বাংলা দ্বিতীয় পত্র

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২০, ০০:০০

শাদমান শাহিদ, প্রভাষক আওলিয়ানগর এমএ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া। য়
তিনি কলম দিয়ে লিখছেন
বাক্য ১। বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা উচিত? আলোচনা কর। উত্তর : সুবিন্যস্ত অর্থযুক্ত শব্দগুলোর দ্বারা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পেলে তাকে বাক্য বলে। বাক্যের বৈশিষ্ট্য তিনটি। যথা : ১। আকাঙ্ক্ষা ২। আসত্তি ৩। যোগ্যতা আকাঙ্ক্ষা : বাক্যের অর্থ বোঝার জন্য কোনো পদ শোনার পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা জন্মে, তাকেই আকাঙ্ক্ষা বলে। যেমন- রোজ সকালে শাহানা...' বললে আরো কিছু শোনার ইচ্ছা থাকে। কারণ বাক্যটিতে মনের ভাব সম্পূর্ণ হয়নি। যদি বলা হয়- রোজ সকালে শাহানা কোরআন পাঠ করে। তাহলে বাক্যটির আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়। \হ আসত্তি : বাক্যকে অর্থপূর্ণ করতে যে শব্দটির যেখানে থাকা উচিত সেখানে থাকাকেই আসত্তি বলে। যেমন : কলম লিখছেন তিনি দিয়ে-বললে বাক্যটিতে আসত্তি পূর্ণ হয় না। যদি বলা হয়-তিনি কলম দিয়ে লিখছেন। তাহলে বাক্যটি সার্থক হয়ে ওঠে। যোগ্যতা : বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থসঙ্গতিকেই যোগ্যতা বলে। যেমন : বরফ খুব গরম-বললে বাক্যটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। যদি বলা হয়- বরফ খুব ঠান্ডা। তাহলে শ্রোতার আর কোনো প্রশ্ন থাকে না। বাক্যটি সার্থক হয়ে ওঠে। এ ছাড়া কোনো বাক্যে গুরু-চন্ডালী দোষ, দুর্বোধ্যতা, উপমা-অলঙ্কারের ভুল প্রয়োগ, বাগধারার শব্দের পরিবর্তন, বাহুল্য দোষ ইত্যাদি থাকলে তা বর্জন করা বাঞ্ছনীয়। ২। বাক্য কাকে বলে? গঠনগত অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? আলোচনা করো। উত্তর : সুবিন্যস্ত অর্থযুক্ত শব্দগুলোর দ্বারা মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পেলে তাকে বাক্য বলে। গঠনগত অনুসারে বাক্য তিন প্রকার। যথা : ক. সরল বাক্য খ. জটিল বাক্য গ. যৌগিক বাক্য ক. সরল বাক্য : যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য ও একটি মাত্র বিধেয় থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন : সায়মা হাসে। (এখানে সায়মা উদ্দেশ্য আর হাসে হচ্ছে বিধেয়) খ. জটিল বাক্য: যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্য এবং তার ওপর নির্ভরশীল এক বা একাধিক অপ্রধান বা খন্ডবাক্য থাকে, তাকে জটিল বাক্য বলে। যেমন : যিনি পরের উপকার করেন, তাকে সবাই শ্রদ্ধা করে। এখানে 'যিনি পরের উপকার করেন' এটি খন্ড বাক্য আর 'তাকে সবাই শ্রদ্ধা করে' হচ্ছে প্রধান বাক্য। গ. যৌগিক বাক্য : যখন পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা জটিল বাক্য মিলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করে, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন : লাকী সুন্দরী কিন্তু বুদ্ধিমতী নয়। ৩। বাক্য কাকে বলে? অর্থগত দিক থেকে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? আলোচনা করো। উত্তর : সুবিন্যস্ত অর্থযুক্ত শব্দগুলোর দ্বারা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পেলে তাকে বাক্য বলে। অর্থগত দিক থেকে বাক্য সাত প্রকার। যথা : ১. বিবৃতিমূলক : এ ধরনের বাক্যে সাধারণত কোনো কিছুর বিবৃতি বা বর্ণনা নির্দেশিত হয়। যেমন : আমি বই পড়েছি, সে স্কুলে যায়নি। ২। প্রশ্নবোধক : এ শ্রেণির বাক্যে প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা করা হয়। যেমন : তোমার নাম কী? তুমি কি গান গাইতে পারো? ৩। আদেশসূচক : এ শ্রেণির বাক্যে আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, অনুরোধ ইত্যাদি বোঝায়। যেমন : স্কুলে যাও। মারামারি করো না। ৪। প্রার্থনাসূচক : এ শ্রেণির বাক্যে বক্তার কোনো কিছুর প্রার্থনা করা বোঝায়। যেমন : আলস্নাহ তোমার মঙ্গল করুক। তুমি বড় হও। ৫। অপেক্ষাসূচক : এ শ্রেণির বাক্যে একটি ঘটনার ওপর আরেকটি ঘটনার নির্ভরশীলতার সম্বন্ধ স্থাপিত হয়। যেমন : তুমি না এলে ভালো লাগে না। ৬। সন্দেহসূচক : এ শ্রেণির বাক্যে বক্তার মনের সংশয় বা সন্দেহ প্রকাশ পায়। যেমন : আজ বোধ হয় বৃষ্টি হবে। ৭। আবেগসূচক : এ শ্রেণির বাক্যে আনন্দ, শোক, আবেগ, বিস্ময় ইত্যাদি প্রকাশ পায়। যেমন : ছি! তুমি এটি করতে পারলে! হায়! আমার পোড়া কপাল! অথবা বাক্যান্তর করা : ক. সরল থেকে জটিল বাক্য করার নিয়ম : সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্য করতে হলে সরল বাক্যে কোনো অংশকে খন্ড বাক্যে রূপান্তর করতে হয় এবং উভয়ের সংযোগ বিধানে সম্বন্ধসূচক (যদি.. .তবে, যে.. . সে, যারা.. .তারা ইত্যাদি) পদ যোগ করতে হয়। খ. জটিল বাক্যকে সরল বাক্য করার নিয়ম : জটিল বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তর করার সময় জটিল বাক্যে খন্ড বাক্যটি সংকোচিত করে বাক্য থেকে সম্বন্ধসূচক (যদি.. .তবে, যে.. . সে, যারা.. .তারা ইত্যাদি) পদ উঠিয়ে দিতে হয়।