পঞ্চম শ্রেণির বাংলা

প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। ১) মাটির শিল্প বলতে কী বুঝি? উত্তর : মাটির শিল্প বলতে আমরা বুঝি মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকর্মকে। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। কুমোররা তাদের হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এ ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করেন। ২) বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্ম কোনটি? উত্তর :বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্পকর্ম হলো মৃৎশিল্প। এ দেশের কুমোর সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মৃৎশিল্পের চর্চা করে আসছেন। ৩) শখের হাঁড়ি কী রকম? \হউত্তর :শখের হাঁড়ি হলো মাটি দিয়ে তৈরি এক ধরনের হাঁ হাঁড়ি। এই হাঁড়িতে অপূর্ব সুন্দর সব কাজ করা থাকে। শখ করে পছন্দের জিনিস এ হাঁড়িতে রাখা হয় বলে এর নাম শখের হাঁড়ি। ৪) বৈশাখী মেলায় কী কী পাওয়া যায়? উত্তর :বৈশাখী মেলায় বিচিত্র সব জিনিস পাওয়া যায়। বাঁশের তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- কুলো, ডালা, ঝুড়ি, চালন, মাছ ধরার চাঁই ইত্যাদি মেলে বৈশাখী মেলায়। মাটির তৈরি খেলনা, পুতুল ও বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্রও পাওয়া যায় এ মেলায়। এ ছাড়া পাওয়া যায় বাঙি, তরমুজ, মুড়ি-মড়কি, জিলাপি, বাতাসা ইত্যাদি মজার মজার খাবার। ৫) মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান কী? উত্তর :মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান হলো মাটি। ৬) কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম বলি। উত্তর :আমাদের দেশের কুমোররা নানা ধরনের মৃৎশিল্প তৈরি করেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে মাটির হাঁড়ি, কলস, সরা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠে তৈরির ছাঁচ, নানা ধরনের খেলনা, টেরাকোটা ইত্যাদি। ৭) টেরাকোটা কী? উত্তর : টেরাকোটা একটি ল্যাটিন শব্দ। 'টেরা' অর্থ মাটি, আর 'কোটা' অর্থ হলো পোড়ানো। পোড়ামাটির তৈরি মানুষের ব্যবহারের সামগ্রীগুলো টেরাকোটা হিসেবে পরিচিত। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে এ শিল্পকর্ম তৈরি করা হয়। টেরাকোটা বাংলাদেশের প্রাচীন মৃৎশিল্প। ৮) বাংলাদেশের কোথায় পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়? উত্তর : বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়। শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের সোমপুর বিহার ও দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরে টেরাকোটার কাজ রয়েছে। ৯) মাটির শিল্প কেন আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয়? উত্তর : আমাদের কুমোর সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে এ দেশের প্রাচীনতম শিল্পটিকে বহন করে চলেছেন। মাটির তৈরি নানা শিল্পকর্মে আমাদের দেশের ঐতিহ্যের ছাপ লক্ষ্য করা যায়। পোড়ামাটির শিল্প বা টেরাকোটাগুলোতেও দেখা যায় অপূর্ব সুন্দর কারুকার্য। এ দেশের মানুষের মন যে শিল্পীর মন আমাদের মৃৎশিল্প সে পরিচয় বহন করে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতেও দেখা যায় মৃৎশিল্পের চমৎকার সব নিদর্শন। এগুলো আমাদের সভ্যতার ইতিহাসকেই তুলে ধরে। মৃৎশিল্প তাই আমাদের ঐতিহ্য ও গর্বের বিষয়। ১০) 'মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি'- প্রচলিত এই কথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়? উত্তর : মামার বাড়ি সবার কাছেই স্বপ্নময় একটি জায়গা। মামার বাড়িতে আদর, ভালোবাসা আর আপ্যায়নের মাত্রা অন্য যে কোনো জায়গার চেয়ে বেশি হয়। এ বাড়ির লোকজনের কাছে আমাদের আবদারের পরিমাণও হয় বেশি। ইচ্ছেমতো যা খুশি করা যায়। শাসন-বারণের ভয় থাকে না। মামার বাড়িতে কাটানো পুরোটা সময়ই আনন্দে ভরপুর থাকে বলে 'মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি'- কথাটি বলা হয়। ১১) টেপা পুতুল বলতে কী বোঝ? উত্তর : আমাদের কুমোররা নরম এঁটেল মাটি হাত দিয়ে টিপে টিপে নানা ধরনের ও নানা আকারের পুতুল তৈরি করেন। টিপে টিপে তৈরি করা হয় বলে এগুলোর নাম টেপা পুতুল। ১২) মাটির শিল্পকর্ম তৈরি করতে কী কী প্রয়োজন? উত্তর : মাটির শিল্পকর্ম তৈরি করতে প্রয়োজন পরিষ্কার এঁটেল মাটি, কাঠের চাকা এবং আরও কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। কুমোররা কাঠের চাকায় মাটির তাল লাগিয়ে তাদের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেন। ১৩) নকশা করার কাজে ব্যবহৃত রংগুলো কুমোররা কীভাবে সংগ্রহ করেন? উত্তর :নকশা করার কাজে ব্যবহৃত রংগুলো কুমোররা শিম, সেগুন পাতার রস, কাঁঠাল গাছের বাকল ইত্যাদি থেকে তৈরি করেন। তা ছাড়া বাজার থেকে কিনে আনা রংও ব্যবহার করা হয় এ কাজে। ১৪) আনন্দপুর গ্রামে কয় ঘর কুমোরের বাস? উত্তর : আনন্দপুর গ্রামে আট-দশ ঘর কুমোরের বাস। ১৫) আনন্দপুর গ্রামের কুমোরপাড়ার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। উত্তর : আনন্দপুর গ্রামের উত্তর দিকে আট দশ ঘর কুমোরের বাস। কুমোরপাড়ায় ছোট-বড় সবাই নানা রকম মাটির জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করে। কেউ মাটির তাল চাক করে সাজিয়ে রাখে, কেউ চাকায় মাটি লাগিয়ে নানা আকারের পাত্র বানায়। কেউ কেউ পাত্রগুলোকে রোদে শুকোতে দেয়। পাত্রগুলোকে পরে মাটির চুলায় পোড়ানো হয়। ১৬) মামার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে কী কী থাকে? উত্তর : মামার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে থাকে ছবি আঁকার নানা জিনিস। আর থাকে একটা বাঁশি। ১৭) পুতুলের পাশে ঘোলা চোখে কী তাকিয়ে ছিল? উত্তর : পুতুলের পাশে ঘোলা চোখে তাকিয়ে ছিল মাটির তৈরি একটা চকচকে রুপালি ইলিশ। ১৮) মৃৎশিল্পের জন্য কেমন মাটি প্রয়োজন? কেন প্রয়োজন? উত্তর :মৃৎশিল্পের জন্য পরিষ্কার এঁটেল মাটি প্রয়োজন। এ মাটি আঠালো হওয়ায় সহজেই আকৃতি দেওয়া যায়। যা অন্য মাটি দিয়ে করা যায় না। ১৯) মৃৎশিল্প কাকে বলে? উত্তর :মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে মৃৎশিল্পকে বলে। ২০) মৃৎশিল্পের জন্য কোন সরঞ্জামটি সবার আগে প্রয়োজন? উত্তর :মৃৎশিল্পের জন্য সবার আগে প্রয়োজন একটা কাঠের চাকা। ২১) দোঁআশ ও বেলে মাটি দিয়ে মৃৎশিল্পের কাজ হয় না কেন? উত্তর : মৃৎশিল্পের জন্য প্রয়োজন আঠালো মাটি। কিন্তু দোআঁশ মাটি খুব একটা আঠালো নয়। আর বেলে মাটি ঝরঝরে। তাই এগুলো দিয়ে মৃৎশিল্পের কাজ হয় না। ২২) মৃৎশিল্পের চর্চায় কাঠের চাকা কীভাবে কাজে লাগে? উত্তর : মৃৎশিল্পের চর্চায় কাঠের চাকা সবচেয়ে জরুরি উপাদান। এই চাকায় প্রথমে নরম মাটির তাল লাগানো হয়। তারপর কুমোররা চাকাটি জোরে ঘোরান। আর হাত দিয়ে ধরেন মাটির তাল। এভাবে চাকার সাহায্যে তারা নানা আকারের মাটির জিনিস তৈরি করেন। ২৩) আজকাল কী কাজে নকশা করা মাটির ফলক ব্যবহার করা হচ্ছে? উত্তর :আজকাল সরকারি-বেসরকারি ভবনে সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজে নকশা করা মাটির ফলক ব্যবহৃত হচ্ছে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়