প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয়পত্র থেকে পদ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নবম ও দশম শ্রেণির পড়াশোনা
প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
তাহের সিদ্দিকী, শিক্ষক আগ্রাণ উচ্চ বিদ্যালয়, নাটোর য়
সমুচ্চয়ী অব্যয়
যে অব্যয় পদ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের অথবা বাক্যস্থিত একটি পদের সঙ্গে অন্য একটি পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে সমুচ্চয়ী অব্যয় বা সম্বন্ধবাচক অব্যয় বলে।
ক) সংযোজক অব্যয়
১. উচ্চপদ ও সামাজিক মযার্দা সকলেই চায়। এখানে ‘ও’ অব্যয়টি বাক্যস্থিত দুটি পদের সংযোজন করছে।
২. তিনি সৎ, তাই সকলেই তাকে শ্রদ্ধা করে। এখানে ‘তাই’ অব্যয়টি দুটি বাক্যের সংযোজন ঘটাচ্ছে।
আর, অধিকন্তু, সুতরাং শব্দগুলোও সংযোজক অব্যয়।
খ) বিয়োজক অব্যয়
১. হাসেম কিংবা কাসেম এর জন্য দায়ী। এখানে ‘কিংবা’ অব্যয়টি দুটি পদের (হাসেম এবং কাসেমের) বিয়োগ সম্বন্ধ ঘটাচ্ছে।
২. ‘মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন’। এখানে ‘কিংবা’ অব্যয়টি দুটি বাক্যাংশের বিয়োজক। আমরা চেষ্টা করেছি বটে কিন্তু কৃতকাযর্ হতে পারিনি। এখানে ‘কিন্তু’ অব্যয় দুটি বাক্যের বিয়োজক। বা, অথবা, নতুবা, না হয়, নয়তো শব্দগুলো বিয়োজক অব্যয়।
গ) সংকোচক অব্যয়
তিনি বিদ্বান অথচ সৎ ব্যক্তি নন। এখানে ‘অথচ’ অব্যয়টি দুটি বাক্যের মধ্যে ভাবের সংকোচ সাধন করেছে। কিন্তু, বরং শব্দগুলোও সংকোচক অব্যয়।
অনুগামী সমুচ্চয়ী অব্যয় : যে, যদি, যদিও, যেন প্রভৃতি কয়েকটি শব্দ সংযোজক অব্যয়ের কাজ করে থাকে। তাই তাদের অনুগামী সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন :
১. তিনি এত পরিশ্রম করেন যে তার স্বাস্থ্যভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
২. আজ যদি (শতর্বাচক) পারি, একবার সেখানে যাব।
৩. এভাবে চেষ্টা করবে যেন কৃতকাযর্ হতে পার।
অনন্বয়ী অব্যয়
যে সকল অব্যয় বাক্যের অন্য পদের সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ না রেখে স্বাধীনভাবে নানাবিধ ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয় তাদের অনন্বয়ী অব্যয় বলে।
যেমন :
ক) উচ্ছ¡াস প্রকাশে: মরি মরি! কী সুন্দর প্রভাতের রূপ।
খ) স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি জ্ঞাপনে: হ্যা, আমি যাব। না, আমি যাব না।
গ) সম্মতি প্রকাশে: আমি আজ আলবত যাব। নিশ্চয়ই পারব।
ঘ) অনুমোদনবাচকতায়: আপনি যখন বলছেন, বেশ তো আমি যাব।
ঙ) সমথর্নসূচক জবাবে: আপনি যা জানেন তা তো ঠিকই বটে।
চ) যন্ত্রণা প্রকাশে: উঃ! পায়ে বড্ড লেগেছে। নাঃ! এ ক অসহ্য।
ছ) ঘৃণা বা বিরক্তি প্রকাশে:ছি ছি! তুমি এত নীচ। কী আপদ! লোকটা যে পিছু ছাড়ে না।
জ) সম্বোধনে: ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।
ঝ) সম্ভাবনায়: সংশয়ে সংকল্প সদা টলে, পাছে লোকে কিছু বলে।
ঞ) বাক্যালংকার অব্যয় : কয়েকটি অব্যয় শব্দ নিরথর্কভাবে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের শোভাবধর্ন করে, এদের বাক্যালংকার অব্যয় বলে।
যেমন :
১. কত না হারানো স্মৃতি জাগে আজও মনে।
২. হায়রে ভাগ্য, হায়রে লজ্জা, কোথায় সভা, কোথায় সজ্জা।
অনুসগর্ অব্যয়
যে সকল অব্যয় শব্দ বিশেষ্য ও সবর্নাম পদের বিভক্তির ন্যায় বসে কারকবাচকতা প্রকাশ করে তাদের অনুসগর্ অব্যয় বলে। যেমন : ওকে দিয়ে এ কাজ হবে না। (দিয়ে অনুসগর্ অব্যয়)। অনুসগর্ অব্যয় ‘পদান্বয়ী অব্যয়’ নামেও পরিচিত।
অনুসগর্ অব্যয় দুই প্রকার। যেমন : বিভক্তিসূচক অনুসগর্ অব্যয় ও বিভক্তিসম অনুসগর্ অব্যয়
অনুকার অব্যয়
যে সকল অব্যয় অব্যক্ত রব, শব্দ বা ধ্বনির অনুকরণে গঠিত হয় তাদের অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয় বলে। যেমন :
বজ্রের ধ্বনি : কড় কড়
মেঘের গজর্ন : গুড় গুড়
বৃষ্টির তুমূল শব্দ : ঝম ঝম
সিংহের গজর্ন : গর গর
স্রোতের ধ্বনি : কল কল
ঘোড়ার ডাক : চিহি চিহি
বাতাসের গতি : শন শন
কাকের ডাক : কা কা
শুষ্ক পাতার শব্দ : মর মর