্দেহাতীতভাবেই ইতিবাচক। এ প্রসঙ্গে এটাও বলা দরকার, অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ স্থানটি ধরে রাখতে উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদে যেতে হবে। কৃষককে উপকরণ দিয়ে আরও বেশি সাপোর্ট দিতে হবে। আমরা বলতে চাই, এ স্থানটি ধরে রাখা এবং উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা অপরিহার্য। কেননা এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, ক্রমাগত বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আর এমন অবস্থায় উৎপাদন বাড়াতে হলে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, আধুনিক ও বিজ্ঞান চাষাবাদের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। তথ্য মতে, দেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে চালের উৎপাদন। দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্যশস্যটি উৎপাদনে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান ছিল চতুর্থ। চীন ও ভারতের পরই তৃতীয় স্থানটি ছিল ইন্দোনেশিয়ার দখলে। তবে এবার ইন্দোনেশিয়াকে সরিয়ে সেই অবস্থানে উঠে আসছে বাংলাদেশ, যা সন্দেহাতীতভাবেই সুখকর। এমনটিও জানা গেছে, চলতি অর্থবছর আমন মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। আবার গত আউশ মৌসুমেও চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিন মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধির সম্মিলিত ফলাফলই বাংলাদেশ শীর্ষ তিনে চলে আসার মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বলা দরকার, চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থান অধিকারের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য, সিনিয়র সচিব ও কৃষি অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি বলেছেন, 'এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সুখবর।' যদিও তিনি এটাও বলেছেন, দেশে চালের উৎপাদন প্রতিনিয়ত বাড়লেও আমাদের জনসংখ্যার চাপ এত বেশি যে, এখনো আমরা চাল আমদানিকারক দেশ। কেননা প্রতি বছর ৫০-৫৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমাদের আমদানি করতে হয়। ফলে চাল উৎপাদন আরও বেশি বাড়িয়ে এটা ধরে রাখতে হবে। সম্পূর্ণভাবে চাল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিণত হতে হবে এমন বিষয়ও উলেস্নখ করেছেন। আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন সময়েই এমন খবরও সামনে এসেছে যে, চাষাবাদ করার পর কৃষক নায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন, অনেক সময় খরচও ওঠে না- এই বিষয়গুলোকে যেমন আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, তেমনিভাবে উৎপাদন বাড়াতে চাষাবাদের পদ্ধতিগত উন্নয়ন, কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এমন বিষয় আলোচনায় আসছে, যে জমি আছে সে জমি দিয়েই আরও অধিক ফসল ফলানো সম্ভব। আর এ জন্য আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ জরুরি। একই সঙ্গে কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টিও সামনে আসছে। আমরা বলতে চাই, এটাও আমলে নেওয়া দরকার, ডিএপি সারের দাম কমানো হয়েছে এবং দাম কমানোর ফলে কৃষক ভালোভাবে বোরো ফসলে সার ব্যবহার করতে পেরেছেন বলেও জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে, কৃষক যেন চাষাবাদে অধিক আগ্রহী হয় সেটি যেমন বিবেচনায় নিতে হবে, তেমনি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সুষ্ঠু পরিকল্পনাসহ সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করাও জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ইন্দোনেশিয়াকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর এর মধ্যদিয়ে আমরা খাদ্য নিরাপত্তায় এক ধাপ এগিয়ে গেলাম, যা অত্যন্ত সুখকর বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। এখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, এ কৃতিত্ব ধরে রাখা। ফলে আগামীতে ফলন আরও বাড়াতে হবে। এজন্য প্রযুক্তি কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর বিষয়টি আমলে নিতে হবে। উৎপাদন বৃদ্ধিসহ চাল রপ্তানিক কারণ দেশ হতে হলে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।