নবম-দশম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

আতাউর রহমান সায়েম সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
আজ তোমাদের জন্য জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো কপোতাক্ষ নদ ৪৮. 'কপোতাক্ষ নদ' কবিতার শেষ ছয় চরণের অন্ত্যমিল বিন্যাস কোনটি? উত্তর : গঘগঘগঘ। ৪৯. কপোতাক্ষ নদ সাগরকে কী দেয়? উত্তর : জলরূপ কর। ৫০. 'নিশা'- অর্থ কী? উত্তর : রাত্রি। ৫১. ্তুঝড়হহবঃ, শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে? উত্তর : ইতালি শব্দ ্তুঝড়হহবঃঃড়্থ. ৫৩. ্তুঝড়হহবঃঃড়্থ-এর অর্থ কী? উত্তর : মৃদু ধ্বনি। ৫৪. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত তারিখে পরলোক গমন করেন? উত্তর : ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন। ৫৫. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কার অনুসরণে চতুর্দশপদী কবিতাবলি/সনেট রচনা করেন? উত্তর : ইতালির কবি পেত্রার্ক এবং ইংল্যান্ডের কবি উইলিয়াম শেক্সপিয়র। ৫৬. মাইকেল মধুসূদন রচিত ও প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থের নাম কী? উত্তর: ঈধঢ়ঃরাব খধফু (১৮৪৯ সালে)। শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ১। আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না কেন? উত্তর : প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ জীবসত্তা থেকে মুক্তি পায় না বলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না। লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী তার 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে মানুষের মাঝে দুটি সত্তার কথা বলেছেন। একটি জীবসত্তা, আরেকটি মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব। একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই জীবসত্তা থেকে একজন মানুষ মানবসত্তায় উপনীত হয়। মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি প্রয়োজন। তাই জীবসত্তা থেকে মুক্তি ছাড়া আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না। \হ ২। 'অর্থচিন্তার নিগড়ে সকলে বন্দি' বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? উত্তর : 'অর্থচিন্তার নিগড়ে সকলে বন্দি' বলতে আমাদের জগৎ সংসারে সবাই জীবনটাকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে পার করার চিন্তায় ব্যস্ততা বোঝানো হয়েছে। পৃথিবীতে সবারই চাহিদা অসীম। তাই সহজেই কেউ তৃপ্ত হতে পারে না। এ জন্য সবাই অর্থের পেছনে ছোটে। জীবসত্তার প্রয়োজন মেটাতে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু শুধু অর্থের পেছনে না ছুটে আমাদের মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য মানবসত্তার চর্চাও করা প্রয়োজন। এ জন্য শিক্ষা অর্জনে আগ্রহী হতে হবে। কিন্তু জীবসত্তার প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে মানুষ অর্থচিন্তার শিকল থেকে মুক্ত হতে পারে না। এটি বোঝানোর জন্যই লেখক প্রশ্নোক্ত মন্তব্যের অবতারণা করেছেন। ৩। 'কারারুদ্ধ আহারতৃপ্ত মানুষের মূল্য কতটুকু?' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? উত্তর : প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিতে কারারুদ্ধ বলতে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত থাকাকে বোঝানো হয়েছে। শিক্ষা মানুষকে মুক্তি দেয়। কারাগারে বসে প্রচুর অন্নবস্ত্র পেলেও মানুষ মুক্তির স্বাদ পেতে চায়। শিক্ষা তেমনি অন্নচিন্তার মধ্যে থেকেও মনের মুক্তি দেয়। শিক্ষার মাধ্যমে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা পাওয়া যায়। কিন্তু যারা ধন-সম্পদের মধ্যে থেকেও এই শিক্ষা থেকে দূরে থাকে তাদের অবস্থা কারারুদ্ধ আহারতৃপ্ত মানুষের মতোই। প্রশ্নে কারারুদ্ধ বলতে এ দিকটিই বোঝানো হয়েছে। ৪। মানবজীবনে শিক্ষা সোনা ফলাতে পারে না কেন? উত্তর : অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি না পেলে শিক্ষা মানবজীবনে সোনা ফলাতে পারে না। শিক্ষা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটায়। কিন্তু জীবনসত্তার প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে মানুষ শিক্ষার প্রকৃত মর্মার্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়। জীবসত্তার প্রয়োজনে মানুষ সবসময় অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি থাকে। এই অর্থ সাধনাই যে জীবন সাধনা নয়, এ কথাটি অনুধাবনে ব্যর্থ হলে শিক্ষা মানবজীবনে সোনা ফলাতে পারে না। ৫। শিক্ষার আসল কাজ কী? ব্যাখ্যা করো। উত্তর : শিক্ষার আসল কাজ হলো মূল্যবোধ সৃষ্টি। জ্ঞান পরিবেশন করা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য নয়। শিক্ষার মূল কাজ হলো মানুষকে মনুষ্যত্বলোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। অন্নবস্ত্রের সমস্যা সমাধান হলেই মানবজীবনের প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। এ জন্য প্রয়োজন চিন্তা, বুদ্ধি ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা। শিক্ষার মাধ্যমেই আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি। মূল্যবোধের জাগরণ ঘটিয়ে শিক্ষা আমাদের সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। আর এটিই শিক্ষার আসল কাজ। ৬। 'অপ্রয়োজনের দিকই তার শ্রেষ্ঠ দিক'- বলতে প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন? উত্তর : 'অপ্রয়োজনের দিকই তার শ্রেষ্ঠ দিক' বলতে শিক্ষার মাহাত্ম্যের কথা বোঝানো হয়েছে। মোতাহের হোসেন চৌধুরী 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে মানবজীবনের উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। অন্নবস্ত্রের সমস্যা সমাধানে শিক্ষার যেমন ভূমিকা আছে, তেমনি মানবিক মূল্যবোধ গঠনেও শিক্ষার ভূমিকা আবশ্যকীয়। প্রাবন্ধিক শিক্ষার প্রথম ভূমিকাটিকে বলেছেন প্রয়োজনের আর দ্বিতীয়টিকে অপ্রয়োজনের। শিক্ষার অপ্রয়োজনের এই দিকটি মানুষকে জীবন উপভোগ করতে শেখায়, মনুষ্যত্বলোকের সাথে মানুষের মিলন ঘটিয়ে দেয়। এটি ছাড়া প্রকৃত মানুষ হওয়ার কোনো উপায় নেই। লেখক তাই শিক্ষার অপ্রয়োজনের দিকটিকেই শ্রেষ্ঠ দিক বলেছেন। ৭। অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি কেন? উত্তর : মানবজীবনে শিক্ষার সুফল লাভের জন্য অর্থচিন্তা থেকে মুক্তি লাভ করা জরুরি। 'শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব' প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী মানবজীবনের উন্নয়নের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার মতে, অধিকাংশ মানুষই অর্থচিন্তা অর্থাৎ অন্নচিন্তায় নিমগ্ন। এর ফলে তাদের জীবনের উপরের তলা অর্থাৎ মনুষ্যত্বের ঘরটির দশা নিতান্তই শোচনীয়। কিন্তু অর্থ সাধনা জীবন সাধনা নয়, এটি মানুষকে বুঝতে হবে। তা না হলে শিক্ষা-দীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান কোনো কাজেই আসবে না। মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানোর জন্য অর্থচিন্তা থেকে মানুষের মুক্তি অত্যন্ত জরুরি।