পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা প্রাথমিক বিজ্ঞান

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২১, ০০:০০

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক, ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
আজ তোমাদের জন্য প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো প্রশ্ন: গ্রিনহাউস গ্যাস কী? আমরা দেখি যে, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আমাদের ওপর কী প্রভাব পড়ছে বলে তুমি মনে কর? ৩টি বাক্যে লেখ। উত্তর: বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন ও জলীয়বাষ্প গ্রিনহাউসের কাচের মতো কাজ করে। এরা সূর্যের তাপ পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয় না। কিন্তু এ গ্যাসগুলো উত্তপ্ত পৃথিবীতে থেকে তাপকে চলে যেতে বাধা দেয়। ফলে পৃথিবী রাতের বেলায়ও গরম থাকে। এসব গ্যাসকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির কারণে আমাদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে আমি মনে করি। যেমন এ উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে এবং মেরু অঞ্চল ও পর্বতের চূড়ার বরফ গলে যাচ্ছে এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় দেশগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু তাই নয়, এর ফলে সাগর থেকে নদীতে লোনা পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশ্ন: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে কীভাবে রক্ষা করা সম্ভব বলে তুমি মনে কর? ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা উচিত- ১. বন উজাড় না করে অধিক পরিমাণে গাছ লাগানো। ২. কার্বন ডাইঅক্সাইড কম উৎপন্ন হয় এমন জ্বালানি ব্যবহার। ৩. কলকারখানা স্থাপনের আগে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ। ৪. অধিক পরিমাণে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার। ৫. গ্রিনহাউস গ্যাসের ব্যবহার কমানো। প্রশ্ন: বায়ুপ্রবাহের কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়ার তারতম্য ঘটে- ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: বায়ুপ্রবাহ একেক সময় একেক দিক দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে আবহাওয়ারও পার্থক্য দেখা যায়। যেমন- শীতকালে বাংলাদেশের উত্তর দিক থেকে বায়ু দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু স্থলভাগ থেকে আসে বলে এতে জলীয় বাষ্প কম থাকে তাই বৃষ্টি কম হয়। আবার গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বায়ু বঙ্গোপসাগর এলাকা থেকে বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত হয়। দক্ষিণ দিকের এ বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে এবং এ জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে বৃষ্টি হয়। এজন্য গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বায়ু আর্দ্র থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টি হয়। প্রশ্ন: আমাদের জীবনে আবহাওয়ার প্রভাব সম্পর্কে ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: আবহাওয়া আমাদের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন- ১. শীত পড়লে গরম কাপড় পরি। ২. বৃষ্টি হলে ছাতা নিয়ে বাইরে যাই। ৩. গরম পড়লে হাতপাখা ও বৈদু্যতিক পাখা দিয়ে শরীর ঠান্ডা করি। ৪. বৃষ্টি হয় বলে আমরা নানা ফসল ফলাতে পারি। ৫. বিরূপ আবহাওয়া আমাদের জীবনে নানা সমস্যা নিয়ে আসে। যেমন- বৃষ্টি বেশি হলে সব জায়গায় পানি জমে বন্যার সৃষ্টি হবে, যা আমাদের কষ্টের সৃষ্টি করে। প্রশ্ন: ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: সাগরে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করার পর বাড়িঘর, গাছপালা ইত্যাদিতে বাধা পেয়ে দুর্বল হয়ে যেতে থাকে। তবে দুর্বল হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বাড়িঘর, মাছের খামার, ক্ষেতের ফসল ও গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়; মানুষ ও গবাদিপশু মারা যায়। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে আসা জলীয়বাষ্পের প্রভাবে সমুদ্র থেকে ঢেউ আকারে লবণাক্ত পানি উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবেশ করে। অনেক সময় জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় অঞ্চলের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। প্রশ্ন: বিরূপ আবহাওয়া কী? তুমি কখনো বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব দেখেছ? দেখলে তা ৪টি বাক্যে বর্ণনা কর। উত্তর: কখনো কখনো কোনো এলাকায় বায়ুর চাপ ভীষণভাবে কমে গেলে উচ্চচাপের এলাকা থেকে বায়ু নিম্নচাপের এলাকার দিকে ধাবিত হয়। ওই নিম্নচাপ এলাকায় চাপ খুম কমে গেলে যে অস্বাভাবিক আবহাওয়া দেখা যায় তাই বিরূপ আবহাওয়া। আমার বাড়ি উপকূলীয় অঞ্চলে, আমাদের এলাকায় প্রায়ই আবহাওয়া বিরূপ হওয়ার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। আমার দেখা এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিচে দেয়া হলো- বাড়িঘর, গাছপালা ও রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়েছিল। বন্যার কারণে মাছের খামার ও ক্ষেতের ফসল ভেসে গিয়েছিল। মানুষ ও গবাদিপশু মারা গিয়েছিল।