বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা প্রথমপত্র

আতাউর রহমান সায়েম সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ য়
  ১৯ মে ২০২২, ০০:০০

আজ তোমাদের জন্য

বঙ্গবাণী নিয়ে

আলোচনা করা হলো

অনুধাবন স্তর

৩. 'আরবি-ফারসি-হিন্দে নাই দুই মত'- কথাগুলো ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : 'বঙ্গবাণী' কবিতায় কবি মাতৃভাষার প্রতি গভীর অনুরাগ ব্যক্ত করেছেন। আরবি-ফারসি ভাষার প্রতিও তার কোনো রাগ-বিদ্বেষ নেই। আরবি-ফারসি ভাষায় আলস্নাহ ও মহানবীর গুণগান বর্ণনা করা হয়েছে। তাই এসব ভাষার প্রতি সবার মতো কবিও পরম শ্রদ্ধাশীল। মানুষ মাত্রেই নিজ ভাষায় স্রষ্টাকে ডাকে আর স্রষ্টাও সব মানুষের ভাষা বুঝতে পারেন।

৪. বাংলা ভাষার অবজ্ঞাকারীদের কবির রাগ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : বাংলা ভাষাকে যারা হিংসা করে তাদের জন্ম সম্পর্কে কবির সন্দিহান। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা তথা স্বদেশি ভাষা। এ দেশে জন্মগ্রহণ করা মানুষ তার দেশ-ভাষা সমাজ-সংস্কৃতির প্রতি অনুরক্ত হবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যারা স্বদেশ, স্বদেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকে হিংসা করে তারা আসলেই এ দেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছে কিনা সে বিষয়ে কবি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

৫. 'বঙ্গবাণী' কবিতায় কাদের প্রতি কবির ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর : স্বদেশ ও স্বভাষাকে যারা অবজ্ঞা করত তাদের প্রতি কবির ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। এ দেশে সাম্প্রদায়িক, গোঁড়া এবং ফতোয়াবাজ বহু লোক আছে যারা নিজের ভাষাকে অবজ্ঞা করে। তারা বাংলা ভাষাকে হিন্দুর ভাষা বলে অপপ্রচার চালায়, কবি তাদের ঘৃণা করেন। এ সব ব্যক্তির স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি শ্রদ্ধা নেই। কবি এ সব হীনম্মন্য লোকদের বিদেশে চলে যেতে বলেছেন। দেশপ্রেমিক কবি তাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।

৬. 'হিন্দুর অক্ষর' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর : 'হিন্দুর অক্ষর' বলতে বাংলা ভাষাকে বোঝোনো হয়েছে।

এক সময় 'হিন্দুর অক্ষর' বলে মূলত বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করা হতো। তখনকার দিনে একশ্রেণির রক্ষণশীল মুসলমান মাতৃভাষা বাংলার পরিবর্তে আরবি-ফারসি প্রভৃতি ভাষার প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করে। মাতৃভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও তারা এ ভাষাকে হিন্দুয়ানি ভাষা বলে উপেক্ষা করত। তারা যুক্তি দেখাত, এ দেশের প্রাচীন অধিবাসী হচ্ছে হিন্দু এবং তাদের ভাষা হচ্ছে বাংলা। তাই মুসলামানদের পক্ষে এ ভাষাকে ভালোবাসা সম্ভব নয়। আর এ কারণে তাদের আরবি-ফারসি ভাষাকেই লালন করতে হবে। তাদের এ যুক্তি ছিল সম্পূর্ণ মনগড়া ও ভিত্তিহীন।

৭. 'সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি'- বুঝিয়ে লেখো।

উত্তর : বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে যারা বাংলা ভাষাকে হিংসা করে, তাদের জন্মপরিচয় নিয়ে কবি সন্দিহান।

সতেরো শতকে একশ্রেণির লোক এ দেশ, নিজের ভাষা, নিজের সংস্কৃতি এমনকি নিজের আসল পরিচয় সম্পর্কে বিভ্রান্ত ছিল। তারা বাংলাকে 'হিন্দুর অক্ষর' বিবেচনা করে ঘৃণা করত এবং আরবি-ফারসি ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করত। শেকড়হীন, পরগাছা স্বভাবের এ সব মানুষ সম্পর্কে কবি প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন। মূলত বাংলা ভাষাবিদ্বেষীদের কবি কটাক্ষ করে তাদের বোধোদয় ঘটাতে চেয়েছেন।

৮. 'যেই দেশে যেই বাক্য কহে নরগণ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর : 'যেই দেশে যেই বাক্য কহে নরগণ' বলতে স্রষ্টা সব ভাষা বুঝতে পারেন, সেই বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।

কবি আবদুল হাকিম 'বঙ্গবাণী' কবিতায় মাতৃভাষা বাংলার কথা বলেছেন। তিনি নিজের দেশি ভাষার প্রতি মমতা ও ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন। কবিতাটিতে কবি বলেছেন, প্রত্যেক দেশের মানুষের নিজস্ব মাতৃভাষা রয়েছে। মানুষ যে যে ভাষায় কথা বলে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করে, স্র্রষ্টা মানুষের সে সব ভাষা বুঝতে পারেন। প্রশ্নোক্ত কথাটির মধ্যদিয়ে স্রষ্টার সব ভাষা বোঝার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে