পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা প্রাথমিক বিজ্ঞান

আজ মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
প্রশ্ন : তুমি মহাবিশ্ব সম্পর্কে গবেষণা করতে চাইলে কী করবে? তোমার পরিকল্পনা আলোচনা করো। উত্তর : রাতের আকাশে খালি চোখে আমি অসংখ্য তারা বা নক্ষত্র দেখতে পাই। কিন্তু ভালোভাবে সেগুলো দেখতে হলে আমাকে মহাকাশ গবেষণার জন্য নির্মিত বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। যেমন- দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে আমি নক্ষত্রগুলোকে আরও স্পষ্ট দেখতে পাব। এ যন্ত্রের সাহায্যে অনেক দূরের বস্তুও বড় দেখায়। এটি আমাদের মহাকাশের দূরবর্তী বস্তু পর্যবেক্ষণে সাহায্য করবে। মহাকাশের গ্রহ, নক্ষত্র এবং গ্যালাক্সি নিয়ে গবেষণা করতে বিজ্ঞানীরাও দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছেন এবং মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করেছেন। কাজেই আমি যদি মহাবিশ্ব সম্পর্কে গবেষণা করতে চাই তাহলে দূরবীক্ষণ যন্ত্রসহ বিভিন্ন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করব। প্রশ্ন : ঋতু পরিবর্তন হয় কেন? গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার চারটি কারণ লেখো। উত্তর : পৃথিবীর নিজস্ব কক্ষপথে ঘূর্ণন এবং সূর্যের দিকে এর হেলে থাকা অক্ষের কারণে ঋতু পরিবর্তন হয়। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার চারটি কারণ নিচে দেওয়া হলো : ১. গ্রীষ্মকালে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সূর্যের দিকে হেলে থাকে। ২. সূর্য অপেক্ষাকৃত আকাশের উঁচুতে অবস্থান করে। ৩. সূর্য খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ৪. দিনের সময়কাল দীর্ঘ থাকে। প্রশ্ন : বার্ষিক গতি কাকে বলে? পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ সূর্যের দিকে বা সূর্যের বিপরীত দিকে সরে পড়ে কেন? একটি বাক্যে লেখো। শীতকালে তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার তিনটি কারণ লেখো। উত্তর : সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীর আবর্তনকে বার্ষিক গতি বলে। সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর আবর্তনের জন্য বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ সূর্যের দিকে বা সূর্যের বিপরীত দিকে সরে পড়ে। শীতকালে তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার তিনটি কারণ দেওয়া হলো : ১. শীতকালে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের বিপরীত দিকে হেলে পড়ে। ২. সূর্য আকাশের অপেক্ষাকৃত নিচে অবস্থান করে। ৩. সূর্য তির্যকভাবে কিরণ দেয়। প্রশ্ন : পৃথিবী কী? সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর ঘূর্ণন সম্পর্কিত তথ্য চারটি বাক্যে লেখো। উত্তর : পৃথিবী সৌরজগতের একটি গ্রহ। সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর ঘূর্ণন সম্পর্কিত চারটি বাক্য নিম্নরূপ : ১. পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে। ২. যে পথে পৃথিবী সূর্যকে আবর্তন করে তাকে কক্ষপথ বলে। ৩. সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরে আসতে পৃথিবীর ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা সময় লাগে। ৪. নিজ অক্ষের উপর পৃথিবীর ঘূর্ণায়মান গতিকে আহ্নিক গতি বলে। প্রশ্ন : ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বছরে আমরা কয়টি ঋতু দেখতে