বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

চতুর্থ শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
৩৫. মণিপুরিরা কতটি গোত্রে বিভক্ত? ক. ২টি খ. ৩টি গ. ৪টি ঘ. ৫টি উত্তর : ক. ২টি ৩৬. 'লাহিং' ও 'আহিং' কাদের পোশাক? ক. চাকমা নারীদের খ. মারমা পুরুষদের গ. সাঁওতাল পুরুষদের ঘ. মণিপুরি নারীদের উত্তর : ঘ. মণিপুরি নারীদের ৩৭. কোন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামাজিকভাবে মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ? ক. সাঁওতালদের খ. মারমাদের গ. মণিপুরিদের ঘ. চাকমাদের উত্তর : গ. মণিপুরিদের ৩৮. মণিপুরিরা মাংস খান না কেন? ক. ধর্মীয় নিষেধ থাকায় খ. সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ বলে গ. স্বাদ কম বলে ঘ. রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে উত্তর : ক. ধর্মীয় নিষেধ থাকার কারণে ৩৯. তোমার সহপাঠী অর্চনা মণিপুরির বাড়িতে গিয়ে দেখলে তার মা তাদের প্রিয় খাবার তৈরি করছেন। প্রিয় খাবার তৈরিতে অর্চনার মা ব্যবহার করেছেন- ক. মাছ খ. ডাল গ. শাক-সবজি ঘ. শুঁটকি মাছ উত্তর : গ. শাক-সবজি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন : জুম চাষ কাকে বলে? উত্তর : পাহাড়ের ঢালু জায়গায় গাছ পুড়িয়ে এবং পরিষ্কার করে ছোট দা দিয়ে গর্ত করে বীজ লাগানোর পদ্ধতিকে জুম চাষ বলে। প্রশ্ন : চাকমাদের ঘর কেমন? উত্তর : চাকমারা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মাচার মতো ঘর তৈরি করেন। ঘরগুলো শক্ত গাছের উপর তৈরি। ঘরগুলোতে ওঠার জন্য রয়েছে কাঠের বা বাঁশের সিঁড়ি। প্রশ্ন : চাকমারা উৎসব পালন করেন কীভাবে? উত্তর : চাকমারা বিভিন্ন উৎসবে ফুল দিয়ে ঘর-বাড়ি সাজান। শিশুরা বড়দের সম্মান জানায় ও আশীর্বাদ লাভ করে। প্রশ্ন : অধিকাংশ মারমা বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় বসবাস করেন? উত্তর : অধিকাংশ মারমা বাংলাদেশের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় বসবাস করেন। প্রশ্ন : মারমাদের প্রধান খাবার কী? উত্তর : ভাত আর সিদ্ধ সবজি মারমাদের প্রধান খাবার। প্রশ্ন : মারমাদের অতীত চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন ছিল? উত্তর : মারমারা অতীতে বনজ ঔষধি গাছের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতেন। প্রশ্ন : সাঁওতালরা বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় বসবাস করেন? উত্তর : সাঁওতালরা দিনাজপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলায় বাস করেন। এছাড়া রংপুর, বগুড়াসহ আরও কয়েকটি জেলায় সাঁওতালদের বসবাস রয়েছে। প্রশ্ন : 'হাড়িয়ার সিম' কী? উত্তর : 'হাড়িয়ার সিম' সাঁওতালদের একটি উৎসব। এ উৎসবে তারা ফসলের জন্য বারোয়ারি ভোগ দেয়। প্রশ্ন : মণিপুরিদের আদিবাস কোথায়? উত্তর : মণিপুরিদের আদিবাস ভারতের আসাম ও মণিপুর রাজ্যে। প্রশ্ন : কয়েকটি মণিপুরি উৎসবের নাম লেখ। উত্তর : মণিপুরিদের কয়েকটি উৎসব হলো- রথযাত্রা, দোলযাত্রা, হোলি উৎসব, চৈত্রসংক্রান্তি, রাস পূর্ণিমা