জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
২০। নাটকের লক্ষ্য সর্বকালেই কারা?
উত্তর : নাটকের লক্ষ্য সর্বকালেই দর্শকসমাজ।
২১। কারা নাট্যসাহিত্যকে কাব্যসাহিত্যের মধ্যে গণ্য করেছেন?
উত্তর : সংস্কৃত আলঙ্করিকরা নাট্যসাহিত্যকে কাব্য সাহিত্যের মধ্যে গণ্য করেছেন।
২২। নাটককে প্রধানত কোন কাব্যের পর্যায়ভুক্ত করা যায়?
উত্তর : নাটককে প্রধানত দৃশ্য কাব্যের পর্যায়ভুক্ত করা যায়।
২৩। নাটক সচরাচর কয় অঙ্কে বিভক্ত থাকে?
উত্তর : নাটক সচরাচর পাঁচ অঙ্কে বিভক্ত থাকে।
২৪। নাটকের বিভাগগুলোর মধ্যে কোনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়?
উত্তর : নাটকের বিভাগগুলোর মধ্যে ট্র্যাজেডিকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২৫। 'একাঙ্কিকা' কী?
উত্তর : 'একাঙ্কিকা' হচ্ছে এক ধরনের নাটক।
২৬। কোন ধরনের নাটককে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করা হয়?
উত্তর : ট্র্র্যাজেডি নাটককে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করা হয়।
২৭। বাংলা সাহিত্যের শাখাগুলোর মধ্যে বয়সে সর্বকনিষ্ঠ কোনটি?
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের শাখাগুলোর মধ্যে বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ছোটগল্প।
২৮। বাংলা ভাষার সার্থক ছোট গল্পকার কে?
উত্তর :বাংলা ভাষার সার্থক ছোট গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
২৯। কোন সাহিত্য থেকে ছোটগল্পের অনুপ্রেরণা এসেছে?
উত্তর : পাশ্চাত্য সাহিত্য থেকে ছোটগল্পের অনুপ্রেরণা এসেছে।
৩০। এইচহি ওয়েলসের মতে ছোটগল্পের আয়তন কত মিনিটের ভেতরে পড়ে শেষ করার মতো হওয়া উচিত?
উত্তর : এইচহি ওয়েলসের মতে ছোটগল্পের আয়তন ১০-৫০ মিনিটের ভেতরে পড়ে শেষ করার মতো হওয়া উচিত।
৩১। পাঠকের সমাজে সাহিত্যের কোন শাখাটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে?
উত্তর : পাঠকের সমাজে সাহিত্যের উপন্যাস শাখাটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
৩২। উপন্যাসের প্রধান উপজীব্য কী?
উত্তর : উপন্যাসের প্রধান উপজীব্য হলো পস্নট।
৩৩। বাংলা ভাষার প্রথম সার্থক ও কালজয়ী ঔপন্যাসিক কে?
উত্তর : বাংলা ভাষার প্রথম সার্থক ও কালজয়ী ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
৩৪। বাঙালি পাঠকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক কে?
উত্তর : বাঙালি পাঠকদের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
৩৫। তন্ময় প্রবন্ধ কাকে বলে?
উত্তর : বিষয়বস্তুর প্রাধান্য স্বীকার করে যে সব বস্তুনিষ্ঠু প্রবন্ধ লিখিত হয়, সেগুলোকে তন্ময় প্রবন্ধ বলে।
৩৬। মেধাশক্তি অপেক্ষা ব্যক্তিহৃদয় প্রাধান্য পায় কোন ধরনের প্রবন্ধে?
উত্তর : মেধাশক্তি অপেক্ষা ব্যক্তিহৃদয় প্রাধান্য পায় মন্ময় ধরনের প্রবন্ধে।
৩৭। বাংলা ভাষায় রচিত প্রবন্ধ সাহিত্যের প্রবহমানতা কবে থেকে শুরু হয়?
উত্তর : বাংলা ভাষায় রচিত প্রবন্ধ সাহিত্যের প্রবহমানতা রাজা রামমোহন রায় থেকে শুরু হয়।
৩৮। রবীন্দ্রনাথের অধিকাংশ প্রবন্ধ কী ধরনের?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথের অধিকাংশ প্রবন্ধ মন্ময় প্রকৃতির।
৩৯। হায়াৎ মামুদ কত সংখ্যক গ্রন্থের রচয়িতা?
উত্তর : হায়াৎ মামুদ প্রায় অর্ধ-শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা।
৪০। হায়াৎ মামুদ বর্তমানে কোথাকার বাসিন্দা?
