পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

আরিফ আনজুম, সহকারী শিক্ষক, আমতলী মডেল স্কুল, বগুড়া।
প্রশ্ন:শক্তি বিভিন্ন রূপে বিরাজ করছে- এরূপ শক্তির সংক্ষেপে পরিচয় দাও। উত্তর:শক্তি তাপ, বিদু্যৎ, শব্দ, আলোক, চুম্বক ইত্যাদি রূপে প্রকৃতিতে বিরাজ করে। এরূপ শক্তির পরিচয় নিম্নরূপ : তাপ শক্তি : তাপ এক প্রকার শক্তি যা ঠান্ডা ও গরমের অনুভূতি জাগায়। পদার্থের ক্ষুদ্র কণিকাগুলোর গতির ফলে তাপ শক্তির সৃষ্টি হয়। সূর্য, পেট্রোলিয়াম, কাঠ প্রভৃতি তাপ শক্তির উৎস। আলোক শক্তি : আলো এক প্রকার শক্তি। আলোর সাহায্যে ছবি তোলা যায়। সূর্যের আলোতে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য প্রস্তুত করে। বিদু্যৎ শক্তি : রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা এ শক্তি উৎপাদিত হয়। প্রশ্ন:বিদু্যৎ শক্তি যে আলোক শক্তি, শব্দ শক্তি, তাপ শক্তি ও গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এর উদাহরণ দাও। উত্তর:বিদু্যৎ এক প্রকার শক্তি। এ শক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। বিদু্যৎ শক্তিকে বিভিন্ন শক্তিতে রূপান্তরের উদাহরণ : ১. আলোক শক্তিতে রূপান্তর : টর্চলাইট, বৈদু্যতিক বাল্ব, টিউবলাইট। ২. শব্দ শক্তিতে রূপান্তর : রেডিও, টেলিভিশন, টেলিফোন। ৩. তাপ শক্তিতে রূপান্তর : বৈদু্যতিক চুলা, ইস্ত্রি। ৪. গতিশক্তিতে রূপান্তর : বৈদু্যতিক পাখা, মোটর ইঞ্জিন। প্রশ্ন:বিদু্যৎ শক্তি ব্যবহারের ৪টি দৃষ্টান্ত উলেস্নখ কর। উত্তর:বিদু্যৎ শক্তি ব্যবহারের ৪টি দৃষ্টান্ত নিম্নরুপ: ১. রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার ইত্যাদি বিদু্যৎ শক্তির সাহায্যে চলে। ২. বিদু্যৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করে রান্নাবান্নার কাজ করা যায়। ৩. বিদু্যৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করে বৈদু্যতিক বাতি জ্বালানো হয়। ৪. বিদু্যৎ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে বৈদু্যতিক পাখা চালানো হয়। প্রশ্ন:পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণের ১টি করে ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখাও। উত্তর:পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণের একটি করে ব্যবহারিক প্রয়োগ নিচে উলেস্নখ করা হলো- পরিবহন : একটি ধাতব দন্ডের এক প্রান্ত আগুনে রেখে অন্য প্রান্ত হাতে ধরে রাখলে কিছুক্ষণ পরেই হাতে বেশ গরম অনুভব হয়। তাপ দন্ডের উচ্চ তাপমাত্রার অংশ থেকে নিম্ন তাপমাত্রার অংশে সঞ্চালিত হওয়ার জন্য অর্থাৎ পরিবহন পদ্ধতির জন্য এমন হয়। পরিচলন : ঘরের এক প্রান্তে হিটার জ্বালালে অন্য প্রান্তের বাতাস যে গরম হয়ে উঠে সেটা পরিচলন পদ্ধতিতে ঘটে থাকে। বিকিরণ : শীতকালে আগুনের পাশে বসে থাকলে আমাদের বেশ গরম লাগে। এর কারণ আগুন থেকে তাপ বিকিরণ প্রক্রিয়ায় আমাদের কাছে চলে আসে। প্রশ্ন:গতি শক্তি কাকে বলে? গতি শক্তির উদাহরণ দাও। উত্তর:কোনো গতিশীল বস্তু গতিশীল থাকার জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে তকে গতি শক্তি বলে। গতি শক্তির উদাহরণ : ১. গতিশীল বুলেট কাঠের দেয়াল ভেদ করে যেতে পারে। বুলেট কাজ করার সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে এর গতির জন্য। এটি গতি শক্তির উদাহরণ। ২. ঢিল ছুড়ে গাছ থেকে আম পাড়া হলো। যখন ঢিল ছোড়া হয় তখন ঢিলে বল বা শক্তি থাকে। বল বা শক্তি পাওয়ায় ঢিলটি গতিশীল হয়। এ গতির কারণেই গাছ থেকে আম পাড়া গেলো। এটি গতি শক্তির উদাহরণ। প্রশ্ন:"শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক " ব্যাখ্যা কর। উত্তর:সাইকেল চালানো, বিদু্যৎ চমকানো, হারমোনিয়াম বাজানো, তাপে পানি গরম করা সবই হলো শক্তি প্রয়োগের উদাহরণ। সাইকেল গতি লাভ করে চালকের পেশি শক্তি প্রয়োগে। বিদু্যৎ চমকানোর পেছনে তড়িৎ শক্তি কাজ করে। হারমোনিয়াম থেকে শক্তি শব্দরূপে ভেসে আসে। নানারকম ঘটনা বা পরিবর্তনের আড়ালে যা দায়ী তা হলো শক্তি। তাই বলা যায় শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক। প্রশ্ন:পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখ। উত্তর:যার ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য হলো : ১. পদার্থের ওজন আছে। ২. পদার্থ জায়গা দখল করে। ৩. তাপ প্রয়োগে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। ৪. বল প্রয়োগে পদার্থ বাধা দেয়। প্রশ্ন:''শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, শুধু এটি রূপ বদল করে''- ব্যাখ্যা কর। উত্তর:শক্তি এমন একটি ধারণা যার কোনো ওজন নেই, আকার নেই, আয়তন নেই কিন্তু অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। শক্তিকে কখনো সৃষ্টি করা যায় না। এটিকে শুধু রূপান্তর করা যায়। শক্তিকে যেমন সৃষ্টি করা যায় না তেমনি ধ্বংসও করা যায় না। ব্যবহার শেষ হলে এটি ব্যবহারের যোগ্যতা হারায় কিন্তু ধ্বংস হয় না। অবস্থার পরিবর্তন ঘটালে এর রূপান্তর ঘটে। হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়