ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

আতাউর রহমান সায়েম সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ য়
সারাংশ ১. আগেকার দিনে আমাদের......অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। উত্তর : বর্তমান বেলুনের পরিবর্তে মহাকাশ পাঠিয়ে আকাশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আর তার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ \হব্যবস্থা বিস্তৃত হয়েছে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের সংকেত পাঠানোর মাধ্যমে যোগাযোগ আজ অনেক সহজ হয়েছে। ২. সাজসজ্জার দিকে বেশ ঝুঁকে..............গলায় ফুলের মালা। উত্তর : প্রাচীনকালে বাঙালি জাতি পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে বেশ শৌখিন ছিল। ছেলেমেয়ে উভয়েই তাদের পোশাক ব্যবহারের প্রতি ছিল সচেতন। তবে সমাজের উঁচু-নিচু শ্রেণিভেদে পোশাক-পরিচ্ছদে কিছু পার্থক্যও ছিল। সারমর্ম ১. সবুজ-শ্যামল বনভূমি মাঠ নদীতীর বালুচর........ মুজিব আয় ঘরে ফিরে আয়। উত্তর : বাংলাদশের সব জায়গাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অস্তিত্ব অনুভূত হয়। প্রকৃতির নিসর্গে, মানুষের সৌন্দর্যেও তাকে প্রত্যক্ষ করা যায়। তার নেতৃত্বের জন্যই বাঙালির মনে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। ২. পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি...............প্রত্যেক মোরা পরের তরে। উত্তর : আপন ভোগ-বিলাসে মগ্ন থাকার জন্যই মানুষের জন্ম হয়নি। পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার মধ্যেই মানবজীবনের প্রকৃত সুখ নিহিত। অতএব, প্রকৃত সুখ পেতে হলে নিজেকে পরের কল্যাণে বিলিয়ে দিতে হবে। অনুচ্ছেদ শীতের পিঠা উত্তর : ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। শীতকাল তারমধ্যে অন্যতম। শীতকালে নতুন ধান ওঠে। সেই ধানে ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর উৎসব শুরু হয়। নতুন চালের গুঁড়া আর খেজুর রসের গুড় দিয়ে বানানো হয় নানান রকম পিঠা। নানান তাদের নাম, নানান তাদের রূপের বাহার। যেমন- ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা আরও হরেক রকম পিঠা তৈরি হয় বাংলার ঘরে ঘরে। পায়েস, ক্ষীর ইত্যাদি মুখরোচক খাবার আমাদের রসনাকে তৃপ্ত করে শীতকালে। এ সময় শহর থেকে অনেকে গ্রামে যায় পিঠা খেতে। তখন গ্রামাঞ্চলের বাড়িগুলো নতুন অতিথিদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে। শীতের সকালে চুলোর পাশে বসে গরম গরম ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। গ্রামের মতো শহরে শীতের পিঠা সেরকম তৈরি হয় না। তবে শহরের রাস্তা-ঘাটে শীতকালে ভাপা ও চিতই পিঠা বানিয়ে বিক্রি করা হয়। এছাডা অনেক বড় বড় হোটেলে পিঠা উৎসব হয়। পিঠা বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান। বাংলা নববর্ষ সারা বছরের সব গস্নানি মুছে দিয়ে পাওয়া না পাওয়ার হিসাব চুকিয়ে প্রতি বছর ফিরে আসে পহেলা বৈশাখ। নতুন পসরা সাজিয়ে আগমন ঘটে নতুন বছরের। এ দিনটিই 'বাংলা নববর্ষ' নামে পরিচিত। এ দিনটি বাঙালি জাতির প্রাণে এক আনন্দধারা বইয়ে দেয়। নববর্ষের আগমনে দেশের সর্বত্রই বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। ১৫৫৬ সালে সম্রাট আকবরের শাসনামল থেকে পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ পালনের রেওয়াজ শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বৈশাখী মেলার উৎসব আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের সরকার ১৪ এপ্রিল তারিখে পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনের জন্য সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখ মাসের প্রথম দিনেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। গ্রামে, গঞ্জে ও শহরে অনুষ্ঠিত এ মেলাকে বৈশাখী মেলা বলা হয়। এ মেলা চলে সপ্তাহ থেকে মাসব্যাপী। এ মেলা এখন বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকায় বর্ষবরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা লোকজ চিত্রকলা আঁকে, হাতি-ঘোড়ার \হমুখোশ তৈরি করে, নানান সাজে নানান বৈচিত্র্যে বৈশাখীর্ যালিতে অংশ নিয়ে বাংলা সনকে বরণ করে নেয়। মঙ্গল শোভাযাত্রার এমন দৃশ্য দেখে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা টঘঊঝঈঙ বাংলা নববর্ষকে ঐবৎরঃধমব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ দিনে ভোর থেকে রবীন্দ্রসংগীতের মনোমুগ্ধকর গানে রমনার বটমূলে সমবেত হয়ে নববর্ষ বরণ করে 'ছায়ানট'। ভোরবেলায় রমনা পার্কে পান্তা বিক্রির আয়োজন করা হয়। বাংলা নববর্ষ কেবল সংস্কৃতি নয় এর অর্থনৈতিক দিকও রয়েছে। এ অর্থনৈতিক দিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পহেলা বৈশাখ ব্যবসায়ী মহলে হালখাতার দিন। হালখাতা উপলক্ষে ক্রেতা-বিক্রেতাদের লেন-দেনে যে বাকি আছে, তা পরিশোধ করা হয়। সেই সঙ্গে মিষ্টিমুখ। নববর্ষ উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানুষ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা এই সার্বজনীন উৎসব পালন করে থাকেন। তবে বাংলা নববর্ষ পালন করতে গিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক এটা কারও কাম্য নয়। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে- বাংলা নববর্ষ আমাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একটি বিশেষ উপাদান। পৃথিবীর এক বিরল বৈচিত্র্যময় উৎসব। এ উৎসব শুধু বাঙালির একার গৌরব।