উত্তর : হায়াৎ মামুদ বর্তমানে ঢাকার গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা।
অনুধাবনস্তরের প্রশ্নোত্তর:
\হ১। 'যা নেই ভারতে তা নেই ভারতে'- কথাটি কেন বলা হয়?
উত্তর: 'যা নেই ভারতে তা নেই ভারতে'- কথাটির মাধ্যমে মহাভারত রচনার আকার ও বিষয়গত ব্যাপ্তির দিকনির্দেশ করা হয়েছে। 'মহাভারত' হলো ভারত উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন দুটি কাহিনীর একটি। এর আয়তন বিশাল। কাহিনীর ব্যাপ্তি ও অনেক বেশি। এ কারণেই বলা হয়ে থাকে- 'যা নেই মহাভারতে, তা নেই ভারতে'। যার অর্থ মহাভারত গ্রন্থে যা নেই, তা ভারতবর্ষেও নেই অর্থাৎ ভারতবর্ষেও ঘটেনি বা ঘটতে পারে না।
২। রামায়ণকে মহাকাব্য বলা যায় কেন?
উত্তর : বিষয়বস্তু ও আঙ্গিক বিবেচনায় রামায়ণকে একটি মহাকাব্য বলা যায়। মহাকাব্যের বৈশিষ্ট্য হলো এটি আকারে বিশাল হতে হবে। রচিত হবে পদ্যে। আর এর উপজীব্য হবে যুদ্ধ বিগ্রহের কোনো কাহিনী। ভারত উপমহাদেশের প্রাচীনতম দুটি কাহিনীর একটি হলো রামায়ণ। উপরে উলিস্নখিত সব বৈশিষ্ট্যই এতে বিদ্যমান। এ কারণেই রামায়ণকে মহাকাব্য বলা হয়।
৩। নাটককে দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য বলা হয় কেন?
উত্তর : নাটককে দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য বলা হয় কারণ নাটক একই সাথে দেখা ও শোনা যায়। বিশ্বসাহিত্যে নাটকই সর্বাপেক্ষা প্রাচীন। নাটকের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে এর দর্শক সমাজ। নাটক যদি দর্শকের সামনে উপস্থাপিত না হয় তবে এর উদ্দেশ্য সার্থকতা পায় না। সেকালে নাটক পঠিত হতো না, অভিনীত হতো। সংস্কৃত আলঙ্কারিকরা নাটককে তাই দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য বলে অভিহিত করেছেন।
৪। নাটকের লক্ষ্য সর্বকালেই দর্শক সমাজ কেন?
উত্তর : সাহিত্যের সব শাখাগুলোর মধ্যে একমাত্র নাটকের মাধ্যমে সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। তাই নাটকের লক্ষ্য সর্বকালেই দর্শক সমাজ। সংস্কৃত আলঙ্করিকদের মতে, কাব্য দুই ধরনের দৃশ্যকাব্য ও শ্রব্যকাব্য। তারা নাট্যসাহিত্যকে ও কাব্যসাহিত্যের মধ্যেই গণ্য করেছেন। নাটক প্রধানত দৃশ্যকাব্য। তাই নাটকের অভিনয় লোকজনকে দর্শন করানো না গেলে নাটক রচনার মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়। তাছাড়া নাটকই সাহিত্যের একমাত্র শাখা যেটি সমাজ ও পাঠকগোষ্ঠীকে সরাসরি প্রভাবিত করতে চায় ও সক্ষমও হয়। এসব কারণেই নাটকের লক্ষ্য সব সময়ই দর্শক সমাজ।
৫। কমেডি নাটক কীভাবে আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তোলে?
