পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রাথমিক বিজ্ঞান

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২১, ০০:০০

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক, ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা য়
ডুবুরি
প্রশ্ন. বায়ু কীভাবে দূষিত হয় তা আলোচনা কর। উত্তর: নিম্নলিখিত উপায়ে বায়ু দূষিত হয়- ১. ইটের ভাটা, কলকারখানা ও যানবাহন থেকে কালোধোঁয়া বাতাসে মিশে। এ রকম ধোঁয়ায় থাকে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস, যা বায়ুদূষণ ঘটায়। ২. রান্নার চুলা থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় উৎপন্ন বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড বায়ুতে মিশে বায়ুদূষণ হয়। ৩. কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস গোড়ানোর ফলে উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফারের অক্সাইড বায়ুতে মিশে বায়ুদূষণ হয়। ৪. বিড়ি, সিগারেট থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া বায়ুতে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। ৫. যক্ষ্ণা ও বসন্ত রোগীদের হাঁচি কাশি থেকে জীবাণু বায়ুতে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। ৬. যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেললে ও পায়খানা করলে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ুকে দূষিত করে। প্রশ্ন: বায়ুর উপাদানগুলো আমাদের বেঁচে থাকতে কীভাবে সাহায্য করে ব্যাখ্যা কর। উত্তর: বায়ুর প্রধান উপাদানগুলো হলো- নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্প। এসব উপাদান আমাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। শ্বাস নেওয়ার সময় আমরা বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করি। অক্সিজেন আমাদের গ্রহণ করা খাদ্য ভেঙে শক্তি উৎপাদন করে। এ শক্তি আমাদের শরীরকে গরম রাখে। পানি থেকে মাছ অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। এ মাছ খেয়ে আমরা জীবনধারণ করি। উদ্ভিদ বায়ু থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে ও সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য তৈরি করে। আমরা বিভন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও তার পাতা সবজি হিসেবে খেয়ে থাকি ও জীবনধারণ করে বেঁচে থাকি। বায়ুর নাইট্রোজেন দ্বারা ইউরিয়া সার প্রস্তুত করা হয়। এ ইউরিয়া উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আবার নাইট্রোজেন ব্যবহার করে আমরা অনেক খাদ্য সংরক্ষণ করি। আর এভাবেই বায়ুর উপাদানগুলো আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। প্রশ: বায়ুদূষণ রোধের উপায় লেখ। উত্তর: নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে বায়ুদূষণ রোধ করা যেতে পারে- ১. কালোধোঁয়া উৎপাদন করে এমন যানবাহন ব্যবহার বন্ধ করা। ২. ইটের ভাটা লোকালয় থেকে দূরে স্থাপন করা। ৩. কম জ্বালানি ব্যবহার হয় এমন উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। ৪. শিল্পকারখানায় ধোঁয়া পরিশোধনের ব্যবস্থা করা। ৫. ধূমপান না করা, বিশেষ করে অন্য মানুষের কাছে বা বদ্ধ স্থানে ধূমপান না করা। ৬. উন্নত চুলা ব্যবহার এবং রান্নাঘরে বায়ু চলাচলের ভালো ব্যবস্থা তৈরি করা। ৭. বনভূমি সংরক্ষণ করা। প্রশ্ন: ধূমপান ক্ষতিকর কেন? উত্তর: ধূমপান যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমন পরিবেশের জন্যও। যে ব্যক্তি ধূমপান করে তার নানা অসুখ হয়। যেমন- হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসের ক্যান্সার। এসব রোগে ধূমপায়ীর মৃতু্য পর্যন্ত হতে পারে। শুধু তাই নয়, ধূমপায়ীর সামনে যে থাকে সেও একই ধরনের রোগে ভুগতে পারে। বিড়ি, সিগারেটের ধোঁয়ায় বায়ুদূষণকারী নানা উপাদান থাকে- যা বায়ুদূষণ ঘটায়। এ দূষিত বায়ু পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। দূষিত বায়ুর মাধ্যমে নানা রোগ ছড়ায়। এসব কারণেই ধূমপান ক্ষতিকর। প্রশ্ন: অক্সিজেন কী কী কাজে ব্যবহার করা হয় সে সম্পর্কে ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: অক্সিজেন নিম্নলিখিত কাজে ব্যবহার করা হয়- ১. মানুষ ও জীবজন্তু শ্বাসকার্যের জন্য অক্সিজেন ব্যবহার করে। ২. হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীর শ্বাসকার্যের জন্য অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। ৩. উঁচু পর্বতের আরোহীরা অক্সিজেন ব্যবহার করে। ৪. ডুবুরিদের সাগরের পানির নিচে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। ৫. আগুন জ্বালাতে অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। প্রশ্ন: নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ব্যবহার সম্পর্কে আলাদা ৩টি বাক্যে লেখ। উত্তর: নাইট্রোজেনের ব্যবহার- ১. ইউরিয়া সার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়। ২. মাছ, মাংস, ফল, চিপস ইত্যাদি টিন বা প্যাকেটে সংরক্ষণ করতে ব্যবহার করা হয়। কার্বন ডাইঅক্সাইডের ব্যবহার- ১. কোমল পানীয়তে ব্যবহার করা হয়। ২. অগ্নি নির্বাপকযন্ত্রে ব্যবহার করা হয়। ৩. ড্রাই আধান তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। প্রশ্ন: বায়ুদূষণ কী? বায়ুদূষণের ফলাফল সম্পর্কে ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর: বায়ুর স্বাভাবিক উপাদানের পরিবর্তন হলে আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বায়ুর স্বাভাবিক উপাদান পরিবর্তন হওয়াকে বায়ুদূষণ বলে। বায়ুদূষণের ফলাফল নিচে দেয়া হলো- ১. বায়ুতে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাবে। ২. পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। ৩. শ্বাসকষ্টজনিত রোগ দেখা দেবে। ৪. এসিড বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যাবে। প্রশ্ন: শক্তি কী? শক্তির রূপান্তরের উদাহরণ ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর। উত্তর: শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক বা এজেন্ট- যা সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। এটি শুধু এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হয়। নিচে উদাহরণসহ শক্তির রূপান্তরের ব্যাখ্যা দেয়া হলো- ১. বৈদু্যতিক বাতিতে বিদু্যৎ শক্তির তাপ ও আলোকে শক্তিতে রূপান্তর। ২. গাড়ি চালালে তেলের রাসায়নিক শক্তি প্রথমে রূপান্তরিত হয় তাপশক্তিতে, পরে এ তাপশক্তি রূপান্তরিত হয় গতিশক্তিতে। ৩. গাছের পাতা সূর্যের আলোকশক্তি শোষণ করে। এ আলোকশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ৪. কাঠ বা কয়লা পোড়ালে তাপশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তর হয়।