বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অষ্টম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র

আতাউর রহমান সায়েম সহকারী শিক্ষক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ য়
  ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
ভাব ও কাজ

৪। 'ভাবকে জাগাইয়া তুলিবেন মানুষের কল্যাণের জন্য।'- কথাটির অর্থ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : 'ভাবকে জাগাইয়া তুলিবেন মানুষের কল্যাণের জন্য' কথাটির মধ্যদিয়ে মানবকল্যাণে মানুষকে জাগিয়ে তোলার দিকটি বোঝানো হয়েছে।

'ভাব' মানুষের জাগরণের উপকরণ। মানুষের মনকে জাগিয়ে তুলতে ভাবের প্রয়োজন। আর সেই মানুষকে তার নিজের, পরিবারের, রাষ্ট্রের ও জাতির জন্য যথাযথভাবে গড়ে তুলতে হলে তাকে কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হয়। শুধু ভাব দিয়ে কখনো কারও উন্নতি হয় না। মানুষের পরাধীনতার গস্নানি থেকে মুক্তির মন্ত্রে দীক্ষিত করতে হয়, তাদের ভাব দিয়ে জাগিয়ে কর্ম দিয়ে এগিয়ে নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি আত্মস্বার্থে সাধারণ মানুষকে জাগাতে চায় তাহলে তারা হয়তো জাগে, কিন্তু বৃহতের কল্যাণ সাধিত হবে না। এ কারণে মানুষকে জাগাতে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে সমষ্টির স্বার্থের জন্য প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে এ বিষয়টিই প্রকাশ করা হয়েছে।

৫। 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে লেখক তরুণদের দেশের প্রাণশক্তি বলেছেন কেন?

উত্তর : যুবকরা আমাদের আশা-ভরসা স্থল বলে তাদের লেখক এ দেশের প্রাণশক্তি বলেছেন।

যুগে যুগে তরুণরাই বিভিন্ন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ত্যাগ স্বীকার করেছে, অধিকার আদায় করেছে। এ কারণে একটি দেশে মুক্তি, উন্নতি ও জাতির কল্যাণ সাধনে তরুণরাই প্রধান ভরসা স্থল। তাদের ঐক্যবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টার ফলেই দেশের অগ্রগতি সাধিত হয়। তারাই অধিকার সচেতন করে তোলে মানুষকে স্বাধীনতার জন্য, শোষণ-শাসন থেকে মুক্তির জন্য। তারাই সত্যিকার দেশকর্মী। লেখক তাই তরুণদেরই যথাযথ কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নতি সাধনের কথা বলেছেন। এ কারণেই তিনি তাদের দেশের প্রাণশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

৬। 'সামনের দেওয়ালকে ভাঙিতে হইলে একেবারে তাহার ভিত্তিমূলে শাবল মারিতে হইবে।'- কথাটির অর্থ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : 'সামনের দেওয়ালকে ভাঙিতে হইলে একেবারে তাহার ভিত্তিমূলে শাবল মারিতে হইবে' বলতে মানুষের মুক্তি ও উন্নতির পথের অন্তরায়গুলো দূর করতে হলে অন্যায়ের ভিত্তিমূলে প্রতিবাদের শাবল মারার নির্দেশ করা বোঝানো হয়েছে।

সাধারণভাবে আমরা দেখি, ভালো কাজের মধ্যে যেমন সমর্থন পাওয়া যায়, তেমনি বিপরীত প্রতিক্রিয়া ও কার্যক্রমও লক্ষ্য করা যায়। সমাজের এক শ্রেণির মানুষ চেষ্টা করে যাতে কাজটা না করা যায়। আমরা লোকভয়, লোকলজ্জা এবং নানান সমস্যা সংকট বিবেচনা করে পিছপা হই। প্রকৃতপক্ষে তা করা উচিত নয়। আমাদের উচিত সর্বশক্তি নিয়ে তাদের হীনশক্তির মূলে আঘাত করে প্রতিবাদ করে নিজেদের অধিকার, স্বাধীনতা এবং যাবতীয় প্রাপ্য বুঝে নেওয়া। তাতেই আমাদের সার্বিক কল্যাণ সাধিত হতে পারে।

