প্রশ্ন :পরিবেশের জড় উপাদান কোনগুলো?
উত্তর : মাটি, পানি, বায়ু, পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, আলো, উষ্ণতা, আর্দ্রতা ইত্যাদি হলো পরিবেশের জড় উপাদান।
প্রশ্ন :ভূগোলের পরিধি বিস্তৃতিতে কী কী বিষয় ভূমিকা রাখছে?
উত্তর : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবন, চিন্তা-ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবোধের পরিবর্তন ইত্যাদি ভূগোলের পরিধি বিস্তৃতিতে ভূমিকা রাখছে।
প্রশ্ন :বর্তমানে ভূগোলে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে?
উত্তর :ভূমিরূপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি বর্তমানে ভূগোল বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রশ্ন :দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আলোচ্য বিষয় কী?
উত্তর :দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস, দুর্যোগ থেকে পরিবেশ ও সমুদ্রকে রক্ষার কৌশল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আলোচ্য বিষয়।
প্রশ্ন :মানুষের জীবনধারণ প্রণালি নিয়ে আলোচনা করা হয় ভূগোলের কোন শাখায়?
উত্তর :মানুষের জীবনধারণ প্রণালি নিয়ে আলোচনা করা হয় মানব ভূগোলে।
প্রশ্ন :অশ্মমন্ডলের উপরিভাগের মৃত্তিকা আলোচনা করে ভূগোলের কোন শাখা?
উত্তর : অশ্মমন্ডলের উপরিভাগের মৃত্তিকা আলোচনা করে মৃত্তিকা ভূগোল।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রশ্ন : ভূগোলকে একদিকে প্রকৃতির বিজ্ঞান অন্যদিকে পরিবেশ ও সমাজের বিজ্ঞান বলা হয় কেন?
উত্তর :পৃথিবীতে বাস করে নানান রকম মানুষ, বিচিত্র তাদের জীবনধারা। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে নানান রকম পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং মানুষ ও মানুষের বিভিন্ন রকম সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড। এসব আধুনিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়। সুতরাং ভূগোল একদিকে প্রকৃতির বিজ্ঞান অন্যদিকে পরিবেশ ও সমাজের বিজ্ঞান।
প্রশ্ন :ভূগোল শব্দটির উৎপত্তি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :ভূগোল শাস্ত্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ 'এবড়মৎধঢ়যু' যা দুটি গ্রিক শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। 'এবড়' যার অর্থ পৃথিবী এবং 'মৎধঢ়যু' অর্থ বর্ণনা। কাজেই 'এবড়মৎধঢ়যু' শব্দের অর্থ পৃথিবীর বর্ণনা। প্রাচীন গ্রিসের ভূগোলবিদ ইরাটসথেনিস সর্বপ্রথম 'এবড়মৎধঢ়যু' শব্দটি ব্যবহার করেন।
প্রশ্ন :'পার্কের' পরিবেশ সম্পর্কিত মতবাদটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরিবেশ সম্পর্কে 'পার্ক' বলেছেন, পরিবেশ বলতে স্থান ও কালের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে মানুষকে ঘিরে থাকা সকল অবস্থার যোগফল বোঝায়। স্থান ও কালের পরিবর্তনের সাথে পরিবেশও পরিবর্তিত হয়। যেমন : শুরুতে মাটি, পানি, বায়ু, উদ্ভিদ, প্রাণী নিয়ে ছিল মানুষের পরিবেশ। পরবর্তীতে এর সাথে যোগ হয়েছে মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কার্যাবলি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন ধরনের পরিবেশ।
প্রশ্ন :পরিবেশ সম্পর্কিত 'আর্মসের' মতবাদটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরিবেশ বিজ্ঞানী 'আর্মসের' মতে, জীবসম্প্রদায়ের পরিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে। মানুষ যেখানেই বাস করুক তাকে ঘিরে একটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজমান। প্রকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। নদী নালা, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, বন, জঙ্গল, ঘরবাড়ি, রাস্তঘাট, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি, মাটি ও বায়ু নিয়ে গড়ে ওঠে পরিবেশ। কোনো জীবের চারপাশের সকল জীব ও জড় উপাদানের সর্বসমেত প্রভাব ও সংঘটিত ঘটনা হলো ওই জীবের পরিবেশ। সুতরাং 'আর্মসের' মতবাদটি যথার্থ।
প্রশ্ন :পরিবেশ কীভাবে গড়ে ওঠে?
উত্তর : প্রকৃতি ও প্রকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। নদীনালা, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি, মাটি ও বায়ু নিয়ে গড়ে ওঠে পরিবেশ।
প্রশ্ন :মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে সম্বন্ধ আছে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষ পৃথিবীতে বাস করে এবং এই পৃথিবীতেই তার জীবনযাত্রা নির্বাহ করে। পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ তার জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। পৃথিবীর জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি, উদ্ভিদ, প্রাণী, নদনদী, সাগর, খনিজ সম্পদ তার জীবনযাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তার ক্রিয়াকলাপ আবার পরিবেশে ঘটায় নানান রকম পরিবর্তন। ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত, রাস্তাঘাট, শহর বন্দর নির্মাণ প্রকৃতি ও পরিবেশকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত করে। মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে এই মিথষক্রিয়ার একটি সম্বন্ধ আছে। এই সম্বন্ধের মূলে আছে কার্যকারণের খেলা।
প্রশ্ন :ভূগোলের সঙ্গে পরিবেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত কেন?
উত্তর :ভূগোলের সাথে পরিবেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ভূগোল আলোচনা করে পৃথিবীর গঠন, প্রকৃতি, পাহাড় পর্বত, নদীনালা, গাছপালা, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, জলবায়ু, প্রাণিজগৎ প্রভৃতি। আর পরিবেশ হলো আমাদের চারপাশে বিভিন্ন উপাদান। সুতরাং পরিবেশের সাথে ভূগোল ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। বর্তমানে ভূগোল ও পরিবেশ সম্পৃক্ত করে পড়ানো হয়। প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয় পরিবেশ ভূগোলে গুরুত্ব বহন করে।
প্রশ্ন :ভূগোলের পরিধি বর্ণনা কর।
উত্তর : ভূগোলের পরিধি বলতে এর কার্যক্ষেত্রের বিস্তৃতিকে বোঝায়। পরিবেশে মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ড ভূগোল ও পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন আবিষ্কার, চিন্তা-ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবোধের পরিবর্তন ভূগোল ও পরিবেশের পরিধিকে অনেক বিস্তৃত করেছে। এখন নানান রকম বিষয় যেমন : ভূমিরূপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রশ্ন :প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয় কোনগুলো?
উত্তর : ভূগোলের যে শাখায় ভৌত পরিবেশ ও এর মধ্যে কার্যরত বিভিন্ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলা হয়। পৃথিবীর ভূমিরূপ, এর গঠনপ্রক্রিয়া, বায়ুমন্ডল, বারিমন্ডল, জলবায়ু ইত্যাদি প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়।
প্রশ্ন :অর্থনৈতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয় কোনগুলো?
উত্তর : প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যেসব কাজ করে তা অর্থনৈতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়। এগুলোর মধ্যে অন্তর্গত হলো- কৃষিকাজ, পশুপালন, বনজ সম্পদ ও খনিজ সম্পদ সংগ্রহ, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা ইত্যাদি।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়