শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রাথমিক বিজ্ঞান

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক, ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
  ০৮ মার্চ ২০২১, ০০:০০
আমরা সূর্য থেকে তাপ পেয়ে থাকি

প্রশ্ন : শক্তির অপচয় বন্ধ প্রয়োজন কেন? ৫টি বাক্যে লেখ।

উত্তর : পৃথিবীতে শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট বলে শক্তি নতুন করে সৃষ্টি করা যায় না কিংবা ধ্বংসও করা যায় না। তেল, কয়লা, গ্যাস আমরা খরচ করছি এবং তা ক্রমাগত ফুরিয়ে যাচ্ছে, এগুলো আমরা আর ফিরে পাব না। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া শক্তি খরচ করলে শক্তির অপচয় ঘটে। আর শক্তির অপচয় ঘটলে এক সময় ব্যবহারযোগ্য শক্তি আমাদের কাছে থাকবে না। এজন্য শক্তির অপচয় রোধ করা একান্ত প্রয়োজন।

প্রশ্ন: পরিচলন কী? পরিচলন পদ্ধতিতে কীভাবে তাপের সঞ্চালন ঘটে তা ৪টি বাক্যে বর্ণনা কর।

উত্তর: যে পদ্ধতিতে তাপ কোনো পদার্থের অণুগুলোর চলাচল দ্বারা উত্তপ্ত অংশ থেকে শীতলতর অংশে স্থানান্তরিত হয় তাকে পরিচলন বলে।

একটি কাঁচের পাত্রে পানি নিয়ে এর সঙ্গে কিছু রং মিশিয়ে পাত্রের নিচে তাপ প্রয়োগ করলে দেখা যায়, পাত্রের তলা থেকে একটি রঙিন পানির স্রোত ওপরের দিকে ওঠে এবং পাত্রের দেয়াল বেয়ে আরেকটি স্রোত নিচে নেমে যাচ্ছে। পাত্রের তলার পানি প্রথম তাপ গ্রহণ করার ফলে উত্তপ্ত হয়ে হালকা হয় এবং উপরে ওঠে যায় অন্যদিকে উপরের ঠান্ডা পানি নিচে নেমে আসে। এভাবে ক্রমাগত গরম পানির উপরে ওঠা এবং শীতল পানির নিচে আসার ফলে পাত্রের সব পানি উত্তপ্ত হয়। সুতরাং এ পদ্ধতিতে পানির অণুগুলো স্থান পরিবর্তন করে তাপ সঞ্চালন করে।

প্রশ্ন: পদার্থের তিন দশা রয়েছে। যথা- কঠিন, তরল ও বায়বীয়। নিচে এদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হলো-

কঠিন: কঠিন দশায় পদার্থের পরমাণুগুলো নির্দিষ্ট অবস্থানে সাজানো থাকে। পরমাণুগুলোর বন্ধন শক্তিশালী থাকে। তাই এদের আকার সহজে বদলানো যায় না। এদের আয়তন নির্দিষ্ট।

তরল : তরল দশায় পদার্থের পরমাণুগুলোর মধ্যে বন্ধন শিথিল থাকে। ফলে পরমাণুগুলো চলাচল করতে পারে। কিন্তু এদের গড় দূরত্ব ঠিক থাকে। তবে আকার ঠিক থাকে না। কিন্তু আয়তন ঠিক থাকে।

বায়ুবীয় : গ্যাসীয় দশায় পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে কোনো বন্ধন থাকে না। ফলে এরা জায়গা দখল করে কিন্তু তা নির্দিষ্ট থাকে না।

প্রশ্ন: শক্তির পরিমাপ কীভাবে করা যায় তা দৃষ্টান্ত দিয়ে বোঝাও।

উত্তর: কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শক্তির পরিমাপ করা যায় এসংক্রান্ত দুটি দৃষ্টান্ত নিচে উলেস্নখ করা হলো-

একটি স্প্রিংকে টেনে লম্বা করতে বল প্রয়োগ করতে হয়। যতটুকু বল প্রয়োগ করে একটি স্প্রিংকে যতটুকু লম্বা করা যায়, এ দুটো রাশির গুণফল হলো শক্তির পরিমাণ। আবার, একটি ভারী বস্তুকে উপরে তোলার সময় কতটা ওজনের বস্তুকে কতটা উপরে তোলা হয়- এ দুটো রাশির গুণফলই হলো শক্তির পরিমাণ।

প্রশ্ন: তাপ কীভাবে সঞ্চালিত হয়?

