পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
প্রাকৃতিক সম্পদ প্রশ্ন: কেন নবায়নযোগ্য সম্পদ অনবায়নযোগ্য সম্পদের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা উচিত? উত্তর :তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি অনবায়নযোগ্য সম্পদ। এ সকল সম্পদ একবার নিঃশেষ হলে হাজার হাজার বছরেও ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। অপরদিকে নবায়নযোগ্য সম্পদ বারবার ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া অনবায়নযোগ্য সম্পদ যেমন- জীবাশ্ম-জ্বালানি ব্যবহারের ফলে বায়ুমন্ডল কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নির্গত হয় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাধ্যমে পরিবেশের দূষণ ঘটায়। অন্যদিকে ননায়নযোগ্য সম্পদ পরিবেশ বান্ধব। আর এই সব কারণে নবায়নযোগ্য সম্পদকে অনবায়নযোগ্য সম্পদের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। প্রশ্ন: প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার কেন প্রয়োজন? উত্তর : শক্তি উৎপাদন এবং নতুন কিছু তৈরি করার জন্য মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদের চাহিদাও বাড়ছে। কিন্তু কিছু কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ সীমিত। অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ একবার নিঃশেষিত হলে হাজার বছরেও ফেরত পাওয়া যাবে না। যেমন- তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি। তাছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ ও শক্তির অপব্যবহার পরিবেশ দূষণ ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঘটায়। তাই আমাদের এই সব সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। প্রশ্ন: একটি সুন্দর বাড়ি তৈরি করতে তোমার কোন কোন প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানবসৃষ্ট সম্পদ প্রয়োজন হবে? উত্তর : একটি সুন্দর বাড়ি তৈরি করার জন্য আমার যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানবসৃষ্ট সম্পদের প্রয়োজন সেগুলো নিম্নরূপ : প্রাকৃতিক সম্পদ : র. পানি, রর. গাছপালা, ররর. বালি, রা. লোহা। মানবসৃষ্ট সম্পদ : র. কাচ, রর. পস্নাস্টিক, ররর. ইট, রা. বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। প্রশ্ন: নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলে? উত্তর :যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ বার বার ব্যবহার করা যায় তাদের নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমন : পানি, বায়ু, সূর্যের আলো ইত্যাদি। প্রশ্ন:দুইটি কৃত্রিম সম্পদের উদাহরণ খাতায় লিখ। উত্তর :দুইটি কৃত্রিম সম্পদের উদাহরণ হলো : ১. পস্নাস্টিক; ২. কাচ প্রশ্ন:প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলে? উত্তর : প্রকৃতিতে পাওয়া যেসব সম্পদ মানুষ তার চাহিদা পূরণের জন্য ব্যবহার করে থাকে তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। প্রশ্ন: কৃত্রিম সম্পদ কাকে বলে? উত্তর : মানুষের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত যেসব বস্তু বা সম্পদ প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে সৃষ্টি হয় বা রূপান্তর করে ব্যবহার করা হয় তাদের কৃত্রিম সম্পদ বলা হয়। প্রশ্ন:সৌরশক্তিকে কেন নবায়নযোগ্য শক্তি বলা হয়? উত্তর :সৌরশক্তি হলো প্রাকৃতিক শক্তি। এ শক্তি রূপান্তর চক্রের মাধ্যমে বারবার নবায়ন করা যেতে পারে। এজন্য সৌরশক্তিকে নবায়নযোগ্য শক্তি বলা হয়। প্রশ্ন:সৌর বিদু্যৎ কীভাবে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখে? উত্তর :সৌর বিদু্যতে সূর্যের আলো কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সৌর বিদু্যতে খনিজ তেল, পেট্রল, ডিজেল ইত্যাদি জ্বালানির ন্যায় কার্বন ডাইঅক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদি পরিবেশ দূষণকারী গ্যাস উৎপন্ন হয় না। তাই সৌর বিদু্যৎ ব্যবহারে পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকে। প্রশ্ন: আমাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি উপাদানের নাম লেখ। উত্তর :আমাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের নাম হলো : বায়ু, পানি, খাদ্য, বস্ত্র ইত্যাদি। প্রশ্ন:কয়েকটি খনিজ সম্পদের নাম লেখ। উত্তর :কয়েকটি খনিজ সম্পদের নাম :প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর ইত্যাদি। প্রশ্ন: সৌর বিদু্যৎ কী? উত্তর :সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে বিদু্যৎ উৎপন্ন করা হয় সেটিই হলো সৌর বিদু্যৎ। প্রশ্ন:সৌর প্যানেল কী? উত্তর :যে প্যানেলে সৌরশক্তিকে বৈদু্যতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাকে সৌর প্যানেল বলে। প্রশ্ন:প্রাকৃতিক গ্যাসকে অনবায়নযোগ্য বলা হয় কেন? উত্তর :প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ খুবই সীমিত এবং শেষ হলে আর ফিরে পাওয়া যাবে না, তাই একে অনবায়নযোগ্য সম্পদ বলে। প্রশ্ন: প্রাকৃতিক সম্পদ কত প্রকার ও কী কী? উত্তর : প্রাকৃতিক সম্পদ দুই প্রকার। যথা : (র) নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ (রর) অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। প্রশ্ন: পরিবেশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্য কী? উত্তর : পরিবেশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্য হলো পরিবেশকে নিরাপদ রাখা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করা। প্রশ্ন: উইন্ডমিল কী? উত্তর :বায়ুপ্রবাহকে কাজে লাগানোর জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে উইন্ডমিল বলে। প্রশ্ন: বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট দূরীকরণে নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে তুমি মনে কর? উত্তর : বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট দূরীকরণে নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন- সৌর বিদু্যৎ ও উইন্ডমিলের সাহায্যে পর্যাপ্ত বিদু্যৎ উৎপাদন করা গেলে গ্রামে ঘর আলোকিত করার আলো, টিভি চালানোর মতো বিদু্যৎ হাতের নাগালের মধ্যে আসবে। বর্তমানে আমরা যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করছি তা সীমিত এবং একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। প্রকৃতির অফুরন্ত উৎস সৌরশক্তি ও বায়ুপ্রবাহ কাঁচামাল হওয়াতে এগুলো শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানির চাহিদাও সমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট দূরীকরণে সৌরবিদু্যৎ ও উইন্ডমিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রশ্ন:বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সৌরশক্তির ব্যবহারের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা বিষয়ে তোমার মতামত উপস্থাপন কর। উত্তর :বাংলাদেশের জন্য জ্বালানির একটি বিকল্প উৎস হতে পারে সৌরশক্তি। তেল, গ্যাস বা কয়লার মতো সম্পদ কমে যাওয়ায় সৌরশক্তি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সৌর প্যানেলে সৌরশক্তিকে বিদু্যৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাসা, অফিস ও সেচ কাজে এই সৌর বিদু্যৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে ছোট্ট পরিসরে সৌরশক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা চলছে। বাড়িঘর আলোকিত করা, ফ্রিজ চালানো, টেলিভিশন চালানো, পানি সেচ ইত্যাদি কাজে এর সম্ভাবনা প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সৌরশক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাসাবাড়ির জন্য সৌর বিদু্যতের সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ও স্থাপনের জন্য ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে গ্রামের লোকজন সৌরশক্তি ব্যবহার করে বৈদু্যতিক বাতি, টিভি, রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার ইত্যাদি চালাতে পারে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়