প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রাথমিক বিজ্ঞান

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ-

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯, ১০:৫১

নূরমোহাম্মদ দেওয়ান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষা নিকেতন, চাঁদপুর য়
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকে কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নোত্তর দেয়া হলো অধ্যায় ১২ প্রশ্ন। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ সম্পর্কে ৫টি বাক্য লেখ। উত্তর : পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে, একে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মূল কারণ বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কলকারখানা ও যানবাহনে কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে। এসব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে পরিবেশে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বন উজাড় করে ফেলার কারণে গাছ কার্বন ডাইঅক্সাইড কম শোষণ করছে। ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে যাচ্ছে। আর যত বেশি কার্বন ডাইঅক্সাইড বাড়ছে বায়ুমন্ডলে তাপমাত্রাও তত বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটিই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ। প্রশ্ন। জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে করণীয় ৫টি কাজ উলেস্নখ কর। উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তন রোধে করণীয় কাজগুলো হচ্ছে- ১. কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ কমানো। ২. নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করা। ৩. বেশি করে গাছ লাগানো। ৪. আসবাবপত্র ও নির্মাণকাজে কাঠের ব্যবহার কমানো। ৫. কলকারখানা থেকে বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণ। অধ্যায় ১৩ প্রশ্ন। বিকল্প জ্বালানি হিসেবে সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তির কথা বলা হলো। এর ব্যবহারে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে? ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তি দুটি নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস। এ দুটি শক্তির ব্যবহারের নিম্নরূপ সুবিধা পাওয়া যাবে- ১. সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তির সাহায্যে বিদু্যৎ উৎপাদন করে বাসা, অফিস ও পানি সেচকাজে ব্যবহার করা যায়। ২. সৌরশক্তির সাহায্যে ক্যালকুলেটর চালানো যায়। ৩. বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে কলকারখানা চালানো যায়। ৪. বায়ু ও সৌরশক্তি আহরণে অবকাঠামোগত খরচ ছাড়া অন্য কোনো খরচ লাগে না। ৫. উভয় প্রকার শক্তিই পরিবেশবান্ধব। অর্থাৎ এরা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। প্রশ্ন। অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ কী? অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার কৌশল ৩টি বাক্যে লেখ। উত্তর : যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ একবার নিঃশেষ হয়ে গেলে আর পাওয়া যাবে না, সেগুলোকে বলা হয় অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন- কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ দ্রব্য। অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার ৩টি কৌশল নিচে উলেস্নখ করা হলো- ১. অনবায়নযোগ্য সম্পদের ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি যত্নবান হতে হবে। ২. তাপশক্তি, সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ও পানিশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। ৩. সীমিত ব্যবহারের পাশাপাশি বিকল্প সম্পদের উপায় উদ্ভাবনে বিশেষ মনোযোগী হতে হবে। প্রশ্ন। অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে বলে তুমি মনে কর? ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর: অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তির সবচেয়ে বড় উৎস সৌরশক্তিকে সৌর প্যানেলে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তর করে বিদু্যতের চাহিদা পূরণ করা যায়। উইন্ডমিলের মাধ্যমে বায়ুপ্রবাহ কাজে লাগিয়ে কলকারখানা চালানো যেতে পারে। এ ছাড়া মানুষ ও অন্যান্য পশু-পাখির মলমূত্র থেকে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করে জ্বালানির চাহিদা অনেকাংশ মেটানো সম্ভব। প্রশ্ন। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর। উত্তর : প্রাকৃতিক সম্পদ অফুরন্ত নয় বলে এসব সম্পদ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। তাই এসব সম্পদ ব্যবহারে যথেষ্ট যত্নবান হতে হবে। যেমন- অপ্রয়োজনে ব্যবহার না করা, ব্যবহারের মাত্রা কমানো, যতটুকু সম্ভব পুনর্ব্যবহার করা এবং পুনরুৎপাদন করা। এতে ভবিষ্যতে চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ পাওয়া যাবে। তাই প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রশ্ন। জীবাশ্ম জ্বালানি কী, তা বর্ণনা কর। উত্তর : শক্তির অতিপরিচিত উৎস কয়লা, খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসকে বলা হয় জীবাশ্ম জ্বালানি। নিচে এদের সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো- কয়লা : পৃথিবীতে একসময় অনেক বনভূমি ছিল। এসব বনের গাছ, পাতা ও কান্ড দীর্ঘ সময় মাটির নিচে চাপা পড়ে ধীরে ধীরে কয়লায় রূপান্তরিত হয়। খনিজ তেল : কোটি বছর আগে সমুদ্রের তলদেশে গাছপালা ও সামুদ্রিক প্রাণী চাপা পড়ে ধীরে ধীরে খনিজ তেলে রূপান্তরিত হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস: পৃথিবীর অভ্যন্তরের প্রচন্ড তাপ ও চাপ এ ধরনের গ্যাস সৃষ্টির মূল কারণ। প্রশ্ন। অনবায়নযোগ্য সম্পদের ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে কেন? ৫টি বাক্যে লেখ। উত্তর : যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ একবার ব্যবহার করলেই নিঃশেষ হয়ে যায় সেগুলোকে অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমন- মাটিস্থ ধাতু, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি। মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি চাহিদাও বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন আগামী ১০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সব তেল, গ্যাস বা কয়লার মতো জ্বালানি শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই এসব অনবায়নযোগ্য সম্পদের ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি যত্নবান হতে হবে।