উত্তর: তাপ সঞ্চালিত হয় তিন পদ্ধতিতে। যথা- পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণ। নিচে এ তিনটি পদ্ধতিতে তাপের সঞ্চালন ব্যাখ্যা করা হলো-

পরিবহন : এ পদ্ধতিতে তাপ সঞ্চালনে পদার্থের অণুগুলো তাদের নিজস্ব স্থান পরিবর্তন করে না। শুধু কম্পনের মাধ্যমে এক অণু থেকে পাশের অণুতে তাপ সঞ্চালিত হয়। কঠিন পদার্থে এ পদ্ধতিতে তাপ বেশি সঞ্চালিত হয়।

পরিচলন : এ পদ্ধতিতে তাপ সঞ্চালনে পদার্থের অণুগুলোর স্থান পরিবর্তন করতে হয়। পদার্থের অণুগুলো স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে উষ্ণতর অংশ হতে শীতলতর অংশে তাপ নিয়ে যায়। এ পদ্ধতিতে তাপ তরল ও বায়বীয় পদার্থে সঞ্চালিত হয়।

বিকিরণ : এ পদ্ধতিতে তাপ কোনো মাধ্যমের সাহায্য ছাড়াই সঞ্চালিত হয়। এ পদ্ধতিতে আমরা সূর্য থেকে তাপ পেয়ে থাকি।

প্রশ্ন: শক্তির অপচয় ঘটে- এমন ঘটনার কয়েকটি উদাহরণ দাও।

উত্তর: অকারণে শক্তি ব্যয় করাকে শক্তির অপচয় বলে। শক্তির অপচয় ঘটে এমন কয়েকটি ঘটনার উদাহরণ নিচে দেয়া হলো-

১. বৈদু্যতিক যন্ত্রপাতি যেমন- বাতি, পাখা, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি অপ্রয়োজনে ছেড়ে রাখা।

২. ম্যাচের কাঠি বাঁচানোর জন্য গ্যাসের চুলা সব সময় জ্বালিয়ে রাখা।

৩. ত্রম্নটিপূর্ণ যানবাহন চালানো।

৪. ট্রাফিক সিগন্যালে থাকা অবস্থায় গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ না রাখা।

৫. অপ্রয়োজনে বাড়িঘরে আলোকসজ্জা করা।

প্রশ্ন: শক্তির উৎস বলতে কী বোঝ? শক্তির কয়েকটি উৎসের নাম লেখ।

উত্তর: প্রকৃতিতে শক্তি বিভিন্নরূপে অবস্থান করে। শক্তির এক একটি রূপ যে মাধ্যমে অবস্থান করে তাকেই শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধারণ অর্থে, শক্তির উৎসগুলো হলো কয়লা, তেল, গ্যাস, খাদ্য, পানিপ্রবাহ, বায়ুপ্রবাহ, বৈদু্যতিক ব্যাটারি, জেনারেটর ইত্যাদি। এসব থেকেই আমরা তাপ, আলো, বিদু্যৎ, শব্দ ইত্যাদি পেয়ে থাকি। কিন্তু এসব শক্তির মূল উৎস হলো সূর্য।

প্রশ: শক্তি কী? দৈনন্দিন জীবনে শক্তির ৪টি ব্যবহার লেখ।

উত্তর: কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে।

দৈনন্দিন জীবনে শক্তির ৪টি ব্যবহার নিচে উলেস্নখ করা হলো-

১. বিদু্যৎশক্তি ও আলোকশক্তি ব্যবহার করে বাতি জ্বালানো।

২. তাপশক্তি ব্যবহার করে চুলায় রান্না করা।

৩. শব্দশক্তির ব্যবহার করে গান শোনা।

৪. বিদু্যৎশক্তি ব্যবহার করে বৈদু্যতিক পাখা চালানো।

প্রশ্ন. পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের গঠন ও বৈশিষ্ট্য ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: যার ওজন আছে, জায়গা দখল করে এবং বল প্রয়োগ করলে বাধা প্রদান করে তাকে পদার্থ বলে।

পদার্থ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণিকা দ্বারা গঠিত, যার নাম পরমাণু বা অ্যাটম। অ্যাটম অর্থ অবিভাজ্য, অর্থাৎ পরমাণুসমূহ আর ভাঙা যায় না। সব পদার্থ পরমাণু দ্বারা গঠিত। পদার্থের ভিন্নতা নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে-

১. প্রতিটি পদার্থ ভিন্ন রকম পরমাণু দ্বারা গঠিত।

২. পরমাণুসমূহের পারস্পরিক বন্ধন ভিন্ন রকমের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে