মা-মেয়ে খুন

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে থাকলে তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। পত্রপত্রিকায় চোখ রাখলেই হত্যাকাÐসহ নানা ধরনের খবর জানা যায় যা অত্যন্ত উদ্বেগের। আমরা মনে করি, এই ধরনের ঘটনায় একদিকে যেমন দেশের স্বাভাবিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়, তেমনি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্যেও তা হয়ে ওঠে পরিপন্থি। এ ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। আর তা না হলে সবর্স্তরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এমন আশঙ্কাও অমূলক নয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার পাঠানটুলী গায়েবি মসজিদ এলাকার একটি বাসা থেকে মঙ্গলবার মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। মেয়ে পারভীন শহরের একটি পোশাক শিল্প-কারখানায় কাজ করতেন। এ ঘটনার মূলে পারভীনের স্বামী আবদুল মতিন রয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মতিন পলাতক। তথ্য মতে, দোতলা বাড়ির কক্ষগুলোয় আলাদা ভাড়াটে থাকেন। নিম্ন আয়ের লোকজন সেখানে ভাড়া থাকেন। নিচতলায় পাশাপাশি কয়েকটি কক্ষ। এর দুটি কক্ষ থেকে মা হোসনে আরা ও তার মেয়ে পারভীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার, হোসনে আরার ছেলে দাবি করেছেন, ভগ্নিপতি মতিন তার মা ও বোনকে হত্যা করে পালিয়েছেন। তার ভাষ্য, দেড় বছর আগে রিকশাচালক মতিনের সঙ্গে পারভীনের বিয়ে হয়। মতিন নিযার্তন করার কারণে তার বোন এখানে চলে আসেন। দেড় মাস আগে মতিন এসে ‘আর মারধর করবেন না’ জানিয়ে এখানে বসবাস শুরু করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা উল্লেখ করতে চাই, ডবলমুরিং থানার পরিদশর্ক (তদন্ত) বলেছেন, মা-মেয়ের গলায় দাগ দেখা গেছে এবং প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধে তাদের হত্যা করা হয়েছে। ফলে এই ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে যত দ্রæত সম্ভব দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য। বলার অপেক্ষা রাখে না, একের পর এক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছেই। গত শুক্রবারও নগরের হালিশহর এলাকায় নালা থেকে সুমি ইসলাম নামের এক নারীর মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ঘটনার দুদিন পর সুমি ইসলামের স্বামী জাহিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া কিছুদিন আগেও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দরাবাদ এলাকায় নিজ বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রী ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। বাড়িটিতে গিয়ে স্ত্রী ও মেয়ের গলা কাটা এবং স্বামীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। আমরা বলতে চাই, যখন একের পর হত্যাকাÐসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে, মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে, তখন সাবির্কভাবে এই পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনোভাবেই এগুলো এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কেন একের পর এক হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটছে, কেন পারবারিক কলহসহ বিভিন্ন কারণেই এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি নেমে আসছেÑ সেই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে বিচার-বিশ্লেষণ সাপেক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। এটা মনে রাখা দরকার যে, এই ধরনের ঘটনা রোধ না গেলে তা শুধু বতর্মান সময়েই নয় বরং ভবিষ্যতের জন্যেও হয়ে উঠবে আশঙ্কাজনক, যা কাম্য নয়। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার একের পর এক এই ধরনের ঘটনাগুলো কেন ঘটছে তা খতিয়ে দেখে যেমন পদক্ষেপ নিশ্চিত করা, তেমনি জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।