এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি

বাংলা দ্বিতীয়পত্র

বিজয়

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

শাদমান শাহিদ, প্রভাষক আওলিয়ানগর এমএ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। য়
প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয়পত্র থেকে ব্যাকরণ নিয়ে আলোচনা করা হলো প্রশ্ন : বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা আছে কী? উত্তর: বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা : মানুষের ভাব প্রকাশের প্রধান ও সবাির্ধক গুরুত্বপূণর্ মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। একমাত্র ভাষাই তার মনের কথাকে সুন্দর ও সম্পূণর্ভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম। আর এ কাজে ভাষাকে সাহায্য করে তার শব্দসম্ভার। সে জন্য যে ভাষার শব্দভাÐার যত সমৃদ্ধ, সেই ভাষার প্রকাশক্ষমতাও তত বেশি। বাংলা ভাষার শব্দ গঠনের যেসব পদ্ধতি বা নিয়ম আছে, প্রত্যয় তার মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রত্যয় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি করে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। যেমন: ‘মিশ’্-এর সঙ্গে ‘উক’ প্রত্যয় যুক্ত করলে গঠিত হবে ‘মিশুক’- এই নতুন শব্দটি। মেঘ শব্দের সঙ্গে ‘লা’ প্রত্যয় যোগ করলে পাওয়া যাবে ‘মেঘলা’ শব্দটি। এমনিভাবে কৃত্ ও তদ্ধিত প্রত্যয় দ্বারা নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়ে বাংলা শব্দভাÐারকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। সুতরাং, বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূণর্। প্রশ্ন: উপসগর্ কাকে বলে? উপসগর্ কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণ দাও। উত্তর: উপসগের্র সংজ্ঞা: যেসব বণর্ বা বণের্র সমষ্টি ধাতু ও শব্দের আগে বসে সাধিত শব্দের অথের্র পরিবতর্ন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তাদের বলা হয় উপসগর্। যেমন: প্র, পরা, পরি, নির ইত্যাদি। উপসগের্র শ্রেণিবিভাগ: বাংলা ভাষায় উপসগর্ তিন প্রকার। যথা: ক) খঁাটি বাংলা উপসগর্ খ) সংস্কৃত উপসগর্ ও গ) বিদেশি উপসগর্। ক) খঁাটি বাংলা উপসগর্: খঁাটি বাংলা উপসগর্ মোট ২১টি। যথা: অ, অনা, অজ, অঘা, আ, আড়, আন, আর, ইতি, উন, কদ, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা। প্রয়োগ: অ- অবহেলা, অকাজ। কু- কুকথা, কুকাজ। খ) সংস্কৃত উপসগর্: সংস্কৃত উপসগর্ ২০টি। যথা: প্র, পরা, অপ, সম, নি, অব, অনু, নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অতি, অভি, অপি, উপ, আ। প্রয়োগ: প্র- প্রচার, প্রসার। উপ- উপদেশ, উপকার। গ) বিদেশি উপসগর্: বাংলা ভাষায় বহু বিদেশি উপসগর্ রয়েছে। যেমন: বে, বর, বদ, ফি, গর, নিম, দর, কাম ইত্যাদি। প্রয়োগ: বে- বেয়াদব, বেসামাল। বদ- বদলোক, বদনাম। প্রশ্ন : উপসগর্ কাকে বলে? উপসগের্র প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর। উত্তর : উপসগর্ : যেসব সুনিদির্ষ্ট বণর্ বা বণের্র সমষ্টি ধাতু ও শব্দের আগে বসে সাধিত শব্দের অথের্র পরিবতর্ন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তদের বলা হয় উপসগর্। যেমন : প্র, পরা, পরি, নির ইত্যাদি। উপসগের্র প্রয়োজনীয়তা: শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হয় : উপসগের্র মাধ্যমে যেহেতু নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়, ফলে ভাষার