প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রাথমিক বিজ্ঞান

বায়ু দূষণ

প্রকাশ | ২৭ মে ২০১৯, ০০:০০

নূরমোহাম্মদ দেওয়ান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষা নিকেতন, চাঁদপুর
চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন. বায়ু কিভাবে দূষিত হয় তা আলোচনা কর। উত্তর : নিম্নলিখিত উপায়ে বায়ু দূষিত হয়- ১. ইটের ভাটা, কলকারখানা ও যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া বাতাসে মেশে। এ রকম ধোঁয়ায় থাকে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস, যা বায়ু দূষণ ঘটায়। ২. রান্নার চুলা থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় উৎপন্ন বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড বায়ুতে মিষে বায়ু দূষণ হয়। ৩. কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস গোড়ানোর ফলে উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফারের অক্সাইড বায়ুতে মিশে বায়ু দূষণ হয়। ৪. বিড়ি, সিগারেট থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া বায়ুতে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। ৫. যক্ষ্ণা ও বসন্ত রোগীদের হাঁচি কাশি থেকে জীবাণু বায়ুতে মিশে বায়ুকে দূষিত করে। ৬. যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেললে ও পায়খানা করলে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ুকে দূষিত করে। প্রশ্ন. বায়ুর উপাদানগুলো আমাদের বেঁচে থাকতে কিভাবে সাহায্য করে ব্যাখ্যা কর। উত্তর: বায়ুর প্রধান উপাদানগুলো হলো- নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প। এসব উপাদান আমাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। শ্বাস নেয়ার সময় আমরা বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করি। অক্সিজেন আমাদের গ্রহণ করা খাদ্য ভেঙে শক্তি উৎপাদন করে। এ শক্তি আমাদের শরীরকে গরম রাখে। পানি থেকে মাছ অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। এ মাছ খেয়ে আমরা জীবনধারণ করি। উদ্ভিদ বায়ু থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে ও সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য তৈরি করে। আমরা বিভন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও তার পাতা সবজি হিসেবে খেয়ে থাকি ও জীবনধারণ করে বেঁচে থাকি। বায়ুর নাইট্রোজেন দ্বারা ইউরিয়া সার প্রস্তুত করা হয়। এ ইউরিয়া উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আবার নাইট্রোজেন ব্যবহার করে আমরা অনেক খাদ্য সংরক্ষণ করি। আর এভাবেই বায়ুর উপাদানগুলো আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। প্রশ্ন. বায়ু দূষণ রোধের উপায় লেখ। উত্তর : নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে বায়ু দূষণ রোধ করা যেতে পারে- ১. কালো ধোঁয়া উৎপাদন করে এমন যানবাহন ব্যবহার বন্ধ করা। ২. ইটের ভাটা লোকালয় থেকে দূরে স্থাপন করা। ৩. কম জ্বালানি ব্যবহার হয় এমন উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। ৪. শিল্পকারখানায় ধোঁয়া পরিশোধনের ব্যবস্থা করা। ৫. ধূমপান না করা, বিশেষ করে অন্য মানুষের কাছে বা বদ্ধ স্থানে ধূমপান না করা। ৬. উন্নত চুলা ব্যবহার এবং রান্নাঘরে বায়ু চলাচলের ভালো ব্যবস্থা তৈরি করা। ৭. বনভূমি সংরক্ষণ করা। প্রশ্ন. ধূমপান ক্ষতিকর কেন? উত্তর : ধূমপান যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমন পরিবেশের জন্যও। যে ব্যক্তি ধূমপান করে তার নানা অসুখ হয়। যেমন- হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসের ক্যান্সার। এসব রোগে ধূমপায়ীর মৃতু্য পর্যন্ত হতে পারে। শুধু তাই নয়, ধূমপায়ীর সামনে যে থাকে সেও একই ধরনের রোগে ভুগতে পারে। বিড়ি, সিগারেটের ধোঁয়ায় বায়ু দূষণকারী নানা উপাদান থাকে, যা বায়ু ধূষণ ঘটায়। এ দূষিত বায়ু পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। দূষিত বায়ুর মাধ্যমে নানা রোগ ছড়ায়। এসব কারণেই ধূমপান ক্ষতিকর। প্রশ্ন. অক্সিজেন কী কী কাজে ব্যবহার করা হয় সে সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখ। উত্তর : অক্সিজেন নিম্নলিখিত কাজে ব্যবহার করা হয়- ১. মানুষ ও জীবজন্তু শ্বাসকার্যের জন্য অক্সিজেন ব্যবহার করে। ২. হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীর শ্বাসকার্যের জন্য অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। ৩. উঁচু পর্বতের আরোহীরা অক্সিজেন ব্যবহার করে। ৪. ডুবুরিদের সাগরের পানির নিচে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। ৫. আগুন জ্বালাতে অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। প্রশ্ন. নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ব্যবহার সম্পর্কে আলাদা ৩টি বাক্য লেখ। উত্তর : নাইট্রোজেনের ব্যবহার- ১. ইউরিয়া সার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়। ২. মাছ, মাংস, ফল, চিপস ইত্যাদি টিন বা প্যাকেটে সংরক্ষণ করতে ব্যবহার করা হয়। কার্বন ডাইঅক্সাইডের ব্যবহার- ১. কোমল পানীয়তে ব্যবহার করা হয়। ২. অগ্নি নির্বাপকযন্ত্রে ব্যবহার করা হয়। ৩. ড্রাই আধান তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।