পঞ্চম অধ্যায়
গ. অতিবেগুনি রশ্মি, জেট বিমানের সাথে 'ই' স্তর তথা স্ট্রাটোমন্ডল জড়িত। স্টধাটোমন্ডল অর্থাৎ ই এর সাথে অতিবেগুনি রশ্মির সম্পৃক্ততা আছে। এই স্তরেই ওজোন
গ্যাসের স্তর বেশি পরিমাণে আছে। যা উদ্দীপকে উলিস্নখিত হয়েছে। এ ওজোন স্তর সূর্যের আলোর বেশিরভাগ
অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেয়। এ স্তরটি না থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে প্রাণিকুল ধ্বংস হয়ে যেত। স্ট্রাটোমন্ডল অর্থাৎ ই এর সাথে জেট বিমানের সম্পৃক্ততা আছে। এই স্তরের বায়ুতে অতি সূক্ষ ধূলিকণা ছাড়া কোনোরকম জলীয়বাষ্প থাকে না। ফলে আবহাওয়া থাকে শান্ত। ঝড়-বৃষ্টি থাকে না বলেই এই স্তরের মধ্য দিয়ে সাধারণত জেট বিমানগুলো চলাচল করে। ঈ স্তরে ট্রপোমন্ডলের মতোই উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমন্ডলের মাপমাত্রা কমতে থাকে। যা ৮৩- সেলসিয়াস পর্যন্ত নিচে নেমে যায়। মেসোমন্ডল বায়ুমন্ডলের সবচেয়ে শীতলতম তাপমাত্রা ধারণ করে। উদ্দীপকে এ তথ্যটি সন্নিবেশিত হয়েছে।
ঘ. 'ঈ' স্তরটি হচ্ছে মেসোমন্ডল এবং 'উ' স্তরটি আয়নমন্ডল। এদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কারণে স্তর দুইটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাপমন্ডলের নিম্ন অংশ
আয়নমন্ডল অর্থাৎ উ-তে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা দ্রম্নত হারে বাড়তে থাকে। ভূপৃষ্ঠ থেকে পাঠানো বিভিন্ন বেতার তরঙ্গ আয়নমন্ডলের বিভিন্ন আয়নে বাধা পেয়ে পুনরায় ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। মেসোমন্ডল অর্থাৎ ঈ এর সাথে উল্কা পতনের সম্পৃক্তা আছে। মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলোর অধিকাংশ মেসোমন্ডল স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে যায়।
ষষ্ঠ অধ্যায়
বারিমন্ডল ভূপৃষ্ঠের শতকরা ৭১ ভাগ দখল করে আছে। পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে। এর মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগর সবচেয়ে বড় এবং গভীরতম। মহাসাগরে পানির নির্দিষ্ট ও নিয়মিত প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলা হয়। বিভিন্ন নিয়ামকের প্রভাবে মহাসাগরীয় স্রোতের সৃষ্টি হয়।
প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার ভাটা হয়। এগুলো হলো- চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব এবং পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি। মানব জীবনে জোয়ার ভাটার যথেষ্ট প্রভাব আছে। জোয়ার ভাটার মাধ্যমে স্রোতের বিপরীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদু্যৎ উৎপাদন করা যায়। এ ছাড়াও ভূখন্ড থেকে আবর্জনা নদীর মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
বারিমন্ডলের ধারণা : বারিমন্ডলে পানি কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় রয়েছে। পৃথিবীর শতকরা ৯৭ ভাগ পানি রয়েছে সমুদ্রে। মাত্র ৩ ভাগ পানি আছে নদী, হিমবাহ, ভূগর্ভস্থ, হ্রদ, মৃত্তিকা, বায়ুমন্ডল ও জীবমন্ডলে।
মহাসাগর : বায়ুমন্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল লবণাক্ত জলরাশিকে মহাসাগর বলে। পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে। এগুলো হলো- প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, উত্তর মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগর।
সাগর : মহাসাগর অপেক্ষা স্বল্প আয়তন বিশিষ্ট জলরাশিকে সাগর বলে।
উপসাগর : একদিকে জল এবং তিনদিক স্থল দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্র ভাগকে বলে উপসাগর।
হ্রদ : চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে হ্রদ বলে।
সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপ : সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়-
১. মহীসোপান : সমুদ্রের উপকূলরেখা থেকে তলদেশের দিকে ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।
২. মহীঢাল : মহীঢালের শেষ সীমা থেকে ভূভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সাথে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে।
৩. গভীর সমুদ্রের সমভূমি : মহীঢালের শেষ থেকে গভীর সমুদ্রের বিস্তৃত সমভূমি দেখা যায়। এখানে বহু শৈলশিরা অবস্থান করে।
৪. নিমজ্জিত শৈলাশিরা : সমুদ্র তলদেশের আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা সঞ্চিত হয়ে নিমজ্জিত শৈলশিরা গঠিত হয়।
৫. গভীর সমুদ্রখাত : গভীর সমুদ্রের সমভূমিতে গভীর খাত দেখা যায়। ম্যারিয়ান খাত পৃথিবীর গভীরতম খাত।
সমুদ্রস্রোত : সমুদ্রের পানির একটি নির্দিষ্ট দিকে চলাচলকে সমুদ্রস্রোত বলে। এটি দুই প্রকার- উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত।
সমুদ্রস্রোতের কারণ : সমুদ্রস্রোতের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. নিয়ত বায়ুপ্রবাহ
২. পৃথিবীর আহ্নিক গতি
৩. সমুদ্রজলের তাপমাত্রার পার্থক্য
৪. মেরু অঞ্চলে সমুদ্রে বরফের গলন
৫. সমুদ্রের গভীরতার তারতম্য
৬. সমুদ্রজলের লবণাক্ততার পার্থক্য
৭. ভূখন্ডের অবস্থান।
সমুদ্রস্রোতের প্রভাব : সমুদ্রস্রোতের প্রভাব মানবজীবনের নানাক্ষেত্রে বিস্তৃত, যেমন-
১. পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর প্রভাব
২. আবহাওয়ার উপর প্রভাব
৩. কুয়াশা ও ঝড়ঝঞ্ঝা সৃষ্টি
৪. মৎস্য ব্যবসায় সুবিধা
৫. হিমশৈলের আঘাতে বিপদ
৬. সমুদ্রে অগভীর মগ্নচড়ার সৃষ্টি।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়