ভর্তি যুদ্ধ আসন্ন! চাই সঠিক প্রস্তুতি

প্রকাশ | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সুপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীবৃন্দ ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার আসনটি নিশ্চিত করতে তোমাকে লড়তে হবে ভর্তি যুদ্ধে। অন্যান্য বছরের তুলনায় আসছে ২০২৫ সালটা একটু ভিন্ন, এ বছরের শুরুতেই ভর্তি যুদ্ধ। আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয় ভালো কিছু পাওয়ার জন্য। সাফল্য এমনি এমনি আসে না বা কাকতালীয় কিছু নয়, সবই সাধনার ফল। 'কস্ট না করলে কেস্ট মিলে না' এটি তো সবারই জানা। যেহেতু, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল অনেক আগেই প্রকাশিত হয়েছে সেহেতু পরীক্ষার প্রস্তুতি সবাই ভালোভাবে নিতে পেরেছ। যথাযথ প্রস্তুতির জন্য তোমাকে প্রতিনিয়ত সাধনা করতে হবে, সময়ের মূল্য দিতে হবে। মনে রাখতে হবে- সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। সুতরাং, ভর্তি পরীক্ষার পূর্ব পর্যন্ত এক মুহূর্ত সময়ও অবহেলায় নষ্ট করা যাবে না। এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভর্তিচ্ছুরা বিভিন্ন ভর্তি কোচিং, প্রাইভেট ব্যাচ ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই গ্রাম কিংবা মফস্বল শহর থেকে বিভাগীয় শহর অথবা রাজধানীতে গিয়ে ভর্তি কোচিং করছে। অভিভাবক ও ভর্তিচ্ছুদের চিন্তার যেন শেষ নেই। চিন্তার কারণ একটাই, সন্তান কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় কি না। একটা নির্দিষ্ট সিলেবাস শেষ করে ভালো পড়াশুনো করে এ পস্নাস পাওয়া যেতে পারে। মানে একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পড়াশোনা ও সব বিষয়ে একটা নির্দিষ্ট নম্বর পেলেই এ পস্নাস নিশ্চিত হতে পারে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে চান্স পাওয়া একটু ভিন্ন। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেতে হলে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় থাকতে হবে, মেধা তালিকার শীর্ষে থাকতে হবে। আমাদের দেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন থাকে। কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে কখনো কখনো একটি আসনের বিপরীতে শতাধিক প্রার্থীকে লড়তে হয়। যেহেতু আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট, সেক্ষেত্রে মেধা তালিকায় শীর্ষে থাকারাই স্থান পায়। কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় যেন জীবনের উইকেট পড়ে গেল,সবকিছু শেষ হয়ে গেল এমনটা একেবারেই ঠিক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা মেধাবী শিক্ষার্থীরা বড় হয় সরকারি আমলা হয়, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। অর্থাৎ এদের দ্বারা দেশের নির্দিষ্ট একটা চাহিদা পূরণ হয়, কিন্তু এর বাইরে ও যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন তাদের কেউ কেউ হয়ত কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পায়নি, এমকি কেউ হয়তো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই পড়েননি। বিল গেটস,স্টিভ জবস কিংবা আমাদের দেশে এমন অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, শিল্পপতি রয়েছেন, তারা হয়তো তেমন কোন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন। সুতরাং কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় চান্স না পাওয়া মানে জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। খুব বেশি দূরে নয়, আমাদের দেশেরই সাবেক একজন মহামান্য রাষ্ট্রপতি, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ফরম কিনতে গিয়েছিলেন, তার এসএসসি, এইচএসসির ফলাফল দেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ফরমই দেননি, কিন্তু ভাগ্যের কি খেলা! ওই ছাত্রই পরবর্তীতে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি হয়ে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে সমাবর্তনে গ্রাজুয়েটদের হাতে সনদ তুলে দেন। সুতরাং জীবনের একমাত্র পথেই যে সফলতা এমনটা নয়, যেকোনো পথই যদি ধৈর্য একাগ্রতার সঙ্গে পাড়ি দেওয়া যায় তবে অবশ্যই সফলতার দেখা মিলবে। সে কারণেই সফলতার জন্য ধৈর্য ও একাগ্রতার সঙ্গে প্রস্তুতির কোন বিকল্প নেই। সুতরাং ধৈর্যের সঙ্গে প্রস্তুতি নাও সফলতা তোমার হাতের মুঠোয় আসবেই। আর এক পথে সফল না হলে ভেঙে পড়লে চলবে না, অন্য পথে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মশিউর রহমান ইংরেজি শিক্ষক আছমত আলী খান ইনস্টিটিউশন, বরিশাল।