পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা (প্রাথমিক বিজ্ঞান)

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২১, ০০:০০

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক, ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা য়
আজ তোমাদের জন্য প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো প্রশ্ন: শক্তি কাকে বলে? শক্তি সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর: কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শক্তি সংরক্ষণের জন্য আমরা নিম্ন লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি- ১. রেডিও, টিভি, বাতি প্রভৃতি বৈদু্যতিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজনে ব্যবহার করে অন্য সময় বন্ধ রাখব। ২. ত্রম্নটিপূর্ণ যানবাহন বা যন্ত্রপাতি মেরামত করতে হবে। ৩. অপ্রয়োজনে যানবাহনের ইঞ্জিন বন্ধ রাখতে হবে। ৪. শক্তির অপচয় না করার জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। প্রশ্ন: খাদ্য সংরক্ষণ কী? তোমাদের বাসার প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল ও মাছকে পরে ব্যবহারের জন্য কীভাবে সরক্ষণ করা যেতে পারে ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর। উত্তর: খাদ্যদ্রব্যকে পচন থেকে রক্ষা করে টাটকা ও সতেজ অবস্থায় দীর্ঘদিন রেখে দেয়াকেই খাদ্য সংরক্ষণ বলে। বাসার প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল ও মাছকে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি উপযোগী প্রথমে তা নির্ধারণ করতে হবে। আমরা জানি, শুকনো অবস্থায় চাল ভালো থাকে, তাই চালকে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যদিকে মাছ সংরক্ষণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যেমন- মাছকে বাসার ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যায় অথবা উচ্চ তাপে জীবাণু ধ্বংস করে বদ্ধ পাত্রেও সংরক্ষণ করা যেতে পারে। প্রশ্ন: খাদ্য সংরক্ষণ কী? বাড়িতে খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর: খাদ্য সংরক্ষণ : খাদ্যদ্রব্যকে পচন থেকে রক্ষা করে টাটকা ও সতেজ অবস্থায় দীর্ঘদিন রেখে দেয়াকেই খাদ্য সংরক্ষণ বলে। বাড়িতে খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- ১. খাদ্যদ্রব্যকে পচন থেকে রক্ষা করে টাটকা ও তাজা রাখা। ২. পরিবারের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা। ৩. বছরের সব সময় যাতে সব রকমের খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করা। ৪. খাদ্যের অপচয় রোধ করা। প্রশ্ন: রাস্তার ধারে অথবা হোটেলের ভাজাপোড়া ও উজ্জ্বল রঙের খাবারকে স্বাস্থ্যকর বলা যায় কি না তা ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: রাস্তার ধারে অথবা হোটেলের ভাজাপোড়া ও উজ্জ্বল প্রকৃতির খাবারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের রং ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো থাকে। যেমন- ক্যালসিয়াম কার্বাইড, বিষাক্ত পাউডার, ফরমালিন, স্যাকারিন প্রভৃতি। এসব দ্রব্য স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসব খাবার গ্রহণে লিভার ও কিডনির সমস্যা, অ্যাজমা, ক্যান্সার প্রভৃতি মারাত্মক রোগ হতে পারে। তাই এসব খাবারকে স্বাস্থ্যকর খাবার বলা যায় না। প্রশ: খাদ্যে ব্যবহৃত কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক দ্রব্যের নাম ও ব্যবহারের ভয়াবহতা ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর। উত্তর: খাদ্যে ব্যবহৃত কৃত্রিম রংগুলো হলো- ইটের গুঁড়া, রঙিন কাঠের গুঁড়া, কাপড়ের রং, ধুলা, কৃত্রিম মিষ্টিদ্রব্য ইত্যাদি। রাসায়নিক দ্রব্যের মধ্যে আছে- ক্যালসিয়াম কার্বাইড, বিষাক্ত পাউডার, ফরমালিন ও স্যাকারিন। খাদ্যে কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের ভয়াবহতা খুব বেশি। এগুলো ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরে নানারকম রোগ হতে পারে। যেমন- লিভার ও কিডনি অকার্যকর হওয়া, অ্যাজমা হওয়া, শরীরের বৃদ্ধি কমে যাওয়া, ক্যান্সার হওয়া ইত্যাদি। প্রশ্ন: