৪। ক্রিয়াপদ কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কী কী? লেখ।
উত্তর : যে পদ দ্বারা কোনো বিশেষ কালে সম্পন্ন ক্রিয়া বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে। ক্রিয়াপদ প্রধানত দুই প্রকার।
যথা: ১. সমাপিকা ক্রিয়া, ২. অসমাপিকা ক্রিয়া।
১. সমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের সমাপ্তি ঘটে, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন : আমি ভাত খাই, রফিক স্কুলে যায় ইত্যাদি।
২. অসমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের সমাপ্তি ঘটে না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন : আমি ভাত খেয়ে..., রফিক স্কুলে যেয়ে... ইত্যাদি
কর্ম থাকা, না থাকা দিক থেকে ক্রিয়া আবার তিন প্রকার।
যথা :
১. সকর্মক ক্রিয়া
২. অকর্মক ক্রিয়া
৩. দ্বিকর্মক ক্রিয়া
১. সকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কর্মপদ আছে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন : বাবা আমাকে মেরেছেন। আমি একটি শার্ট কিনেছি ইত্যাদি
২. অকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কর্মপদ নেই, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন : খোকা ঘুমায়, মেয়েটি হাসে ইত্যাদি
৩. দ্বিকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার দুটি কর্মপদ আছে, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন : বাবা আমাকে কলম দিলেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়াপদ রয়েছে।
যেমন : প্রযোজক ক্রিয়া, নামধাতুর ক্রিয়া, যৌগিক ক্রিয়া এবং মিশ্র ক্রিয়া।
৫। নির্ধারক বিশেষণ কাকে বলে? পাঁচটি নির্ধারণ বিশেষণের প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর : দ্বিরুক্ত শব্দ ব্যবহার করে যখন একের অধিক কোনো কিছুকে বোঝানো হয়, তখন তাকে নির্ধারক বিশেষণ বলে।
যেমন :
ঘরে ঘরে :
ঈদ উপলক্ষে ঘরে ঘরে আনন্দের জোয়ার।
শত শত :
যুদ্ধে শত শত লোক প্রাণ হারালো।
বাড়ি বাড়ি :
ভিক্ষুক বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে।
ঝাঁকে ঝাঁকে :
ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে।
সারি সারি :
দুর্বৃত্তরা সারি সারি চারাগাছ কেটে দিল।
৬। বাংলা সমাপিকা ক্রিয়া কালভেদে পরিবর্তন হয় কিন্তু লিঙ্গভেদে হয় না' আলোচনা করো।
উত্তর :
কাল পুং-লিঙ্গ স্ত্রী-লিঙ্গ
বর্তমান কাল আমি যাই আমি যাই
অতীত কাল আমি গেলাম আমি গেলাম
ভবিষ্যৎ কাল আমি যাবো আমি যাবো
অতএব দেখা যাচ্ছে, কালভেদে ক্রিয়ার বিভিন্ন রূপ হয়, কিন্তু লিঙ্গভেদে হয় না।
৭। বাংলা সমাপিকা ক্রিয়া কালভেদে পরিবর্তন হয় কিন্তু বচনভেদে হয় না' আলোচনা করো।
উত্তর :
কাল একবচন বহুবচন
বর্তমান কাল আমি যাই আমরা যাই
অতীত কাল আমি গেলাম আমরা গেলাম
ভবিষ্যৎ কাল আমি যাবো আমরা যাবো
অতএব দেখা যাচ্ছে, কালভেদে ক্রিয়ার বিভিন্ন রূপ হয়, কিন্তু বচনভেদে হয় না।
৮। প্রশ্ন : প্রযোজক ক্রিয়া, নামধাতুর ক্রিয়া, যৌগিক ক্রিয়া এবং মিশ্র ক্রিয়ার সংজ্ঞাসহ উদাহরণ দাও।
প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজনায় অন্যের দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।
যেমন : মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন।
নামধাতু ক্রিয়া: বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বনাত্মক অব্যয়ের পরে 'আ' প্রত্যয়যোগে যেসব ধাতু গঠিত হয়, সেগুলোকে নামধাতু বলে। নামধাতুর সঙ্গে পুরুষ বা কালসূচক ক্রিয়া-বিভক্তি যোগে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে নামধাতুর ক্রিয়া বলে।
যেমন : শিক্ষক ছাত্রকে বেতাচ্ছেন। দাঁতটি ব্যথায় কনকনাচ্ছে।
যৌগিক ক্রিয়া : একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া যদি একত্রে একটি বিশেষ বা সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে, তবে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে।
যেমন : ঘটনাটা শুনে রাখ। তিনি বলতে লাগলেন ইত্যাদি।
মিশ্র ক্রিয়া : বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বনাত্মক অব্যয়ের সাথে র্ক, হ, দে, পা, যা, কাট্, র্ধ ইত্যাদি ধাতুযোগে যেসব ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে মিশ্র ক্রিয়াপদ বলে।
যেমন : মাথা ঝিম্ ঝিম্ করছে। দর্শন করলাম, দূর হ, ছেড়ে দে ইত্যাদি।