ইত্যাদি। প্রশ্ন : ৫টি বিষয়ে সাঁওতালদের জীবনধারা সম্পর্কে লেখ। উত্তর : সাঁওতালদের জীবনধারা অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। নিচে তাদের জীবনধারার পরিচয় তুলে ধরা হলো : র) ভাষা : সাঁওতালদের নিজস্ব ভাষা থাকলেও কোনো বর্ণমালা নেই। রর) খাদ্য : সাঁওতালদের প্রধান খাদ্য ভাত। এছাড়াও তাঁরা মাছ, মাংস, সবজি ইত্যাদি খাবারও খান। নভলিতা বা পাটশাক তাদের একটি বিশেষ খাবার। ররর) পেশা : সাঁওতালরা মূলত কৃষিজীবী। এছাড়া মাছ ধরা, চা বাগানের কাজ, কুটিরশিল্পসহ তাঁরা আরও নানা কাজ করে থাকেন। রা) শিক্ষা : বর্তমানে সাঁওতালরা শিক্ষিত হচ্ছেন এবং সব কাজেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। া) উৎসব : এক বছরের ৫ মাসে ৫টি প্রধান উৎসব পালন করেন। প্রশ্ন : মণিপুরি সংস্কৃতির বর্ণনা দাও। উত্তর : বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মণিপুরি অন্যতম। তাদের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। নিচে মণিপুরি সংস্কৃতির উলেস্নখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরা হলো : ১) নাচ : নাচ হচ্ছে মণিপুরি সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদের নাচ অত্যন্ত বিখ্যাত। ২) ধর্ম : মণিপুরিরা সনাতন ধর্মের অনুসারী। তবে 'মৈ তৈ পাঙন' নামে মুসলিম একটি মণিপুরি জনগোষ্ঠীও আছে। ৩) খাদ্য : মণিপুরিদের প্রধান খাদ্য ভাত, মাছ, শুঁটকি, সবজি। সামাজিকভাবে মাংস নিষিদ্ধ বলে তারা তা খান না। সবজির পাতা দিয়ে তারা 'সিঞ্জেদা' নামক এক ধরনের সালাদ খেতে পছন্দ করেন। ৪) পোশাক : মণিপুরি নারীরা 'লাহিং' (ঘাগড়ার মতো) আর 'আহিং' (বস্নাউজ) ও ওড়না পরেন। পুরুষরা ধুতি ও পাঞ্জাবি পরেন। ৫) উৎসব : মণিপুরিরা প্রায় সারা বছরই উৎসবে মেতে থাকেন। তারা রথযাত্রা, দোলযাত্রা, হোলি উৎসব, চৈত্র সংক্রান্তি, রাস পূর্ণিমা ইত্যাদি উৎসব পালন করেন। নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে তারা আনন্দ করেন। প্রশ্ন : বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রধান প্রধান পেশা কী? উত্তর : বিভিন্ন ক্ষুদ্র প্রধান প্রধান পেশা নিচে উলেস্নখ করা হলো : ১) চাকমা : গ্রামে বসবাসকারী চাকমারা সাধারণত জুম চাষ ও অন্যান্য কৃষি কাজ করেন। একই সাথে তারা বিভিন্ন ফসল ও সবজি চাষ করে থাকেন। তাছাড়া চাকমারা বাঁশ ও বেত দিয়ে নানা ধরনের ঝুড়ি, পাখা, বাঁশি, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি তৈরি করেন। তারা নিজেদের তাঁতে নানা ধরনের নকশার কাপড় বোনেন। ২) মারমা : মারমা জনগোষ্ঠী জুম চাষ, মাছ ধরা, কাপড় ও চুরুট তৈরি করে এবং তা বিক্রি করে আয় করেন। ৩) সাঁওতাল : বর্তমানে সাঁওতালদের প্রধান পেশা হলো কৃষি কাজ। এছাড়া মাছ ধরা, চা বাগানের কাজ, কুটিরশিল্পসহ তারা আরও নানা ধরনের কাজ করে থাকেন। ৪) মণিপুরি : মণিপুরি জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগেরই প্রধান পেশা কৃষি কাজ। তারা বিভিন্ন ধরনের ফসল ও সবজি চাষ করেন। তাদের ঘরে ঘরে তাঁতশিল্প রয়েছে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়