৮। প্রশ্ন : প্রযোজক ক্রিয়া, নামধাতুর ক্রিয়া, যৌগিক ক্রিয়া এবং মিশ্র ক্রিয়ার সংজ্ঞাসহ উদাহরণ দাও।
প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজনায় অন্যের দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।
যেমন : মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন।
নামধাতু ক্রিয়া: বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বনাত্মক অব্যয়ের পরে 'আ' প্রত্যয়যোগে যেসব ধাতু গঠিত হয়, সেগুলোকে নামধাতু বলে। নামধাতুর সঙ্গে পুরুষ বা কালসূচক ক্রিয়া-বিভক্তি যোগে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে নামধাতুর ক্রিয়া বলে।
যেমন : শিক্ষক ছাত্রকে বেতাচ্ছেন। দাঁতটি ব্যথায় কনকনাচ্ছে।
যৌগিক ক্রিয়া : একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া যদি একত্রে একটি বিশেষ বা সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে, তবে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে।
যেমন : ঘটনাটা শুনে রাখ। তিনি বলতে লাগলেন ইত্যাদি।
মিশ্র ক্রিয়া : বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বনাত্মক অব্যয়ের সাথে র্ক, হ, দে, পা, যা, কাট্, র্ধ ইত্যাদি ধাতুযোগে যেসব ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে মিশ্র ক্রিয়াপদ বলে।
যেমন : মাথা ঝিম্ ঝিম্ করছে। দর্শন করলাম, দূর হ, ছেড়ে দে ইত্যাদি।
৯। সাপেক্ষ সর্বনাম কাকে বলে? এ ধরনের সর্বনামের তিনটি উদাহরণের দুটি করে প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর : পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক সর্বনাম পদ একই সঙ্গে ব্যবহৃত হয়ে দুটি বাক্যের সংযোগ সাধন করলে, তাদের বলা হয় সাপেক্ষ সর্বনাম।
যেমন :
যত...তত :
যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা।
যত গর্জে তত বর্ষে না।
যেমন ... তেমন:
যেমন গুড় তেমন মিষ্টি।
যেমন কর্ম তেমন ফল।
যেখানে ... সেখানে :
যেখানে রাত সেখানে কাত।
যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয়।
১০। বিশেষণের অতিশায়ন কাকে বলে? আলোচনা করো।
উত্তর : বিশেষণ পদ যখন দুই বা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমাণ প্রভৃতি বিষয়ে তুলনায় একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে, তখন তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে।
বাংলা শব্দের অতিশায়ন : বাংলা শব্দের অতিশায়নে দুয়ের মধ্যে হতে, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হয়।
যেমন : গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম বেশি।
তৎসম শব্দের অতিশায়ন : তৎসম শব্দের অতিশায়নে দুয়ের মধ্যে তর, তম ইত্যাদি প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।
যেমন : গুরু-গুরুতর-গুরুতম, দীর্ঘ-দীর্ঘতর-দীর্ঘতম ইত্যাদি।
১১। নিচের শব্দগুলোর পদ নির্দেশ করো :
প্রগাঢ় নিকুঞ্জ, সিক্ত নীলাম্বরী, পুলকিত সচ্ছলতা,
তিনটি ফুল আর অনেক পাতা, নীল হলুদ বেগুনি অথবা সাদা,
তুমি আমার পূর্ব বাংলা, রাঙা উৎপল যার উপমা।
উত্তর :
প্রগাঢ়--- বিশেষণ, নীলাম্বরী--- বিশেষ্য,
পুলকিত--- বিশেষণ, তিনটি--- বিশেষণ,
আর---- অব্যয়, অথবা---- অব্যয়, তুমি,
আমার---- সর্বনাম, যার---- সবর্নাম।
(এভাবেই কিছু শব্দ বা বাক্য প্রশ্নে উলেস্নখ করে দিয়ে বলবে, কোনটি কোন বিশেষ্য অথবা কোনটি কোন বিশেষণ পদ নির্দেশ করো।)
১২। না-বাচক ক্রিয়া বিশেষণ 'নি, না, নাই' এর দুটি করে প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর : না-বাচক ক্রিয়া বিশেষণ 'নি, না, নাই' এর দুটি করে প্রয়োগ দেখানো হলো :
নি: ক. ফুল কি ফোটেনি শাখে?
খ. পুষ্পারতি লভেনি কি ঋতুর রাজন?
না: ক. রচিয়া লহ না আজও গীতি।
খ. ভুলিতে পারি না কোনো মতে।
নাই : ক. নাই বা হলো এবার, তাতে কী আসে যায়?
খ. করে নাই অর্ঘ্য বিচরণ?