প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি (প্রাথমিক বিজ্ঞান)

প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৯, ০০:০০

নূরমোহাম্মদ দেওয়ান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষা নিকেতন, চাঁদপুর য়
বৃষ্টিতে করণীয়-
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকে কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নোত্তর দেয়া হলো অধ্যায় ১১ প্রশ্ন। বায়ুপ্রবাহের কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়ার তারতম্য ঘটে- ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : বায়ুপ্রবাহ একেক সময় একেক দিক দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে আবহাওয়ারও পার্থক্য দেখা যায়। যেমন- শীতকালে বাংলাদেশের উত্তর দিক থেকে বায়ু দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু স্থলভাগ থেকে আসে বলে এতে জলীয় বাষ্প কম থাকে তাই বৃষ্টি কম হয়। আবার গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বায়ু বঙ্গোপসাগর এলাকা থেকে বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত হয়। দক্ষিণ দিকের এ বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে এবং এ জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে বৃষ্টি হয়। এজন্য গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বায়ু আর্দ্র থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টি হয়। প্রশ্ন। আমাদের জীবনে আবহাওয়ার প্রভাব সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখ। উত্তর : আবহাওয়া আমাদের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন- ১. শীত পড়লে গরম কাপড় পরি। ২. বৃষ্টি হলে ছাতা নিয়ে বাইরে যাই। ৩. গরম পড়লে হাতপাখা ও বৈদু্যতিক পাখা দিয়ে শরীর ঠান্ডা করি। ৪. বৃষ্টি হয় বলে আমরা নানা ফসল ফলাতে পারি। ৫. বিরূপ আবহাওয়া আমাদের জীবনে নানা সমস্যা নিয়ে আসে। যেমন- বৃষ্টি বেশি হলে সব জায়গায় পানি জমে বন্যার সৃষ্টি হবে, যা আমাদের কষ্টের সৃষ্টি করে। প্রশ্ন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখ। উত্তর : সাগরে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করার পর বাড়িঘর, গাছপালা ইত্যাদিতে বাধা পেয়ে দুর্বল হয়ে যেতে থাকে। তবে দুর্বল হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বাড়িঘর, মাছের খামার, ক্ষেতের ফসল ও গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়; মানুষ ও গবাদিপশু মারা যায়। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে আসা জলীয়বাষ্পের প্রভাবে সমুদ্র থেকে ঢেউ আকারে লবণাক্ত পানি উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবেশ করে। অনেক সময় জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় অঞ্চলের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। প্রশ্ন। বিরূপ আবহাওয়া কী? তুমি কখনো বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব দেখেছ? দেখলে তা ৪টি বাক্যে বর্ণনা কর। উত্তর : কখনো কখনো কোনো এলাকায় বায়ুর চাপ ভীষণভাবে কমে গেলে উচ্চচাপের এলাকা থেকে বায়ু নিম্নচাপের এলাকার দিকে ধাবিত হয়। উক্ত নিম্নচাপ এলাকায় চাপ খুম কমে গেলে যে অস্বাভাবিক আবহাওয়া দেখা যায় তাই বিরূপ আবহাওয়া। আমার বাড়ি উপকূলীয় অঞ্চলে, আমাদের এলাকায় প্রায়ই আবহাওয়া বিরূপ হওয়ার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। আমার দেখা এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিচে দেয়া হলো- বাড়িঘর, গাছপালা ও রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়েছিল। বন্যার কারণে মাছের খামার ও ক্ষেতের ফসল ভেসে গিয়েছিল। মানুষ ও গবাদিপশু মারা গিয়েছিল। বৈদু্যতিক খুঁটি ভেঙে গিয়ে গোটা এলাকা বিদু্যৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। প্রশ্ন। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় পদক্ষেপ কী হতে পারে বলে তুমি মনে কর? ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে আঘাত হানে। তাই উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় পদক্ষেপগুলো নিচে দেয়া হলো- প্রথমত ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে। \হজানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য উঁচু করে মজবুত আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। নিচু এলাকায় বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর জন্য উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ তৈরি করতে হবে। প্রশ্ন। নিম্নচাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়? উত্তর : সাধারণত কোনো জায়গার বায়ু বেশি ঘন হলে বায়ুচাপ বেশি হয় এবং বায়ু হালকা হলে বায়ুচাপ কম হয়। বায়ুচাপ কম-বেশি হলে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। বায়ুপ্রবাহ আবার বেশি চাপের জায়গা থেকে কম চাপের জায়গায় প্রবাহিত হয়। কোনো জায়গার তাপমাত্রা যখন খুব বেশি হয় তখন সেখানকার বায়ু তাপে প্রসারিত হয়। প্রসারিত হওয়ার ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় এবং বায়ু হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। এর ফলে ওই জায়গার বায়ুচাপ কমে যায় ও নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।