সপ্তম শ্রেণির বাংলা

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
'সেই ছেলেটি' নাটকটির কাহিনী প্রথমে গল্পের মতো বলো, তারপর লেখো। (মূল বইয়ের ১৭৬ নম্বর পৃষ্ঠা) মোমেন, সাবু আর আরজু একই শ্রেণিতে পড়ে। তারা একসঙ্গে স্কুলে যায়। কিন্তু কিছুটা পথ হাঁটার পরেই আরজুর পা ব্যথা শুরু হয়ে যায়, তাই সে পথে বসে পড়ে। তখন মোমেন তাকে রেখেই চলে যায়। এদিকে সাবু ফিরে এসে আরজুকে পথে বসে থাকতে দেখে এবং কারণ জানতে চায়। আরজু তাকে বলে যে, 'আমি আর হাঁটতে পারছি না।' তখন সাবু তাকে বলে, রোজ রোজ তার জন্য স্যারের বকুনি খেতে হয়। সাবুও তখন আরজুকে ফেলে চলে যায়। আর আরজু পথে বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পর আইসক্রিম ওয়ালার সাথে দেখা হয় আরজুর। আইসক্রিমওয়ালা আরজুকে বলে যে, স্কুল ফাঁকি দেওয়া মোটেই ভালো কোনো কাজ নয়। ছোটবেলায় সে স্কুল ফাঁকি দিত বলে আজ সে আইসক্রিম বিক্রি করছে। আইসক্রিমওয়ালার পরে আসে হাওয়াই মিঠাইওয়ালা। সেও আরজুর ডাকে সাড়া দিতে চায় না। কারণ তার সময় নষ্ট হলে হাওয়াই মিঠাইও নষ্ট হয়ে যাবে। স্কুলের লতিফ স্যার লক্ষ্য করেন আরজু স্কুলে অনুপস্থিত। স্যার সাবুর কাছে জানতে চান, আরজু অনুপস্থিত কেন? সাবু জানায় যে আরজু মাঝপথে এসে থেমে যায় এবং তাদের চলে আসতে বলে। আরজু মাঝেমধ্যেই এমন করে। স্যার বুঝতে পারেন আরজুর নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা আছে। তখন স্যার সাবু আর মোমেনকে নিয়ে আরজুর কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দিলেন। এদিকে আরজু স্কুলে যেতে না পেরে মন খারাপ করে বসে থাকে। সে মেঘ আর পাখির কাছে তাকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার আবদার করে এবং বসে বসে কাঁদতে থাকে। এমন সময় লতিফ স্যার এসে উপস্থিত হন। স্যার আরজুকে জিজ্ঞাসা করেন, আরজু তুমি কাঁদছো কেন? তোমার কি হয়েছে? তুমি স্কুলে যাওনি কেন? আরজু তার পা দুটো স্যারকে দেখায়। স্যার দেখলেন আরজু রোগে ভুগছে, তার পা দুটো বেশ চিকন হয়ে গেছে। তখন স্যার আরজুকে চিকিৎসা করানোর আশ্বাস দেন এবং তার বন্ধুদের উপদেশ দেন তারা যেন আর আরজুকে ফেলে রেখে না চলে আসে। তখন আরজুর বন্ধুরা তাদের ভুল বুঝতে পারে। জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি 'সেই ছেলেটি' নাটকের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। (মূল বইয়ের ১৭৭ নম্বর পৃষ্ঠা) 'সেই ছেলেটি' নাটকে আরজু একজন প্রতিবন্ধী শিশু। আমরা আমাদের চারপাশে এমন অসংখ্য বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের দেখি। কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় এই যে, এসব মানুষদের আমরা সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখি না। বরং এদের সাথে খারাপ আচরণ করি আমরা। অথচ এরাও আমাদের মতোই মানুষ। এদেরও ভালো লাগা বা মন্দ লাগা আছে। আরজুর মতো এমন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যেসব শিশু আমাদের চারপাশে আছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অবহেলিত, অযত্নের শিকার। অনেকেই তাদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে। অনেক সময় ক্লাসের সহপাঠীরাও তাদের সাথে বাজে আচরণ করে। কিন্তু এরকম কাজ একদমই করা উচিত নয়। আমাদের উচিত এদের পাশে থাকা। আমরা আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধীদের প্রতি খারাপ আচরণকারীদের যেমন দেখি, তেমনই লতিফ স্যারের মতো মহৎ হৃদয়ের মানুষদেরও দেখি; যারা প্রতিবন্ধীদের সেবায় এগিয়ে আসে। তাই আমাদের সকলের উচিত লতিফ স্যারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রতিবন্ধীদের প্রতি ভালো আচরণ করা এবং বিপদে তাদের পাশে থেকে সাধ্যমত সাহায্য করা। তাহলেই আমাদের এ পৃথিবী সবচেয়ে সুন্দর হয়ে উঠবে। যে কোনো একটি বিষয় নিয়ে দুটি চরিত্রের মধ্যে সংলাপ রচনা করো। (মূল বইয়ের ১৭৯ নম্বর পৃষ্ঠা) নমুনা উত্তর: সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে সংলাপ। বিজয় : প্রতিদিন কতজন লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় তুমি জানো মুহিন? মুহিন : আমার মনে হয় এর সঠিক হিসাব নেই, কারণ সব খবর তো পত্রিকা আর টিভিতে আসে না। বিজয় : আমাদেরে দেশের কত মূল্যবান জীবন এভাবে শেষ হয়ে যায়। সত্যিই ভাবতে অবাক লাগে। এ নিয়ে কারো যেন কোনো মাথা ব্যথা নেই। মুহিন : বিজয়, তুমি ঠিকই বলেছ। এর একটা প্রতিকার হওয়া দরকার। আচ্ছা এসব দুর্ঘটনার পেছনে মূল কারণ কী তুমি বলতে পার? বিজয় : আমার মনে হয়, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ প্রতিযোগিতার মনোভাব। মুহিন : সেটা কেমন? কিসের প্রতিযোগিতা? বিজয় : গাড়ি চালকরা কার আগে কে যাবে এই প্রতিযোগিতায় বেপরোয়াভাবে দ্রম্নত গাড়ি চালায়। এছাড়াও অনভিজ্ঞ চালক সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দায়ী। মুহিন : হঁ্যা, লাইসেন্স নেই এমন অসংখ্য চালক রয়েছে যারা প্রশিক্ষণ না নিয়েই বড় গাড়ির চালক হয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশ এদের ব্যাপারে কঠোর হলে এমনটা হতো না। বিজয় : আইনের প্রয়োগ যেমন এক্ষেত্রে জরুরি তেমনি জনসচেতনতারও প্রয়োজন রয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে গাড়িতে না উঠলেও আমরা পারি। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা সেই কাজটি করি। মুহিন : আমরা একটা কাজ করতে পারি। আমাদের ক্লাসের সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে একটি স্মারকলিপি তৈরি করে জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিতে পারি। বিজয় : ভালো চিন্তা করেছ। চলো আমরা এ বিষয়ে ক্লাসের সবার মতামত নেই। প্রশ্ন: নাটক কী? নাটক কাকে বলে? উত্তর: সংলাপ-নির্ভর রচনাকে নাটক বলে। নাটক মূলত অভিনয়ের জন্য লেখা হয়। নাটকে একটি কাহিনি থাকে। কাহিনি ধীরে ধীরে পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। নাটকে এক বা একের বেশি দৃশ্য থাকে। নাটকের এক-একটি অংশকে দৃশ্য বলে। 'সেই ছেলেটি' নাটকে তিনটি দৃশ্য আছে। দৃশ্যগুলোর ঘটনা তিনটি জায়গায় ঘটেছে- ১ম দৃশ্য: গ্রামের পাশের রাস্তা, ২য় দৃশ্য: সাবু, আরজুদের স্কুল, ৩য় দৃশ্য: আম বাগান। নাটকে সাধারণত কয়েকটি চরিত্র থাকে। 'সেই ছেলেটি' নাটকের চরিত্রগুলোর মধ্যে আছে- আরজু, সাবু, আইসক্রিমওয়ালা ইত্যাদি। নাটকের চরিত্ররা যেসব কথা বলে, সেগুলোকে সংলাপ বলা হয়। 'সেই ছেলেটি' নাটকের সংলাপ: সাবু বলছে- 'কী হলো আবার?' আরজু বলছে- 'আমি যে আর হাঁটতে পারছি না!' যিনি নাটক লেখেন, তাকে বলা হয় নাট্যকার। যারা অভিনয় করেন, তাদের বলা হয় অভিনেতা। নাটকের অভিনয় যিনি পরিচলনা করেন, তাকে বলা হয় পরিচালক বা নির্দেশক। সাধারণত মঞ্চে নাটক অভিনীত হয়। মঞ্চের সামনে বসে যারা নাটক উপভোগ করেন, তাদের বলে দর্শক। টেলিভিশন ও অন্যান্য দৃশ্য-মাধ্যমে আজকাল নানা ধরনের নাটক অভিনীত হয়। রেডিওতেও নাটক শোনা যায়।