পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা প্রাথমিক বিজ্ঞান

আজ মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
প্রশ্ন : গ্যালাক্সি কাকে বলে? সূর্য নক্ষত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর : অজস্র নক্ষত্রের সমারোহকে গ্যালাক্সি বলে। সূর্য নক্ষত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে দেওয়া হলো : ১. সূর্যের নিজস্ব আলো আছে। ২. সূর্য তার চতুর্দিকে আবর্তনকারী গ্রহগুলোকে আকর্ষণ করে। ৩. সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থান করে। ৪. সূর্য সমসময় একই আকৃতি ও উজ্জ্বলতা বহন করে। প্রশ্ন : মহাবিশ্বের বিভিন্ন সদস্যের মধ্যে সূর্য ও পৃথিবী আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন? ৫টি বাক্যে লেখো। উত্তর : আমাদের নিকটতম নক্ষত্র সূর্য থেকেই আমরা তাপ ও আলো পাই। সূর্য থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় সব শক্তি পাচ্ছি এবং দিন-রাতের পরিবর্তন ঘটছে সূর্যের জন্য। এক কথায় সূর্যের জন্য পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে। আবার সৌরজগতের ৮টি গ্রহের মধ্যে শুধু পৃথিবীতেই জীবন সম্ভব হয়েছে। কারণ এখানে বায়ুমন্ডলে বিশেষ তাপমাত্রা, দিন-রাতের পরিবর্তন, পানি, মাটি ও সার্বিক আবহাওয়া আছে বলে আমরা বাস করতে পারি। প্রশ্ন : আমাদের নিকটতম নক্ষত্রটি কী? এটি কীভাবে আমাদের উপকারে আসে ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা করো। উত্তর : আমাদের নিকটতম নক্ষত্র সূর্য। পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্বনির্ভর করে সূর্যের ওপর। সূর্য থেকে আমরা তাপ ও আলো পাই, যা কাজে লাগিয়ে গাছপালা আমাদের জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন সরবরাহ করে। এ ছাড়া সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘোরে- যার ফলে দিন-রাত সংঘটিত হয়। পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে সূর্যের জন্য এবং সে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব শক্তি সূর্যই সরবরাহ করে। প্রশ্ন : আমাদের দেশে যখন দিন তখন পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে রাত হয়- এর কারণ ৫টি বাক্যে লেখো। উত্তর : পৃথিবীর সম্পূর্ণ পৃষ্ঠে সূর্যের আলো একই সময়ে পড়ে না। কারণ পৃথিবী সর্বদা তার নিজ অক্ষের ওপর আবর্তনশীল। ফলে আমাদের দেশ পৃথিবীর যে অংশে অবস্থিত সে অংশ যখন সূর্যের দিকে থাকে তখন আমাদের দেশে দিন হয়, আবার এর বিপরীত পৃষ্ঠের দেশগুলোয় তখন সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না বলে সে দেশগুলোয় রাত। একইভাবে আমাদের দেশে যখন রাত হবে তখন সেই দেশগুলো সূর্যের দিকে থাকবে এবং সেখানে দিন হবে। প্রশ্ন : তুমি কী সব সময় আকাশের চাঁদ একই রকম দেখো? উত্তরের কারণ ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা করো। উত্তর : আমি সব সময় আকাশের চাঁদ একই রকম দেখি না। কারণ, পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার ফলে কখনো কখনো আমরা চাঁদের আলোকিত অংশের সবটাই দেখতে পাই, তখন চাঁদকে পূর্ণাঙ্গ থালার মতো দেখি। কখনো আবার আলোকিত অর্ধেক গোলকের অংশবিশেষ দেখতে পাই, এর ফলে চাঁদের অন্ধকার অংশ কখনো কখনো পৃথিবীর দিকে থাকে। পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে, এতে আমরা অমাবস্যা দেখতে পাই। কিন্তু চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পরবর্তী পর্যায়ে এর আলোকিত অংশবিশেষ পৃথিবীর দিকে চলে আসে, তখন আমি চাঁদের ফালি দেখতে পাই। এভাবে পর্যায়ক্রমে সাড়ে ২৯ দিন পর চাঁদের পরিক্রমা শেষ করে, তখন চান্দ্রমাস পূর্ণ হয়। প্রশ্ন : সূর্য নক্ষত্রের বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর : সূর্য একটি নক্ষত্র। এর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- ১. সূর্যের নিজস্ব আলো আছে। ২. সূর্য থেকে আমরা তাপ ও আলো পাই। ৩. এটি সৌরজগতের কেন্দ্রীয় নক্ষত্র। ৪. সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী নানা গতি লাভ করেছে। ৫. সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে দিন-রাতের পরিবর্তন ঘটছে। ৬. সূর্য উজ্জ্বল ও উত্তপ্ত। ৭. এখানে প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস আছে। ৮. সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে। প্রশ্ন : দিন-রাতের কারণ ব্যাখ্যা করো। উত্তর : পৃথিবী তার মেরুরেখার উপর পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এভাবে একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন। পৃথিবীর এ দৈনিক গতির নাম আহ্নিকগতি। সূর্যের নিজস্ব আলো থাকে। পৃথিবীর আবর্তনের সময় এর যে অংশ সূর্যের দিকে থাকে সে অংশ আলোকিত হয়। অন্য পাশটি আলো পায় না, অন্ধকার থেকে যায়। আলোকিত অংশটিকে দিন এবং অন্য অংশটিকে রাত বলে। এভাবে পৃথিবীর অর্ধেকাংশে দিন এবং বাকি অর্ধেকাংশে রাত চলতে থাকে। প্রশ্ন : সৌরজগৎ কী? আমাদের জন্য সূর্য এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? ৪টি বাক্যে লেখো। উত্তর: চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ, নানা বস্তু নিয়ে যে জগৎ গঠিত তাকে সৌরজগৎ বলে। আমাদের নিকটতম নক্ষত্র সূর্য থেকেই আমরা তাপ ও আলো পাই। সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী নানা গতি লাভ করেছে। সূর্য থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় সব শক্তি পাচ্ছি এবং দিন-রাতের পরিবর্তন ঘটছে সূর্যের জন্য। পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে সূর্যের জন্য। প্রশ্ন : গ্রহ সম্পর্কে ৩টি বাক্যে লেখো। সৌরজগতে ৮টি গ্রহ আছে কিন্তু শুধু পৃথিবীতেই জীবন আছে কেন? উত্তর : সৌরজগতে মোট ৮টি গ্রহ আছে, এগুলো হলো- বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। গ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বৃহস্পতি এবং সবচেয়ে ছোট বুধ। গ্রহগুলো সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে অনবরত ঘুরছে। জীবনের বিকাশের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান মাটি, পানি, বায়ু, তাপ, আলো একমাত্র পৃথিবীতে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে এ সব উপাদান পাওয়া যায় না বলে জীবনের বিকাশও সেখানে সম্ভব হয় না। তাই জীবনও সেখানে সম্ভব নয়। প্রশ্ন : উপগ্রহ কাকে বলে? ৫টি বাক্যে চাঁদের বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর : যেসব জ্যোতিষ্ক গ্রহের চারদিকে ঘোরে তাদের উপগ্রহ বলে। চাঁদের ৫টি বৈশিষ্ট্য হলো- ১. চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। ২. এটি আসলে পৃথিবীর মতো কঠিন এক গোলক। ৩. পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে। ৪. আয়তন পৃথিবীর পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগ। ৫. সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। প্রশ্ন : বার্ষিক গতি কী? পৃথিবীর বার্ষিক গতির বৈশিষ্ট্য্ল৪টি বাক্যে লেখো। উত্তর : পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে যে সময় লাগে তাই পৃথিবীর বার্ষিক গতি। নিচে এর বৈশিষ্ট্য ৪টি বাক্যে লেখা হলো- ১. বার্ষিক গতির জন্য প্রতিবারে সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা। ২. এর পথ উপবৃত্তাকার। ৩. এর ফলে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কখনো কমে আবার কখনো বাড়ে। ৪. ঘোরার সময় পৃথিবীর মেরু রেখাটি অক্ষের সঙ্গে ৬৬ ডিগ্রি কোণ করে থাকে।