শব্দসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ভাষার শব্দভাÐার সমৃদ্ধ হয়। ব্যঞ্জনা বাড়ে : উপসগের্র ব্যবহারে শব্দের ভাব-ব্যঞ্জনা অনেক গুণ বেড়ে যায়। যেমন : ‘জয়’ বললে শব্দটির যতটা ভাব প্রকাশিত হয়, পক্ষান্তরে ‘বিজয়’ বললে শব্দটির আবেদন অনেকটাই বেড়ে যায়। প্রকাশক্ষমতা বাড়ে : উপসগের্র ব্যবহারে ভাষার প্রকাশক্ষমতা বেড়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্ভবত এ কারণেই উপসগের্র তুলনা করেছেন মাছের পাখনার সঙ্গে। কারণ, পাখনার সাহায্যে মাছ যেমন ডান-বঁায়ে বা সামনে-পেছনে চলার জন্য বিশেষ গতি লাভ করে, ঠিক তেমনি উপসগের্র মাধ্যমে শব্দ তার ব্যবহারিক ক্ষেত্রের বিস্তৃতি ঘটিয়ে থাকে। অথের্র সম্প্রসারণ ঘটে: নিদির্ষ্ট কোনো শব্দের আগে উপসগর্ যোগ করলে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট শব্দটির অথের্র সম্প্রসারণ ঘটে। ফলে শব্দটির প্রচলিত অথের্র আবেদনে যোগ হয় ভিন্ন মাত্রা। যেমন : ‘তাপ’ থেকে হয় ‘প্রতাপ’ কিংবা পরিতাপ ইত্যাদি। পরিভাষা সৃষ্টিতে : অনেক সময় উপসগের্র মাধ্যমে পরিভাষাও প্রণয়ন করা হয়। যেমন : ঈড়হফঁপঃড়ৎ- পরিবাহী, জবয়ঁরংরঃরড়হ- অধিগ্রহণ ইত্যাদি উপসগের্র উপযুক্ত গুণাবলি বিবেচনা করে অনেক বৈয়াকরণিক মনে করেন, ‘উপসগর্ কেবল প্রয়োজনীয় নয়, ভাষার পক্ষে অপরিহাযর্।’ প্রশ্ন: ‘উপসগের্র অথর্বাচকতা নেই, কিন্তু অথের্দ্যাতকতা আছে’Ñ আলোচনা কর। উত্তর : উক্তিটি বিশ্লেষণ : যেসব অব্যয় মূল শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে মিলে বা ধাতুকে অবলম্বন করে ওই ধাতুর নানা অথের্র সৃষ্টি করে, তাদের উপসগর্ বলা হয়। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত উপসগর্গুলোর কোনো অথর্বাচকতা নেই, শুধু মূল শব্দ বা ধাতুর আগে এরা ব্যবহৃত হলেই এদের অথের্দ্যাতকতা শক্তি দৃষ্ট হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘অনা’ একটি উপসগর্। এর নিজের কোনো অথর্ নেই। কিন্তু ‘আবাদ’ শব্দের আগে ‘অনা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে ‘অনাবাদ’, অথার্ৎ ‘আবাদ নেই যার’ অথের্ ব্যবহৃত হয়েছে। তেমনই এটা আচারের আগে ব্যবহৃত হয়ে অনাচার (আচার বহিভূর্ত অথের্) এবং সৃষ্টির আগে ব্যবহৃত হয়ে অনাসৃষ্টি (অদ্ভুত অথের্)। এরূপে ভিন্ন ভিন্ন অথের্দ্যাতকতা সৃষ্টি করেছে। সুতরাং, দেখা যাচ্ছে যে উপসগর্গুলোর নিজস্ব কোনো বিশেষ অথর্বাচকতা নেই, কিন্তু অন্য শব্দের আগে যুক্ত হলেই এদের অথের্দ্যাতকতা বা সংশ্লিষ্ট শব্দের নতুন অথর্ সৃজনের ক্ষমতা সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন : নিচের বাক্যগুলোকে নিদের্শ অনুসারে রূপান্তর কর। প্রশ্ন-১ ১. ধনীরা প্রায়ই কৃপণ হয়। (জটিল) ২. অনেকের জীবনে প্রথমে দুঃখ আসে, পরে সুখ আসে। (সরল) ৩. বিদ্বান হলেও তার অহংকার নেই। (যৌগিক) ৪. মিথ্যাবাদীকে সবাই অপছন্দ করে। (নেতিবাচক) ৫. এজন্যই তোমাকে সবাই প্রিয়ংবদা না বলে পারে না। (অস্তিবাচক) ৬. বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী, তা জানতে চাই। (প্রশ্নবোধক) ৭. সত্য কথা না বলে বিপদে পড়েছি। (জটিল) ৮. যখন বিপদ আসে, তখন দুঃখও আসে। (যৌগিক) উত্তর : ১. যারা ধনী, তারা প্রায়ই কৃপণ হয়। ২. অনেকের জীবনে দুঃখের পরে সুখ আসে। ৩. তিনি বিদ্বান বটে, কিন্তু নিরহংকারী। ৪. মিথ্যাবাদীকে কেউ পছন্দ করে না। ৫. এজন্যই তোমাকে সবাই প্রিয়ংবদা বলে। ৬. বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী? ৭. সত্য কথা বলিনি, তাই বিপদে পড়েছি। ৮. বিপদ ও দুঃখ একসঙ্গেই আসে।