সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্র

শিল্পায়ন কী?

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

রোজিনা আক্তার, শিক্ষক ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিরাজগঞ্জ য়
প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্র থেকে সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেয়া হলো অধ্যায়-৮ সামাদ মিয়া গ্রামের কৃষক। তিনি ভালো ফসল ফলানোর জন্য আগে গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কৃষি অফিসে গিয়ে নানা পরামশর্ নিতেন। কিন্তু এখন তিনি অফিসে না গিয়েও মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই পরামশর্ নিতে পারেন। একইভাবে তিনি ফসল রোপণ ও কাটার ক্ষেত্রেও আধুনিক উপাদান ব্যবহার করছেন। এতে তার উৎপাদন বেড়ে আথির্ক উন্নতি সাধিত হচ্ছে। প্রশ্ন: গ. উদ্দীপকটি পড়ে বাংলাদেশের সামাজিক পরিবতের্নর ক্ষেত্রে কোন উপাদানের প্রভাবকে তুমি চিহ্নিত করবে? প্রশ্ন: ঘ. বাংলাদেশের সামাজিক পরিবতের্নর ক্ষেত্রে অন্যান্য উপাদানের চেয়ে নিদেির্শত উপাদানটির প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। তুমি কি এর সঙ্গে একমত? উত্তর-গ: উদ্দীপকটি পড়ে বাংলাদেশের সামাজিক পরিবতের্নর ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাবকে চিহ্নিত করা যায়। তথ্য ও প্রযুক্তি বলতে সাধারণত তথ্য সংরক্ষণ করা ও একে ব্যবহার করার কৌশলকে বোঝায়। প্রযুক্তি হচ্ছে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক ও প্রায়োগিক দিক। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, ব্যবহার-সম্পকির্ত তথ্য, প্রয়োগবিধি প্রভৃতি সম্পকির্ত তথ্য পাওয়ার নামই তথ্যপ্রযুক্তি। সব সমাজে আজ তথ্য ও প্রযুক্তি নানা ধরনের পরিবতর্ন সূচিত করছে। এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সামাজিক পরিবতের্ন এটি গুরুত্বপূণর্ ভ‚মিকা পালন করছে। এর প্রভাবে কৃষি উৎপাদনে এসেছে ব্যাপক পরিবতর্ন। এর ফলে কৃষকরা যেমন চাষাবাদ-সম্পকির্ত সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন, তেমনি উন্নত জাতের বীজ, সার ও কলাকৌশল ব্যবহার করছেন। ফলে বেড়েছে উৎপাদন। উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সামাদ মিয়া চাষাবাদ-সম্পকির্ত নানা তথ্য পাচ্ছেন। এটি সম্ভব হয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে। তাই উদ্দীপকে বাংলাদেশের সামাজিক পরিবতের্নর ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুুক্তির প্রভাব স্পষ্ট। উত্তর-ঘ: বাংলাদেশের সামাজিক পরিবতের্ন নগরায়ণ, শিল্পায়ন, বিশ্বায়ন প্রভৃতির চেয়ে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাব ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন প্রযুক্তিনিভর্র হচ্ছে। দেশের রাজনীতি, অথর্নীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সাহিত্যসহ সব ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বায়নের এই যুগে কোনো দেশই আজ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন কিংবা একাকী নয়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্ব উন্নত বিশ্বকে অনুসরণ ও অনুকরণ করছে। উন্নত দেশের সমাজব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি অভাবনীয় পরিবতর্ন সূচিত করেছে। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশের অনুকরণ করছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো। এর ফলে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাবও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের দিকে তাকালেই আমরা তা প্রত্যক্ষ করি। বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সব ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির নিভর্রতা বাড়ছে। গড়ে উঠছে ডিজিটাল ক্লাসরুম। প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে অনলাইন ব্যাংকিং। সমাজজীবনে বৃদ্ধি পাচ্ছে মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, এফএম রেডিও প্রভৃতির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশের সামাজিক পরিবতের্নর ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাব দ্রæত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবতর্ন সূচিত হচ্ছে। শিক্ষার হার যেমন বেড়েছে, তেমনি এসেছে কাক্সিক্ষত সফলতা। কমেছে সময় ও অথের্র অপচয়। কমেছে নানা জটিলতা। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও এসেছে ইতিবাচক পরিবতর্ন। বেড়েছে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সেবার মান। ব্যবসা-বাণিজ্যে এসেছে গতিশীলতা। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ ঘরে বসে হাজার হাজার মাইল দূরের মানুষের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছে। এর প্রভাবে কৃষি উৎপাদনে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবতর্ন। তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাবে সমাজ আরও বেশি গতিশীল হচ্ছে। আগামী দিনে এ প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।