নবম-দশম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র

প্রকাশ | ০৫ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

আতাউর রহমান সায়েম সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
কপোতাক্ষ নদ
সুভা ১৮. কেন বাণীকণ্ঠকে লোকে নিন্দা করতে শুরু করে? উত্তর : সুভার বিয়ে না দেওয়ায় বাণীকণ্ঠকে লোকে নিন্দা করে। সুভা বাণীকণ্ঠের তৃতীয় মেয়ে। সুভা বোবা হওয়াতে তাকে বিয়ে দিতে অসুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু তার জন্য বাণীকণ্ঠ তার বিয়ে দিতে পারছিলেন না বলে সবাই বাণীকণ্ঠকে নিন্দা করা শুরু করেছিল। তার ওপর বাণীকণ্ঠ সচ্ছল ছিলেন, তারা দুবেলা মাছ-ভাত খেতে পারতেন বলে তার শত্রম্নরও শেষ ছিল না। গ্রামের লোকজন তাদের একঘরে করারও গুঞ্জন তোলে। ১৯. প্রতাপের দিকে সুভা কেন মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়ে ছিল? উত্তর : সুভার বর পাওয়া গেছে, সে বিয়ে করে চলে যাবে, বিয়ের পর যেন সুভা তাকে না ভুলে প্রতাপের এই কথাগুলো শুনে সুভা প্রতাপের দিকে মর্মবিদ্ধ হরিণীর মতো তাকিয়ে ছিল। প্রতাপ মাছ ধরার সময় সুভা একদিন তার কাছে গেলে প্রতাপ তাকে বলে যে, তার বর খুঁজে পাওয়া গেছে। তার বিয়ে হবে। বিয়ের পর সে যে সবাইকে ভুলে না যায়। এ কথা শুনে সুভা প্রতাপের দিকে এমনভাবে তাকায়, যে মর্মবিদ্ধ হরিণী শিকারির দিকে তাকিয়ে থাকে। কারণ সুভা বিয়ের জন্য রাজি ছিল না। প্রতাপের কাছ থেকে কথাটি শুনে ভালো লাগে না তার। অত্যন্ত কষ্ট পায় বলে এভাবে তাকিয়ে থাকে। কপোতাক্ষ নদ ১। 'স্নেহের তৃষ্ণা' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? উত্তর : জন্মভূমির প্রতি গভীর মমতায় মাতৃদুগ্ধরূপী কপোতাক্ষ নদের জলে তৃষ্ণা নিবারণের আকাঙ্ক্ষাকে স্নেহের তৃষ্ণা বলা হয়েছে। প্রবাসে থাকাকালে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্মভূমির প্রতি গভীর স্মৃতিকাতরতা অনুভব করেছেন। শৈশবের মধুর স্মৃতি কবিকে আচ্ছন্ন করেছিল। তাই প্রবাসে বসেও তিনি কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পেয়েছেন। কবি বহু দেশ ঘুরে বহু নদ-নদী দেখেছেন; কিন্তু কারও জলেই যেন তার তৃষ্ণা নিবারণ হয় না। তিনি কপোতাক্ষের জলেই শুধু স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতে চান। ২। 'দুগ্ধ স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে'- কথাটির অর্থ ব্যাখ্যা করো। উত্তর : উপমায় মায়ের স্তনের অমূল্য দুগ্ধের সঙ্গে স্বদেশ ও শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ তুলনা করা হয়েছে আলোচ্য চরণে। প্রবাসে বসবাস করলেও স্বদেশকে গভীরভাবে ভালোবাসেন 'কপোতাক্ষ নদ' কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। বিশেষভাবে তাকে আলোড়িত করে তার শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিঘেরা কপোতাক্ষ নদ। এই নদীর সাথে কবির যেন নাড়ির সম্পর্ক বিদ্যমান। কবিতায় জন্মভূমিকে তিনি মা হিসেবে কল্পনা করেছেন। আর কপোতাক্ষ নদকে কল্পনা করেছেন সেই মায়ের স্তনের অমূল্য দুগ্ধ হিসেবে। এর মাধ্যমে কপোতাক্ষ নদের প্রতি কবির অত্যন্ত গভীর অনুরাগের প্রমাণ পাওয়া যায়।