সপ্তম শ্রেণির বাংলা

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
লেখা নিয়ে মতামত প্রশ্ন : 'পিরামিড' রচনায় যেসব বক্তব্য নিয়ে তোমার মতামত রয়েছে, বা মনে প্রশ্ন জেগেছে, তা নিচের ছকে লেখো। (মূল বইয়ের ৮৪ নম্বর পৃষ্ঠা) 'পিরামিড' রচনায় যা আছে : আমার মতামত ও জিজ্ঞাসা : ১. এ তিনটি পিরামিড পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো কীর্তিস্তম্ভ। এ তথ্য সঠিক কি না তা যাচাই করতে হবে। ২. ভেবে কূল-কিনারা পাওয়া যায় না, সে সম্রাটের কতখানি ঐশ্বর্য আর প্রতাপ ছিল, যিনি আপন রাজধানীর পাশে লক্ষ লক্ষ লোককে বিশ বছর খাওয়াতে-পড়াতে পেরেছিলেন। শুনেছি আগেরকার রাজা-বাদশারা জোর করে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন ধরে এনে দাস হিসেবে কাজ করাত, যা অত্যন্ত অমানবিক ছিল। পিরামিড বানানোর সময়ে এ ধরনের কিছু ঘটেছিল কিনা জানতে হবে। ৩. জানো তো, পিরামিডের ঠিক মাঝখানে একটা কুঠুরিতে বিস্তর ধনদৌলত জড়ো করা আছে-তারই পথ অনুসন্ধান করছে পাকা সাড়ে ছ' হাজার বছর ধরে। স্যতিই পিরামিডের ভেতরে কোনো ধন-সম্পদ আছে, নাকি এগুলো কেবলই কাল্পনিক গল্প মাত্র, এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। ৪. ফারাওরা (সম্রাটরা) বিশ্বাস করতেন, তাদের শরীর যদি মৃতু্যর পর পচে যায়, কিংবা কোনো প্রকার আঘাতে ক্ষয় হয় তবে তারা পরলোকে অনন্ত জীবন পাবে না। ফারাওরা কোন ধর্মে বিশ্বাসী ছিল? তাদের ধর্মে কী পরকাল সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল? যদি থাকে তাহলে তা জানতে হবে। বিবরণ লিখি ষাট গম্বুজ মসজিদ খুলনার বাগেরহাট জেলায় বাংলাদেশের অন্যতম পুরাকীর্তি ষাট গম্বুজ মসজিদ অবস্থিত। বিখ্যাত এ মসজিদটিতে ৮১টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে বাইরের দিকে প্রায় ১৬০ ফুট ও ভেতরের দিকে প্রায় ১৪৩ ফুট লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে বাইরের দিকে প্রায় ১০৪ ফুট ও ভেতরের দিকে প্রায় ৮৮ ফুট চওড়া। দেয়ালগুলো প্রায় ৮.৫ ফুট পুরু। মসজিদ এলাকায় একটি জাদুঘর রয়েছে। জনশু্রতি আছে যে, হজরত খানজাহান (র.) ষাট গম্বুজ মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সুদূর চট্টগ্রাম, মতান্তরে ভারতের উড়িষ্যার রাজমহল থেকে তার অলৌকিক ক্ষমতাবলে জলপথে ভাসিয়ে এনেছিলেন। ইমারতটির গঠন-বৈচিত্র্যে তুঘলক স্থাপত্যের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এ বিশাল মসজিদের চার কোণে চারটি মিনার আছে। দক্ষিণ দিকের মিনারের শীর্ষে কুঠিরের নাম রোশনাই কুঠির এবং এ মিনারে ওপরে উঠার সিঁড়ি আছে। মসজিদটি ছোট ইট দিয়ে তৈরি, এর দৈর্ঘ্য ১৬০ ফুট, প্রস্থ ১০৮ ফুট, উচ্চতা ২২ ফুট। মসজিদের সম্মুখ দিকের মধ্যস্থলে একটি বড় খিলান এবং তার দুই পাশে পাঁচটি করে ছোট খিলান আছে। মসজিদের পশ্চিম দিকে প্রধান মেহরাবের পাশে একটি দরজাসহ মোট ২৬টি দরজা আছে। সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও যাদুঘর বিভাগ পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের জন্য এ ঐতিহাসিক মসজিদ এবং খানজাহান (র.) এর মাজার শরীফের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। ইউনেস্কো এ মসজিদটি বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। (কত কাল ধরে-আনিসুজ্জামান) বিশ্লেষণমূলক লেখা বিবরণমূলক লেখায় কোনো বস্তু, বিষয় বা ঘটনার বিবরণ থাকে। আর তথ্যমূলক লেখায় কোনো বিষয়ের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। অন্যদিকে বিবরণ ও তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মত প্রকাশ করা হয় যেসব রচনায়, তাকে বিশ্লেষণমূলক লেখা বলে। নিচে একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা দেওয়া হলো। এই গল্পটি আনিসুজ্জামানের লেখা। আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০২০ সালে মারা যান। তার লেখা বইয়ের মধ্যে আছে 'মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য' 'স্বরুপের সন্ধানে' 'বিপুলা পৃথিবী' ইত্যাদি উলেস্নখযোগ্য। পড়ে কী বুঝলাম? প্রশ্ন : এই রচনাটি কোন বিষয় নিয়ে লেখা? উত্তর : রচনাটি বাঙালি জাতির ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে লেখা। প্রশ্ন : এই লেখা থেকে কয়েকটি বিশ্লেষণমূলক বাক্য খুঁজে বের করো। উত্তর : এই লেখা থেকে কয়েকটি বিশ্লেষণমূলক বাক্য নিচে উলেস্নখ করা হল : ১) আলো-আধারের খেলায় অনেক পুরনো কথা ঢাকা পড়েছে। ২) লোকজন নিজেরাই যুক্তি পরামর্শ করে কাজ করত, চাষ করত, ঘর বাঁধত, দেশ চালাত। ৩) কত লোক-লক্কর বহাল করা হলো কত ব্যবস্থা, কত নিয়মকানুন দেখা দিলো। ৪) মৌর্য-গুপ্ত, পাল-সেন, পাঠান-মুঘল, কোম্পানি-রানি এদের কাল শেষ হয়েছে। ৫) একজন লিখছেন সমৃদ্ধির কথা, বিলাসের কথা, আনন্দের কথা। আরেকজন ছবি আকছেন নিদারুণ অভাবের, জ্বালাময় দারিদ্র্যের, অপরিসীম বেদনার ! প্রশ্ন : বিবরণমূলক লেখার সাথে এই লেখার কী কী মিল-অমিল আছে? উত্তর : বিবরণমূলক লেখার সাথে এই লেখার মিল ও অমিল দুইই আছে। বিররণমূলক লেখায় যেমন বর্ণনা থাকে এখানেও সেই বর্ণনা আছে। বিবরণমূলক লেখায় যেখানে তথ্য থাকে এখানেও নানা তথ্যের সমাবেশ রয়েছে। তবে, অমিল হলো এই জায়গায় যে, বিবরণমূলক লেখায় বিশ্লেষণ থাকে না, আর এই লেখাটা হচ্ছে বিশ্লেষণধর্মী। প্রশ্ন : তথ্যমূলক লেখার সাথে এই লেখাটির কী কী মিল-অমিল আছে? উত্তর : তথ্যমূলক লেখার সাথে এই লেখাটির সবচেয়ে বড় মিল হচ্ছে- দুই ধরনের লেখাই বিবরণের মাধ্যমে লিখিত। আবার তথ্যমূলক লেখায় যেথানে তথ্যই প্রধান, এলেখায়ও নানা রকম তথ্য দেওয়া আছে। তবে, অমিল এই জায়গায় যে, তথ্যমূলক লেখায় যেখানে তথ্যই দেওয়া থাকে, এই লেখায় তথ্যের পাশাপাশি তথ্যের বিশ্লেষণও রয়েছে। প্রশ্ন : এই লেখার ওপর তোমার মতামত দাও। উত্তর : এই লেখাটি একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা। এই লেখায় আমরা বাঙালি জাতির ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতির নানা পরিচয় পাই। এই লেখার মাধ্যমে আমরা বিশ্লেষণাত্মক ভঙ্গিতে ইতিহাসের ধারা পরিবর্তন, সমাজের বিকাশ এবং সংস্কৃতির বিবর্তণের ধারা সম্পর্কে জানতে পারি। এই পরিচ্ছেদের শব্দের অর্থ গর্দান যাওয়া : মাথা কাটা। ঘোড়াচুড় : এক ধরনের খোপার নাম। ডুলি : ছোট পালকি। তাগা : বাহুতে পরার অলংকার। তারঞ্জ : কানে পরার অলংকার। তিলপল্পব : তিলগাছের কচি পাতা। নিরানন্দ : আনন্দহীন। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়