প্রশ্ন: নিচের শব্দগুলো নিয়ে গঠিত খাদ্য শৃঙ্খলের সঠিক ক্রম ব্যাখ্যা কর। ঈগল, সূর্য, ঘাস, পোকামাকড়, সাপ, ব্যাঙ।
উত্তর:ঈগল, সূর্য, ঘাস, পোকামাকড়, সাপ, ব্যাঙ-এ শব্দগুলো নিয়ে গঠিত খাদ্যশৃঙ্খলের সঠিকক্রম হলো :সূর্য > ঘাস > পোকামাকড় > ব্যাঙ > সাপ > ঈগল সকল শক্তির মূল উৎস সূর্য। সকল প্রাণীই শক্তির জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল। ঘাস সূর্যের আলো ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। আবার, পোকামাকড় খাদ্য হিসেবে ঘাস খায়। ব্যাঙ পোকামাকড় খায়। একইভাবে, সাপ ব্যাঙ খায় এবং ঈগল সাপ খায়। এভাবে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে শক্তি প্রবাহ সূর্য থেকে ঈগল পর্যন্ত সঞ্চারিত হয়।
প্রশ্ন: জীব কীভাবে বায়ুর উপর জীব কীভাবে নির্ভরশীল তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বেঁচে থাকার জন্য জীব বিভিন্ন জড় বস্তুর উপর নির্ভর করে। তার মধ্যে বায়ু অন্যতম। জীব (উদ্ভিদ ও প্রাণী) শ্বসন প্রক্রিয়ায় খাদ্য থেকে শক্তি উৎপাদনের জন্য বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করে। আবার সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরিতে বায়ু থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে ও অক্সিজেন ত্যাগ করে। এভাবেই জীব বেঁচে থাকার জন্য বায়ুর উপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন: উদ্ভিদের জন্য বীজের বিস্তরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মাতৃউদ্ভিদ থেকে বিভিন্ন স্থানে বীজের ছড়িয়ে পড়াই হলো বীজের বিস্তরণ এ বিস্তরণ নতুন নতুন উদ্ভিদ আবাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বিভিন্ন পশু-পাখি এ বীজ বিস্তরণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। বীজের বিস্তরণ না ঘটলে কোনো উদ্ভিদ শুধু একটি নির্দিষ্ট স্থানেই জন্মাত। এতে কোনো অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে কোনো নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে অর্থাৎ বীজ বিস্তরণের ফলে পরিবেশে উদ্ভিদের অস্তিত্ব টিকে আছে। তাই উদ্ভিদের জন্য বীজের বিস্তরণ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: তোমার টেবিলের উপরে রাখা গাছটি মারা যাচ্ছে। তোমার বন্ধুরা গাছটিকে জানালার পাশে নিয়ে রাখার পরামর্শ দিল। কেন?
উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় টেবিলে রাখা মরণাপন্ন গাছটির খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া চালু করার জন্য বন্ধুরা গাছটিকে জানালার পাশে নিয়ে রাখার পরামর্শ দিল। সবুজ উদ্ভিদ পাতায় থাকা ক্লোরোফিলের সাহায্যে মাটিস্থ পানি, বায়ুস্থ কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সূর্যালোকের উপস্থিতিতে শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে। বাস্তুসংস্থানে থাকা উপাদানগুলোর মধ্যে একমাত্র সবুজ উদ্ভিদই খাদ্য উৎপাদক। কিন্তু সূর্যালোকের অনুপস্থিতিতে এ প্রক্রিয়াটি বন্ধ থাকে। তাই টেবিলে রাখা গাছটি মারা যাচ্ছিল। গাছটিকে জানালার পাশে নিয়ে এলে তা আবার সজীব হয়ে উঠবে।
প্রশ্ন: উদ্ভিদ কোন প্রক্রিয়ায় খাদ্য গ্রহণ করে? উদ্ভিদ কীভাবে প্রাণীকে সাহায্য করে তার একটি উদাহরণ লেখ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তোমার এলাকায় উদ্ভিদ সংরক্ষণের তিনটি উপায় লেখ।
উত্তর : উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে। প্রাণী নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। উদ্ভিদ সূর্যের আলো, মাটি, পানি, বায়ু ইত্যাদি ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন করে প্রাণীকে সাহায্য করে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমার এলাকায় উদ্ভিদ সংরক্ষণের ৩টি উপায় হলো :
-পরিবেশ সংরক্ষণের অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
-বৃক্ষ নিধন বন্ধ করা জরুরি। যদি বৃক্ষ নিধন করা হয় তবে ১টি কাটলে ২টি লাগাতে হবে।
-বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ ও বনায়নের মাধ্যমে উদ্ভিদ সংরক্ষণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব।
প্রশ্ন: তুমি কিছু গাছ রোপণ করবে। গাছের বৃদ্ধির জন্য তোমাকে মাটি, পানি এবং পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করতে হবে। গাছটি অন্ধকারে রাখলে কী ঘটবে? গাছটিতে পানি না দিলে কী ঘটবে? বালিতে রোপণ করলে কী ঘটবে তা তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : গাছটি অন্ধকারে রাখলে মারা যাবে, কারণ উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে সূর্যালোকের প্রয়োজন। পানি না দিলে গাছটি অল্প দিনেই মারা যাবে। কারণ, সূর্যালোকের উপস্থিতিতে খাদ্য তৈরি করতে পানির দরকার। বালিতে রোপণ করলে গাছটি ধীরে ধীরে মারা যাবে কারণ- বালিতে তুলনামূলকভাবে পানির পরিমাণ কম। গাছটি খাদ্য তৈরির জন্য পর্যাপ্ত পানি পাবে না।
প্রশ্ন: পরিবেশে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অক্সিজেনের সমতা রক্ষায় সালোকসংশ্লেষণ কী ভূমিকা রাখে?
উত্তর : বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ ২০.৬% এবং কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ ০.০৩%। এ শতকরা পরিমাণ মোটামুটিভাবে সমান থাকে এবং এর জন্য সালোকসংশ্লেষণের ভূমিকা অপরিসীম। পুরো জীবগোষ্ঠী শ্বাসকার্য চালানোর জন্য বাতাসের অক্সিজেন ব্যবহার করে এবং তার পরিবর্তে কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করে। এ ঘটনা যদি ক্রমাগত চলতে থাকে তবে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যেত এবং পরিবেশ দূষিত হয়ে অক্সিজেনের অভাবে জীবকূল বেঁচে থাকত না। প্রকৃতপক্ষে তা ঘটে না। সবুজ উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে এবং বাতাসে অক্সিজেন ত্যাগ করে। ফলে বায়ুতে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের সমতা বজায় থাকে।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়