ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

হাবিবুর রহমান বাপ্পা, সহকারী শিক্ষক, শহীদ বীর-উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
দশম অধ্যায় ৫) বৃক্ক বা কিডনি দলের নাম :বৃক্ক ও কিডনি নির্ধারিত আঙ্গের বর্ণনা : বাহ্যিক গঠন মানবদেহের বক্কপিঞ্জরের ঠিক নিচে উদর গহ্বরের পেছনের দিকে মেরুদন্ডের দু'পাশে একটি করে মোট দুটি বৃক্ক অবস্থান করে। সাধারণত বৃকটি ডান বৃক্ক অপেক্ষা কিছুটা বড়। দেখতে অনেকটা শিম বীজের মতো এবং গাঢ় লালচে বাদামি বর্ণের। একটি পরিণত বৃক্কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০-১২ সেন্টিমিটার, প্রস্থ প্রায় ৫-৬ সেন্টিমিটার এবং পুরত্ব প্রায় ৩ সেন্টিমিটার। পুরুষের একটি বৃক্কের ওজন প্রায় ১৫০ ১৭০ গ্রাম এবং স্ত্রীলোকের প্রায় ১৩০ ু ১৫০ গ্রাম হয়। এর পার্শ্বদেশ উত্তল, ভিতরের দিক অবতল। অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাস (ঐরষঁং) বা হাইলাম (ঐরষঁস) বা বৃক্ক নাভী বলে। কোনো তন্ত্রের অংশ? এই তন্ত্র শরীরে কী কী কাজ করে? বৃক্ক বা কিডনি রেচনতন্ত্রের অংশ। আমাদের শরীর থেকে তরল বর্জ্য বা মুত্র যাতে শরীরের বাইরে বের হয়ে আসতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের রেচনতন্ত্র কাজ করে, যা মূলত আমাদের বৃক্ক(করফহবু), মূত্রনালি (টৎবঃবৎ) এবং মুত্রথলি (ইষধফফবৎ) ইত্যাদি মিলে তৈরি হয়। মুত্র উৎপাদন এবং এর মাধ্যমে বস্তু থেকে ক্ষতিকর নাইট্রোজেন যৌগ এবং অন্যান্য বর্জ্য অপসারণ করে এই তন্ত্র। কেন সবচেয়ে বেশি দরকারি অঙ্গ? শরীরের অতিরিক্ত পানি, লবণ এবং জৈব পদার্থগুলো সাধারণত রেচনের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দিয়ে বৃক্ক দেহের শারীরবৃত্তীয় ভারসাম্য রক্ষা করে এবং শরীর সুস্থ রাখে। এজন্য পাকস্থলী সবচেয়ে বেশি দরকারি অঙ্গ। ৬) হাড় বা কঙ্কাল দলের নাম :হাড় বা কঙ্কাল নির্ধারির আঙ্গের বর্ণনা : একটি ঘর তৈরি করতে হলে প্রথম এর কাঠামো বানাতে হয়। আমাদের দেহের কাঠামো হলো কঙ্কাল (ঝশবষবঃড়হ) লম্বা, ছোট, চ্যাপ্টা এবং অসমান মোট ২০৬টি অস্থি দিয়ে পূর্ণবয়স্ক মানুষের কঙ্কাল গঠিত হন। শিশুর কঙ্কালে অস্থির সংখ্যা আরও বেশি থাকে। প্রায় ৩০০টি। কোনো তন্ত্রের অংশ? এই তন্ত্র শরীরে কী কী কাজ করে? হাড় কঙ্কালতন্ত্রের অংশ। আমাদের শরীরের হাড় বা এবং তার সাধের মাংশপেশি মিলে যে তন্ত্র তৈরি করে তাকে পেশিতন্ত্র বলে। এটি কঙ্কালতন্ত্রের মিলে শরীরকে চলাচলে সাহায্য করে এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গানুগুলোকে রক্ষা করে। কেন সবচেয়ে বেশি দরকারি অঙ্গ? হাড় বা কঙ্কাল মানবদেহকে নির্দিষ্ট আকার দেয়। এছাড়াও শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ যেমন- হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী, মস্তিষ্ক ইত্যাদিকে সঠিক অবস্থানে সুরক্ষিত রাখতে কঙ্কালের বিকল্প নেই। এজন্যই হাড় বা কঙ্কাল সবচেয়ে বেশি দরকারি অঙ্গ। পঞ্চম ও ষষ্ঠ সেশন তোমরা যে ছয়টি অঙ্গের পক্ষ নিয়ে বিতর্ক করলে, সেগুলো সরাসরি ছয়টি তন্ত্রের কাজে অংশ নেয়। কিন্তু এর বাইরেও আরও তিনটি তন্ত্র রয়েছে যেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করে। এই তিনটি তন্ত্রের নাম লিখে, এদের কাজ কী তা একদম অল্প কথায়, নিজের ভাষায় দু-তিন লিখে রাখো- উত্তর : তন্ত্রের নাম : ত্বক কাজ : ১. বাইরের জগতের সঙ্গে আমাদের শরীরের একটা আবরণ বা প্রতিরক্ষা দেওয়াল তৈরি করে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। ২. ক্ষতিকর অণুজীব এবং রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ৩. শরীরকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট রোগ ক্যান্সার হতে দেহকে রক্ষা করে। তন্ত্রের নাম : অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র কাজ : ১. শরীরের বিভিন্ন প্রকৃয়া সমন্বয়ের জন্য অন্তঃক্ষরা প্রতি রাসায়নিক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে। ২. এ গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। তন্ত্রের নাম : প্রজননতন্ত্র কাজ : ১. সকল জীবের মতো মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধির মাধ্যমে মানব প্রজাতির ধারাবাহিকতাকে নিশ্চিত করে। ২. প্রজাতির ধারাকে বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। ৩. নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যযুক্ত নতুন প্রজাতি সৃষ্টির লক্ষ্যে গ্যামেট (অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণু) তৈরি করে। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন : কোষ কী? উত্তর : কোষ হলো জীবের ক্ষুদ্রতম জীবিত একক। প্রশ্ন : পেশি কলা কাকে? উত্তর : ঘূর্ণায় মেসোডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন-প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের কলাকে পেশি কলা বলে। প্রশ্ন : নার্ভ টিসু্য কাকে বলে? উত্তর : যেমন টিসু্য আমাদের শরীরের সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুতন্ত্র তৈরি করে সেসব টিসু্যকে নার্ভ টিসু্য বলে। প্রশ্ন : কানেক্টিভ টিসু্য কী? উত্তর : যেসব টিসু্য দূরবর্তী কোষগুলোকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংযুক্ত করে এবং শরীরের কাঠামোকে একত্রিত করে সেসব টিসু্যই হলো কানেক্টিভ টিসু্য। প্রশ্ন : হৃৎপিন্ডের কাজ কী? উত্তর : হুৎপিন্ডের কাজ হলো রক্ত পালনে ভূমিকা রাখা। প্রশ্ন : মানুষের শরীরের কঙ্কালতন্ত্র কতটি হাড় নিয়ে গঠিত? উত্তর : মানুষের শরীরের কঙ্কালতন্ত্র প্রায় ২০৬টি হাড় নিয়ে গঠিত। প্রশ্ন : শ্বসনতন্ত্র কী? উত্তর : আমাদের শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাসের পর ফুসফুস এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের পেশিগুলোর সমন্বয়ে গঠিত তন্ত্রই হলো শ্বসনতন্ত্র। প্রশ্ন : রক্ত সংবহনতন্ত্র কাকে বলে? উত্তর : যে তন্ত্রের মাধ্যমে রঙ প্রতিনিয়ত দেহের বিভিন্ন অঙ্গ এবং অংশে চলাচল করে তাকে রক্ত সংবহনতন্ত্র বলে। প্রশ্ন : পরিপাক কী? উত্তর : যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জটিল খাদ্যবস্তু বিভিন্ন এনজাইমের উপস্থিতিতে ভেঙে সরল খাদানে পরিণত হয় তাই পরিপাক। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়