জাঙ্ক ফুড কী? মুনিয়া জাঙ্ক ফুড খেতে খুব পছন্দ করে। এ খাদ্যটির স্বাস্থ্যগত দিক ৪টি বাক্যে বর্ণনা কর। উত্তর: জাঙ্ক ফুড এক ধরনের কৃত্রিম খাদ্য। যেমন- আলুর চিপস, বার্গার, ক্যান্ডি, কোমল পানীয় কৃত্রিম বিভিন্ন ফলের রস, চকোলেট ফ্রুট লুপস ইত্যাদি। জাঙ্ক ফুডে উচ্চমাত্রায় চর্বি, লবণ বা চিনি থাকলেও খাদ্যে-আঁশ থাকে খুবই সামান্য, আবার নাও থাকতে পারে; যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও উপকারী নয়। আবার এসব খাবারে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ খুবই কম বা নেই বললেই চলে। বরং এসব খাদ্যে চর্বি, লবণ, কার্বনেট ইত্যাদি ক্ষতিকারক দ্রব্যের আধিক্য বেশি থাকে, ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। প্রশ্ন: পরিমিত খাদ্য কী এবং পরিমিত খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর। উত্তর: বয়স, উচ্চতা ও ওজনের পার্থক্যের কারণে খাদ্যের উপাদানগুলোর চাহিদার পার্থক্য হয়। দৈহিক চাহিদা অনুযায়ী যে খাদ্যে শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি সঠিক পরিমাণে উপস্থিত থাকে তাকে পরিমিত খাদ্য বলে। সুস্বাস্থ্যের জন্য পরিমিত খাদ্যের গুরুত্ব খুব বেশি। নিচে পরিমিত খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করা হলো- দেহ সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখার জন্য পরিমিত খাদ্য প্রয়োজন। প্রশ্ন: খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। উত্তর: সাধারণ নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যে খাদ্য সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ- ১. খাদ্যদ্রব্যকে পচন থেকে রক্ষা করে টাটকা ও তাজা রাখার জন্য। ২. বছরের সব সময়ে যাতে সব রকমের খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে। ৩. পরিবারের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করতে। ৪. খাদ্যের অপচয় রোধ করতে খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করে বিদেশে রপ্তানি করার জন্য। প্রশ্ন: দেহের চাহিদা মিটানোর জন্য খাদ্যের ছয়টি উপাদানই পরিমাণমতো দরকার কেন, ৫টি বাক্যে আলোচনা কর। উত্তর: দেহের চাহিদা মেটানোর জন্য খাদ্যের শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি এ ছয়টি উপাদানই পরিমাণমতো দরকার। ভিটামিন ও খনিজ লবণের পরিমাণ কম হলেও দেহের চাহিদামতো থাকতে হবে। আবার দেহের বিভিন্ন কাজের জন্য পানির পরিমাণ বেশি লাগে। এ ছাড়া শর্করা, আমিষ ও স্নেহজাতীয় পদার্থ বেশি পরিমাণে লাগে। কারণ এগুলো দেহের গঠন, বৃদ্ধি সাধন ও ক্ষয়পূরণ ছাড়াও তাপশক্তি জোগান দেয়। প্রশ্ন: খাদ্যে কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় কেন? স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন ৩টি রাসায়নিক দ্রব্যের নাম লেখ। উত্তর: খাদ্যদ্রব্যকে আকর্ষণীয়, সুস্বাদু ও ঘ্রাণযুক্ত করার জন্য খাদ্যে কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য তৈরি, খাদ্য সংরক্ষণ, ফল পাকানো ও বাজারজাতকরণে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন ৩টি রাসায়নিক দ্রব্যের নাম হলো- ১. ক্যালসিয়াম, কার্বাইড, ২. ফরমালিন ও ৩. স্যাকারিন। প্রশ্ন: বায়ুবাহিত রোগ কী? এসব রোগ প্রতিরোধে তুমি তোমার এলাকায় কীভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে? ৪টি বাক্যে লেখ। উত্তর: যেসব রোগের জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, সেগুলো বায়ুবাহিত রোগ নামে পরিচিত। যেমন- সর্দিজ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জা, বসন্ত, হাম ইত্যাদি। বায়ুবাহিত রোগ প্রতিরোধে আমি আমার এলাকায় নিম্নরূপে সচেতনতা বৃদ্ধি করব- ১. যেখানে সেখানে কফ, থুতু না ফেলে বন্ধ কৌটায় ফেলে মাটিতে চাপা দিয়ে রাখতে বলব। ২. হাঁচি, কাশি হলে মুখে মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করতে বলব। ৩. বসন্ত রোগীদের গুটি শুকিয়ে যাওয়ার সময় তার কাছের মানুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেবে। ৪. স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে বলব।