পাই? উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে সূর্যের তিনটি প্রভাব উলেস্নখ করো। উত্তর :পৃথিবীর নিজস্ব কক্ষপথে ঘূর্ণন এবং সূর্যের দিকে এর হেলে থাকা অক্ষের কারণে ঋতু পরিবর্তন হয়। বছরে আমরা ছয়টি ঋতু দেখতে পাই। উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে সূর্যের তিনটি প্রভাব নিম্নরূপ : ১. গ্রীষ্মকালে সূর্য আকাশের অপেক্ষাকৃত উঁচুতে অবস্থান করে। ২. এ সময় উত্তর গোলার্ধে সূর্য খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ৩. দিনের সময়কাল দীর্ঘ হয় এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। প্রশ্ন : মহাবিশ্ব ও সৌরজগতের মধ্যে তুলনা উলেস্নখ করো। উত্তর : মহাবিশ্ব ও সৌরজগতের মধ্যে তুলনা নিম্নরূপ : মহাবিশ্ব ১. মহাকাশের অসংখ্য ছায়াপথ, নীহারিকা, এদের অন্তর্গত অগণিত নক্ষত্র ও তাদের গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু ও উল্কা ইত্যাদি নিয়ে মহাবিশ্ব গঠিত। ২. মহাবিশ্ব অনেক বিশাল। ৩. মহাবিশ্ব সৌরজগতের অন্তর্গত নয়। সৌরজগৎ ১. সূর্য ও তার গ্রহ, উপগ্রহ ও ধূমকেতু নিয়ে সৌরজগৎ গঠিত। ২. সৌরজগৎ মহাবিশ্বের কাছে একটি বিন্দুর মতো। ৩. সৌরজগৎ মহাবিশ্বের অন্তর্গত। প্রশ্ন : গ্রহ ও উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য কী? উত্তর : গ্রহ ও উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ : গ্রহ ১. যে সব জ্যোতিষ্ক নক্ষত্রের চারদিকে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পথে পরিভ্রমণ করে তাদের গ্রহ বলে। ২. গ্রহ উপগ্রহ থেকে অনেক বড় হয়। ৩. গ্রহ নক্ষত্র থেকে সৃষ্টি হয়। যেমন : আমাদের পৃথিবী সূর্য নামক নক্ষত্র থেকে সৃষ্ট। উপগ্রহ ১. যে সব জ্যোতিষ্ক গ্রহের আকর্ষণে তার চারদিকে নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে তাদের উপগ্রহ বলে। ২. উপগ্রহ গ্রহ থেকে অনেক ছোট হয়। ৩. উপগ্রহ গ্রহ থেকে সৃষ্টি হয়। যেমন : ফোবস ও ডিমোস নামক ২টি উপগ্রহ মঙ্গল গ্রহ থেকে সৃষ্ট। প্রশ্ন : ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? ব্যাখ্যা করো। উত্তর : বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তন হয়। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ যখন সূর্যের দিকে হেলে থাকে তখন সূর্যরশ্মি অপেক্ষাকৃত খাড়াভাবে এসে পড়ে এই গোলার্ধে। সূর্য থেকে বেশি পরিমাণ বিকিরণ রশ্মি এই গোলার্ধে এসে পড়ে প্রতি একক এলাকায়। এ ছাড়া পৃথিবী যখন আপন অক্ষের ওপর ঘুরতে থাকে, এই গোলার্ধের এলাকা বেশিক্ষণ ধরে সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। অর্থাৎ সে সময় উত্তর গোলার্ধে দিন হয় বড় এবং রাত হয় ছোট। এই সময়টা হচ্ছে উত্তর গোলার্ধের জন্য গ্রীষ্মকাল। বেশিক্ষণ ধরে সূর্যরশ্মি পায় বলে এই গোলার্ধের তাপমাত্রা তখন বৃদ্ধি পায়। এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে উল্টো ব্যাপারটি ঘটে বলে সেখানে হয় শীতকাল। প্রশ্ন : আহ্নিক গতি কী? আহ্নিক গতির তিনটি সুবিধা লেখো। উত্তর : পৃথিবী তার অক্ষের উপর চারদিকে একবার ঘুরে আসতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। এ ২৪ ঘণ্টাকে বলা হয় একদিন। পৃথিবীর এ দৈনিক গতির নাম আহ্নিক গতি। আহ্নিক গতির তিনটি সুবিধা হলো : ১. দিন রাত সংঘটন : আহ্নিক গতির ফলে ভূপৃষ্ঠে দিন রাত সংঘটিত হয়। ২. সময় গণনা : আহ্নিক গতির ফলে সময় গণনা করার সুবিধা হয়। ৩. উষ্ণতার তারতম্য : আহ্নিক গতির ফলে পৃথিবীতে উষ্ণতার পরিবর্তন হয়।