৭। কীসের ওপর ভাবের সার্থকতা নির্ভর করে? বুঝিয়ে বলো।

উত্তর : ভাবকে কার্যের দাসরূপে নিয়োগের ওপর ভাবের সার্থকতা নির্ভর করে।

'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে লেখক ভাব ও কাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে মানুষের কল্যাণ সাধন করার জন্য বলেছেন। মানুষের মনকে জাগিয়ে তুলতে হলে ভাবের প্রয়োজন। মানুষকে তার নিজের, পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের ও জাতির জন্য যথাযথভাবে গড়ে তুলতে হলে তাকে কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হয়। কেবল ভাব দিয়ে কখনো কারও কখনো উন্নতি হয় না। এ ক্ষেত্রে যদি ভাবকে কর্মের দাস হিসেবে নিয়োজিত করা না যায়, তবে উদ্দিষ্ট লক্ষ্য ও উন্নতি সম্ভব নয়। কারণ কাজের মাধ্যমেই ভাব রূপায়িত হয় এবং সার্থকতা লাভ করে।

পড়ে পাওয়া

১। 'কালবৈশাখীর ঝড় মানেই আম কুড়ানো'- কথাটির অর্থ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : 'কালবৈশাখীর ঝড় মানেই আম কুড়ানো'- বলতে আম কুড়ানোর প্রকৃত সময়কে বোঝানো হয়েছে।

সাধারণত বৈশাখ মাসে আম পাকা শুরু হয়। পাকা আম গাছে ঝুলতে থাকে। আর এই সময়টাতেই কালবৈশাখী ঝড় হয়। ঝড়ের ঝাঁপটায় পাকা আম টুপটাপ ঝরতে থাকে। গ্রামের দুরন্ত ছেলেমেয়েরা ঝড়ের আভাস পেয়ে উপেক্ষা করে সবাই আম কুড়াতে ছুটে যায়। আলোচ্য উক্তিটি দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে।

২। বিধু লোকটির কাছে রসিদ চাইল কেন?

উত্তর : বিধুর লোকটির কাছে রসিদ চাওয়ার কারণ হলো স্বীকারোক্তি সংরক্ষণ করা। বিশেষ কিছু হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রমাণপত্র সংগ্রহ করা বুদ্ধিমান কাজ।

লেখক বাক্সটি কুড়িয়ে পাওয়ার অনেক দিন পরে বাক্সের মালিকের সন্ধান পেল এবং বিধুকে ডেকে আনল। লোকটির মৌখিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা বুঝল যে, সে-ই বাক্সের প্রকৃত মালিক। তাই তাকে বাক্স হস্তান্তর করার সময় 'বাক্স বুঝে পেয়েছি' এরূপ স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্যই বিধু লোকটির কাছে রসিদ চাইল।

৩। 'অদেষ্ট, একেই বলে বাবু অদেষ্ট'- জনৈক কাপালির এ কথা বলার কারণ কী?

উত্তর : নিজের দুর্ভাগ্যের কথা স্মরণ করে জনৈক কাপালি প্রশ্নোত্তর কথাটি বলেছে।

কাপালি লোকটি এবং তার পরিবার বন্যায় নিরাশ্রয় হয়ে নির্বিষখোলার গোয়ালদের চালাঘরে আশ্রয় নিয়েছে। এ বর্ষায় তাদের না আছে ভাত, না আছে কাপড়। আর এদিকে পটোল বিক্রি করা টাকা আর মেয়ের বিয়ের জন্য গহনা হাট থেকে ফেরার পথে সে হারিয়ে ফেলেছিল। সেই টাকাগুলো থাকলে কাজ বিপদের দিনে তার খুব কাজে লাগত- এ কথা স্মরণ করে সে আলোচ্য কথাটি বলেছে।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে