এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি (বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়)

বিনিয়োগ কাকে বলে?

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
প্রিয় পরীক্ষার্থী, আজ তোমাদের জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় থেকে সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৩. উদ্দীপকটি পড়ে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : 'ক' ব্যক্তি বিশ্বের এমন একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, যে প্রতিষ্ঠান বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করে প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা গড়ে তোলে। সব ধর্ম-বর্ণের ও লোকের স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা গড়ে তোলে। প্রশ্ন: ক. হেগ শহর কোন দেশে অবস্থিত? প্রশ্ন: খ. জাতিসংঘ কোন প্রেক্ষাপটে সৃষ্টি হয়? প্রশ্ন: গ. 'ক' যে ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে চান সে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা কর। প্রশ্ন: ঘ. তুমি কি মনে কর, ওই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি উদ্দেশ্যই জনকল্যাণের জন্য গৃহীত? তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। উত্তর: ক. হেগ শহর নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত। উত্তর: খ. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ব্যাপকতা ও ধ্বংসলীলা মানুষকে যুদ্ধের প্রতি ভীতসন্ত্রস্ত ও শান্তির জন্য আগ্রহী করে তোলে। কাজেই গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান 'লীগ অব নেসন্স'। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানটি সাংগঠনিক দুর্বলতা ও অন্যান্য কারণে বিশ্বশান্তি বিধানে ব্যর্থ হয়। ১৯৩৯ সালে আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা পৃথিবীকে গ্রাস করে। মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সবচেয়ে কলঙ্কিত ও বিভীষিকাময় ছিল। এ দুটি যুদ্ধে মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে, যার ফলে জাতিসংঘের জন্ম হয়। উত্তর: গ. 'ক' যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে চান, সে প্রতিষ্ঠানটি হলো জাতিসংঘ। কারণ জাতিসংঘ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করে, প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা গড়ে তোলে। জাতিসংঘ সনদে সুস্পষ্টভাবে বিশ্বশান্তি ও সহযোগিতা বিধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের নিম্নোক্ত উদ্দেশ্য লিপিবদ্ধ আছে। ১. শান্তিভঙ্গের হুমকি, আক্রমণাত্মক প্রবণতা ও কার্যকলাপ দূর করে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ২. সব মানুষের সমান অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতির মধ্যে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব জোরদার করা। ৩. অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সব জাতির মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলা। ৪. জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা। ৫. আন্তর্জাতিক আইনের সাহায্যে আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করা। ৬. প্রতিটি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের স্বীকৃতি ও তা সমুন্নত রাখা। ৭. উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের কার্যধারা অনুসরণ করা। উত্তর: ঘ. হঁ্যা। আমি মনে করি, এ প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি উদ্দেশ্যই জনকল্যাণের জন্য গৃহীত। উদ্দীপকে যে প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্যগুলো উলেস্নখ করা হয়েছে তার সঙ্গে জাতিসংঘের উদ্দেশ্যগুলোর মিল লক্ষ্য করা যায়। উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সব জাতির মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলে। আন্তর্জাতিক আইনের সাহায্যে আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করে। এখানে জাতিসংঘের উদ্দেশ্যগুলোর একটি প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি, 'ক' যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, সে প্রতিষ্ঠানটি হলো জাতিসংঘ। জাতিসংঘের প্রতিটি উদ্দেশ্যই জনকল্যাণের জন্য গৃহীত। জাতিসংঘের সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য হলো- শান্তিভঙ্গের হুমকি, আক্রমণাত্মক প্রবণতা ও কার্যকলাপ দূর করে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যা জনগণের জন্য একান্ত কাম্য। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আইনের সাহায্যে আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করা। প্রতিটি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের স্বীকৃতি ও তা সমুন্নত রাখা। এভাবে বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয়, 'ক' যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে চায়, সে প্রতিষ্ঠানের সব উদ্দেশ্যই জনকল্যাণমূলক। ৪. উদ্দীপকটি পড়ে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : মি. ক 'খ' নামের একটি গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি তার গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের ন্যায্য বেতনভাতার চেয়ে কম বেতনভাতা প্রদান করেন। তিনি তার গার্মেন্টের উৎপাদিত দ্রব্যের উৎপাদন ব্যয় কমাতে কর্মচারীদের বেতনভাতা কম দেন। ক্রমেই মি. 'ক' ধনী হচ্ছেন আর তার কর্মচারীরা হচ্ছে দরিদ্র। প্রশ্ন: ক. বিনিয়োগ কাকে বলে? প্রশ্ন: খ. জাতীয় সম্পদ বলতে কী বোঝো? প্রশ্ন: গ. উদ্দীপকে যে অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তার ব্যাখ্যা দাও। প্রশ্ন: ঘ. উদ্দীপকের বৈশিষ্ট্য ছাড়াও ওই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বেশকিছু বৈশিষ্ট্য আছে-পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। উত্তর: ক. উৎপাদন কাজে নিয়োজিত অর্থ হচ্ছে বিনিয়োগ। বিদ্যমান মূলধন সামগ্রীর সঙ্গে নতুন মূলধন (অর্থ বা যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জাম, উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল) যুক্ত হওয়াকে বলে বিনিয়োগ। উত্তর: খ. রাষ্ট্রের সব নাগরিকের ব্যক্তিগত সম্পদ ও সমাজের সমষ্টিগত সম্পদকে একত্রে জাতীয় সম্পদ বলে। ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গাজমি, বাড়িঘর, কল-কারখানা, অর্থসম্পদ, গাড়ি, দ্রব্যসামগ্রী ইত্যাদি ব্যক্তিগত সম্পদ। রাস্তাঘাট, রেলপথ, বাঁধ, পার্ক, সরকারি হাসপাতাল, স্কুল-এগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদ। বনাঞ্চল, খনিজসম্পদ, নদ-নদী ইত্যাদি সমষ্টিগত সম্পদ। এগুলোকে একত্রে জাতীয় সম্পদ বলা হয়। তাছাড়া জাতির কোনো গুণবাচক বৈশিষ্ট্য যেমন কর্মদক্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি, প্রযুক্তিজ্ঞান ইত্যাদিও জাতীয় সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। উত্তর: গ. উদ্দীপকের কোম্পানির মালিক কর্মচারীদের ন্যায্য বেতনভাতার চেয়ে কম বেতনভাতা দেন এবং উৎপাদন ব্যয় কমাতে কর্মচারীদের বেতনভাতা কম দেন। এতে মালিক ধনী হচ্ছে আর কর্মচারীরা হচ্ছে দরিদ্র। এ বৈশিষ্ট্যগুলোয় আমরা পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার শ্রমিক শোষণের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করতে পারি। নিচে পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার শ্রমিক শোষণের ব্যাখ্যা দেয়া হলো- সর্বাধিক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তা বা পুঁজিপতিরা দ্রব্যের উৎপাদন ব্যয় কম রাখতে এবং বেশি মূল্য পেতে চেষ্টা করে। উৎপাদন ব্যয় কম রাখার জন্য শ্রমিককে তার ন্যায্য মজুরির চেয়ে কম মজুরি দেয়া হয়। এ উদ্বৃত্ত মজুরি পুঁজিপতি বা উদ্যোক্তার কাছে মুনাফা হিসেবে সঞ্চিত হয়। এভাবে উৎপাদিত সম্পদ বণ্টনে অসমতা ও বৈষম্য সৃষ্টি হয়। শ্রমিক প্রাপ্যের চেয়ে কম মজুরি পায় আর পুঁজিপতি বা উদ্যোক্তা তার প্রাপ্যের চেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করে। যেহেতু পুঁজিপতির সংখ্যা কম, তাই একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর হাতেই সমাজের বেশির ভাগ সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়। আর যেহেতু শ্রমিক অগণিত, তাই সমাজের বিশাল জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের ক্ষুদ্র অংশের মালিকানা পায়। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার মতো শ্রমিক শোষণের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। উত্তর: ঘ. উদ্দীপকের বৈশিষ্ট্য ছাড়াও ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বেশকিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো- ১. উৎপাদনের উপাদানগুলোয় ব্যক্তিগত মালিকানা : ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উৎপাদনের উপাদানগুলো যথা-ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন ব্যক্তিমালিকানাধীন। অর্থাৎ ব্যক্তি তার সম্পদ বা আয়ের সাহায্যে ভূমির মালিকানা অর্জন করতে পারে। শ্রমিককে নিয়োগ দিতে পারে। মূলধন গঠন করতে পারে। ব্যক্তি তার নিজস্ব সম্পদ স্বাধীনভাবে ভোগ ও হস্তান্তর করতে পারে। এসব বিষয়ে ব্যক্তি নিজেই সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। ২. উদ্যোগ গ্রহণের স্বাধীনতা : ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যক্তি এককভাবে বা গোষ্ঠীবদ্ধভাবে যে কোনো দ্রব্য বা সেবা উৎপাদনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনোরকম বিধিনিষেধ নেই। এ ব্যবস্থায় প্রায় সব অর্থনৈতিক কার্যাবলি ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত হয়। ৩. অবাধ প্রতিযোগিতা : যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো দ্রব্য বা সেবা উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে পারে। তাই বাজারে একই দ্রব্যের বহুসংখ্যক উৎপাদক থাকেন এবং তাদের মধ্যে অবাধ প্রতিযোগিতা থাকে। উৎপাদক বা বিক্রেতা এবং দ্রব্যের ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দ্রব্যের দাম নির্ধারিত হয়। ৪. ভোক্তার স্বাধীনতা : ভোগকারী কোন দ্রব্য কী পরিমাণ ক্রয় ও ভোগ করবে সে বিষয়ে সে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তবে তার পছন্দ, আয় ও দ্রব্যে বাজারমূল্যের দ্বারা তার এ সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হয়। ৫. সর্বাধিক মুনাফা অর্জন : ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সর্বাধিক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যেই উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। যেসব দ্রব্যের ক্ষেত্রে মুনাফার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, উৎপাদনকারীরা সেসব দ্রব্যে বেশি বিনিয়োগ করে। ৫. উদ্দীপকটি পড়ে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : 'ক' একজন ছাত্র। সে আন্তঃবিতর্ক প্রতিযোগিতায় একজন দর্শক হিসেবে গত সপ্তাহে একটি সুন্দর বিতর্ক উপভোগ করে। বিতর্কে অংশগ্রহণকারী দুটি দল দেশের উন্নয়নে শুধু কৃষি বা শুধু শিল্প কী ভূমিকা রাখতে পারে, তা জোরালো যুক্তির মাধ্যমে উপস্থাপন করছিল। বিতর্কের শেষ পর্যায়ে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা গেল, যে কোনো দেশের উন্নয়নে কৃষি ও শিল্প পরস্পর পরিপূরক। প্রশ্ন: ক. বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রধানত কয়টি খাতে ভাগ করা যায়? প্রশ্ন: খ. দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের ব্যাখ্যা দাও। প্রশ্ন: গ. উদ্দীপকের আলোকে এ দেশের কৃষির প্রধান অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত কর। প্রশ্ন: ঘ. বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উদ্দীপকে উলিস্নখিত দুটি খাত কীভাবে ভূমিকা রাখছে-ব্যাখ্যা কর। \হ উত্তর: ক. বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রধানত ১৫টি খাতে ভাগ করা যায়। উত্তর: খ. জনগণের মাথাপিছু আয় কম হলে সঞ্চয় কম হয়। আর সঞ্চয় কম হলে পুঁজি গঠন বা মূলধনও কম হয়, যার ফলে বিনিয়োগও কম হয়। বিনিয়োগের নিম্নহারের ফলে উন্নয়নের গতি মন্থর হয় এবং পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধি হয় না, ফলে দারিদ্র্য বিমোচন হয় না। এটিই হলো দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র। উত্তর: গ. উদ্দীপকে 'ক' আন্তঃস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় একজন দর্শক হিসেবে গত সপ্তাহে একটি সুন্দর বিতর্ক উপভোগ করে। বিতর্কে অংশগ্রহণকারী দুটি দল দেশের উন্নয়নে শুধু কৃষি বা শুধু শিল্প কী ভূমিকা রাখতে পারে, তা জোরালো যুক্তির মাধ্যমে উপস্থাপন করছিল। বিতর্কের শেষ পর্যায়ে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা গেল, যে কোনো দেশের উন্নয়নে কৃষি ও শিল্প পরস্পর পরিপূরক। কিন্তু আমাদের কৃষি খাতে অবকাঠামোগত দুর্বলতা বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রসরতার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। সেচ সুবিধার অপর্যাপ্ততা, বীজ ও সারের অভাব-এগুলো যথাসময়ে প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা, বিদু্যতের অভাব, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে পরিবহনের উচ্চ ব্যয়, পণ্য সংরক্ষণ ও গুদামজাত করে রাখার অসুবিধার ফলে উৎপাদনও কম হয়। আবার উৎপাদন পর্যায় থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের আধিপত্যের ফলে প্রকৃত উৎপাদকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে তারা উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে এবং নতুন উদ্যোগ নিতে আগ্রহী হয় না। কৃষি উন্নয়নের জন্য সুলভ কৃষিঋণ একটি বড় উপাদান। তবে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার অপর্যাপ্ততার কারণে বহু কৃষকের কাছে কৃষিঋণ এখনো সুলভ নয়। উত্তর: ঘ. বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উদ্দীপকে উলিস্নখিত দুটি খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতি প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিপ্রধান অর্থনীতি হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে মৎস্য খাতসহ কৃষি খাতের অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪৩.৬ শতাংশ কৃষি খাতে নিয়োজিত। দেশের রপ্তানি আয়েও কৃষি খাতের উলেস্নখযোগ্য অবদান রয়েছে। খাদ্যশস্য কৃষি খাতের অন্যতম প্রধান উৎপন্ন দ্রব্য। বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে ক্রমবর্ধমান এবং দেশটি ক্রমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া আমাদের শিল্প খাতের অনেক শিল্পের কাঁচামালের জোগান দেয় আমাদের কৃষি খাত। যেমন : পাটশিল্প, চা ও চামড়াশিল্প ইত্যাদি। এসব কারণে কৃষি খাত এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্প খাতের গুরুত্বকেও কোনোভাবেই অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্প খাতের গুরুত্ব ও অবদান ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৮০-৮১ অর্থবছরে স্থির মূল্যে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ছিল ১৭.৩১ শতাংশ। ২০১০-১১ অর্থবছরে এ খাতের অবদান ৩০-৩৩ শতাংশ। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, বৃহৎ শিল্প, খনিজ ও খনন, বিদু্যৎ গ্যাস ও পানি সরবরাহ এবং নির্মাণ এসব খাতের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের শিল্প খাত। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি ও শিল্প দুটি খাতের অবদানই গুরুত্বপূর্ণ। এ দুটি খাত একে অন্যের পরিপূরক। শেষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়