উত্তর : কমেডি নাটক মানবসুলভ ত্রম্নটি-বিচু্যতি ও নির্বুদ্ধিতার পরিণাম প্রদর্শন করে অশোভন দুর্বলতার হাত থেকে মুক্তি দিয়ে আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তোলে। কমেডি নাটকে মানবচরিত্রের নানান অসঙ্গতিকে হাস্যরসের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এই অসঙ্গতি ইচ্ছার সঙ্গে বাস্তব অবস্থার, আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রাপ্তিযোগের, উদ্দেশ্যের সঙ্গে উপায়ের, কথার সঙ্গে কাজের প্রভৃতি। ফলে কমেডি নাটক আমাদের এ সব ত্রম্নটি-বিচু্যতি সম্পর্কে অবগত করে। এ সব বিষয়ে আমরা সচেতন হয়ে উঠি। ভুল-ত্রম্নটি শুধরে সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে উঠি।
৬। 'শেষ হয়ে হইল না শেষ'- ছোটগল্পের ক্ষেত্রে এ কথাটি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : ছোটগল্প পাঠ শেষে পাঠক হৃদয়ে অতৃপ্তিবোধ জমানোর কারণে প্রশ্নোক্ত কথাটি ছোটগল্পে গুরুত্বপূর্ণ। ছোটগল্পের আঙ্গিক অত্যন্ত ক্ষুদ্র। এটি কখনোই কাহিনীর ভেতর দিয়ে কোনো ঘটনার শুরু বা শেষ বলে দেয় না।
এর ভেতরে একটি কাহিনীর বর্ণনা থাকে। তবে তা সম্পূর্ণটা নয় বরং কাহিনীর ভিতর থেকেই বেছে নেওয়া একটি ভগ্নাংশ মাত্র। তাই ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্য এমন হওয়া উচিত যেন পড়া শেষেও মনে হবে যেন শেষ হলো না।
পাঠকের মনে এটি এক ধরনের অতৃপ্তিবোধের জন্ম দেবে।
৭। 'এই শিল্পদৃষ্টি যাহার নাই তার পক্ষে ছোটগল্প লেখা লাঞ্ছনা বই কিছুই নহে।'- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর : ছোটগল্প লেখার ক্ষেত্রে লেখককে সূক্ষ্ণ পরিমিতিবোধের অধিকারী হতে হয়। এ বিষয়টিই বোঝানো হয়েছে উক্তিটির মাধ্যমে।
বিশিষ্ট সাহিত্য গবেষক শ্রীশচন্দ্র দাশের মতে, ছোটগল্পের আকার খুব ছোট বলে এতে জীবনের পূর্ণাবয়ব আলোচনা করা যায় না। জীবনের একটি খন্ডাংশ ছোটগল্পে রস-নিবিড় করে ফুটিয়ে তুলতে হয়। অত্যন্ত ছোট পরিসরের কাহিনীতে অনেক বেশি নাটকীয়তার সঞ্চার করতে হয়। গল্পের শুরু ও শেষটা হতে হয় খুব চমকপ্রদ। এ কারণেই ছোটগল্পের শুরুটা কোথায় হওয়া উচিত এবং সমাপ্তি কোথায় টানা উচিত সে ব্যাপারে লেখকের তীক্ষ্ণ শিল্পবোধ থাকা আবশ্যক। তা না হালে গল্পটি সার্থকতা লাভ করবে না।
৮। ছোটগল্পে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ উপস্থাপন সম্ভব নয় কেন?
উত্তর : ছোটগল্পের পরিধি অত্যন্ত ক্ষুদ্র হওয়ার কারণে এতে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ উপস্থাপন সম্ভব নয়। ছোটগল্পের পরিধি ছোট। এতে কেবল একটি কাহিনী ভতর থেকে বেছে নেওয়া অংশ থাকে। তাই ছোটগল্পের কাহিনীর ভিতরে ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলে দেওয়া হয় না। ছোটগল্পে জীবনের খন্ডাংশকে রসনিবিড় করে ফুটিয়ে তোলা হয়। আর এই খন্ডাংশ বর্ণনার কারণে ছোটগল্পের আয়তন থাকে কম। এই কম পরিধিতে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরা সম্ভব হয় না।
৯। সংবাদপত্রের সকল গদ্যকেই প্রবন্ধ বলা যায় না কেন?
উত্তর : সংবাদপত্রের সব গদ্যে সৃজনশীলতা থাকে না বলে সব গদ্যকেই প্রবন্ধ বলা যায় না। প্রবন্ধ বলতে আমরা বুঝি গদ্যে লিখিত এমন রচনা যার উদ্দেশ্য পাঠকের জ্ঞানতৃষ্ণাকে পরিতৃপ্ত করা। এই লেখায় তথ্যের প্রাধান্য থাকে। সে বিবেচনায় সংবাদপত্রের গদ্যে লিখিত যাবতীয় খবরা-খবরকেই প্রবন্ধ বলা উচিত। কিন্তু সেটি সম্ভব নয়। কেননা প্রবন্ধে সৃজনশীলতার পরিচয় ফুটে ওঠা বাঞ্ছণীয়। সংবাদপত্রে প্রকাশিত সব গদ্যেই
তা থাকে না। তাই সৃজনশীলতাহীন লেখাগুলো নিছক খবর হিসেবেই বিবেচিত হয়।