এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি বাংলা দ্বিতীয়পত্র

কী বিপদÑ

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

শাদমান শাহিদ, প্রভাষক আওলিয়ানগর এমএ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয়পত্র থেকে ব্যাকরণ নিয়ে আলোচনা করা হলো প্রশ্ন: আবেগ শব্দ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা কর। উত্তর: যেসব শব্দের সাহায্যে মনের নানা ভাব বা আবেগ প্রকাশ করা হয়, সেগুলোকে বলা হয় আবেগ শব্দ। এ ধরনের শব্দ বাক্যের অন্য শব্দের সঙ্গে সম্পকর্ না রেখে স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হয়। মানুষের বিচিত্র আবেগের প্রকাশ অনুসারে আবেগ শব্দকে আট ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো- সিদ্ধান্তসূচক আবেগ শব্দ: যে শব্দের সাহায্যে অনুমোদন, সম্মতি, সমথর্ন ইত্যাদি ভাব প্রকাশ পায়, তাকে সিদ্ধান্তসূচক আবেগ শব্দ বলে। যেমন: বেশ, তুমি যা বলছ, তা-ই হবে। প্রশংসাসূচক আবেগ শব্দ: যেসব শব্দ প্রশংসার মনোভাব প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে প্রশংসাবাচক আবেগ শব্দ বলে। যেমন: বাঃ! চমৎকার একটা গল্প লিখেছ! বিরক্তিসূচক আবেগ শব্দ: যেসব শব্দ ঘৃণা, অবজ্ঞা, বিরক্তি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে বিরক্তিসূচক শব্দ বলে। যেমন: ছি! ছি! এটা তুমি কী বললে! ভয় ও যন্ত্রণাসূচক আবেগ শব্দ: যেসব শব্দ আতঙ্ক, যন্ত্রণা ও ভয় প্রকাশে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে ভয় ও যন্ত্রণাবাচক আবেগ শব্দ বলে। যেমন: আঃ! কী বিপদ। বিস্ময়সূচক আবেগ শব্দ: যেসব শব্দ বিস্মিত বা আশ্চযর্ হওয়ার ভাব প্রকাশ করে, সেগুলোকে বলা হয় বিস্ময়সূচক আবেগ শব্দ। যেমন: আরে! তুমি আবার কখন এলে! করুণাসূচক আবেগ : যেসব শব্দ করুণা, সহানুভূতি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশ করে, সেগুলোকে করুণাসূচক আবেগ শব্দ বলে। যেমন: হায়! হায়! এ অনাথ শিশুদের এখন কে দেখবে! সম্বোধনসূচক আবেগ শব্দ: যেসব শব্দ সম্বোধন বা আহŸান করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে সম্বোধনসূচক আবেগ শব্দ বলে। যেমন: হে বন্ধু, তোমাকে অভিনন্দন। আলঙ্কারিক আবেগ শব্দ: যেসব শব্দ বাক্যের অথের্র পরিবতর্ন না ঘটিয়ে কোমলতা, মাধুযর্ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য এবং সংশন, অনুরোধ, মিনতি ইত্যাদি মনোভাব প্রকাশের জন্য অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে আলঙ্কারিক আবেগ শব্দ বলে। যেমন: যাক গে যাক! ওসব ভেবে লাভ নেই। প্রশ্ন: অনুসগর্ কাকে বলে? অনুসগের্র বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োজনীয়তা লেখ। উত্তর: ‘অনু’ কথাটির অথর্ পরে বা পশ্চাতে, আর ‘সগর্’ মানে সৃষ্টি বা ব্যবহার। সুতরাং সাধারণভাবে অনুসগর্ বলতে বোঝায় যা পরে ব্যবহৃত হয়। উপসগর্ যেমন ধাতুর আগে বসে, অনুসগর্ তেমন পদের পরে বসে। যেসব অব্যয় বিশেষ্য বা সবর্নাম পদের পরে পৃথকভাবে বসে শব্দ বিভক্তির মতো তাদের কারক-সম্বন্ধ নিধার্রণ করে, তাদের অনুসগর্ বলা হয়। কেবল বিভক্তির মতো কারক-সম্বন্ধ নিদের্শ করলে তবেই তাদের অনুসগর্ বলে। অনুসগের্র বৈশিষ্ট্য: অনুসগের্র কতগুলো নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিচে বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হলো- ১. অনুসগর্ অব্যয় পদ। এগুলোর অথর্ আছে। ২. অনুসগর্ শব্দের পরে বসে ওই শব্দের সঙ্গে পরবতীর্ শব্দের সম্পকর্ সৃষ্টি করে। ৩. বিভক্তি দিয়ে যেমন কারক চেনা যায়, তেমনি অনুসগর্ দিয়েও কারক চেনা যায়। ৪. অব্যয়গুলোর নিজস্ব অথর্ থাকায় সেগুলো পৃথকভাবে ব্যবহৃত হলে অনুসগর্ হয় না। ৫. অনুসগের্র পূবর্ পদটি বিশেষ্য হলে সেটি বিভক্তিযুক্ত হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে। কিন্তু সবর্নাম হলে বিভক্তিযুক্ত হবেই। ৬. অনুসগর্ বিভক্তির মতো কাজ করে। ৭. কতগুলো অনুসগর্ শব্দ-বিভক্তির মতো ব্যবহৃত হয়ে কারক নিণের্য় সাহায্য করে। এগুলো হচ্ছে: হইতে, হতে, চেয়ে, দ্বারা, দিয়া, দিয়ে, কতৃর্ক ইত্যাদি। ৮. অনুসগের্র ব্যবহার কোনো কোনো সাধু ও চলিত ভাষারীতির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন রূপ হতে পারে। অনুসগের্র প্রয়োজনীয়তা : বাংলা ভাষায় অনুসগের্র প্রয়োজনীয়তা আছে। নিচে অনুসগের্র প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব আলোচনা করা হলো- ক. অনুসগর্গুলো বাংলা ভাষায় বিভক্তির কাজ করে। এ জন্য বাক্য গঠনে গুরুত্বপূণর্ ভূমিকা পালন করে। যেমন : ধনের চেয়ে মন বড়। খ. অনুসগর্গুলো বাক্য গঠনে সহায়তা করে। অনুসগর্ ছাড়া বাক্য গঠন সম্ভব হয় না। যেমন: দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে? গ. বাংলা ভাষায় অভাব, তুলনা ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করতে অনুসগের্র প্রয়োজন। যেমন: হাসেমের চেয়ে কাশেম লম্বা। ঘ. অনুসগর্ ছাড়া কারকের অথর্ প্রকাশ পায় না। যেমন: করণ কারকের দ্বারা, দিয়া, কতৃর্ক ইত্যাদি শব্দ, সম্প্রদান কারকে নিমিত্ত, হেতু ইত্যাদি, অপাদানে হইতে, হতে, থেকে, থাকতে ইত্যাদি। প্রশ্ন: অনুসগর্ ও উপসগের্র পাথর্ক্য লেখো। উত্তর: অনুসগর্ ও উপসগের্র মধ্যে যেসব পাথর্ক্য রয়েছে সেগুলো নিচে দেওয়া হলো।