ইতিহাসের পাতা

পাবলো নেরুদা

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়
পাবলো নেরুদা কবি ও রাজনীতিবিদ, সাহিত্যে নোবেল জয়ী জন্ম: ১২ জুলাই ১৯০৪খ্রি: মৃতু্য: ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ খ্রি:
পাবলো নেরুদা চিলিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ। প্রকৃত নাম নেফতালি রিকার্দো রেইয়েস বাসোয়ালেতা। জন্ম ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই, চিলির প্যারেল শহরে। তিনি ছিলেন রাজনৈতিক আদর্শে মার্কসবাদী। পাবলো নেরুদা বিশ্বের হাতেগোনা শ্রেষ্ঠতম কয়েকজন কবির অন্যতম, যিনি জীবৎকালে তো বটেই, এখনো সমাদৃত। পারিবারিক অনীহার কারণে তিনি ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। চেক কবি জাঁ নেরুদার (১৮৩৪-১৮৯১) অনুকরণে নিজের নাম রাখেন পাবলো নেরুদা। তার ছদ্মনাম পরে আইনি বৈধতা পায়। পাবলো নেরুদার রচনাসমগ্রকে চারটি ধারায় বিভক্ত করে দেখা হয়। প্রথম ধারায় রয়েছে প্রেম ও দুঃখ-হতাশার কবিতা। এর মধ্যে বিখ্যাত হচ্ছে টুয়েন্টি লাভ পোয়েমস অ্যান্ড এ সং অফ ডিসপেয়ার (১৯২৪) এবং দ্য ক্যাপটেইন ভার্সেস (১৯৫২)। দ্বিতীয়পর্যায়ের কবিতাগুলো একাকিত্ব ও নিপীড়নের অভিজ্ঞতা থেকে রচিত, যেমন রেসিডেন্স অন আর্থ (১৯৩৫)। তৃতীয় পর্বের কবিতাগুলো এপিকধর্মী। ১৯৫০ সালে তার বিখ্যাত এপিকধর্মী রচনা 'কান্টো জেনারেল' প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া তিনি বাস্তব জীবনের সাধারণ বস্তু নিয়ে কবিতা লিখেছেন, যেমন এলিমেন্টারি ওডস (১৯৫৪)। ১৯৩৩ সালে বের হয় তার সাড়া জাগানো কাব্যগ্রন্থ 'রেসিডেন্স অন আর্থ'। লিখিত কবিতার সংকলন 'এসপানা এন এল কোরাজন' ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৫২ সালে নির্বাসিত জীবনকালে বের হয় তার কাব্যগ্রন্থ 'লাস উভাস ওয়াই এল ভিয়েন্তো' (১৯৫৪)। ১৯৫০ সালে আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার, ১৯৫৩ সালে লেনিন শান্তি পুরস্কার এবং স্ট্যালিন শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭১ সালে নেরুদাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। নেরুদার কবিতায় উঠে এসেছে তার জীবনের বিভিন্ন সময়ের নানা পালাবদলের চিত্র। তার লেখা শেষ কবিতার নাম 'মৃতু্য'। সাধারণ মানুষ ও জীবন সম্পর্কে ব্যাপক অন্বেষণ এবং ব্যক্তিজীবন ও সাহিত্যে এর সর্বোত্তম প্রকাশ যুগ যুগ ধরে বিশ্বে নেরুদা চির স্মরণীয়। ১৯৬৯ সালে চিলির কমিউনিস্ট পার্টি নেরুদাকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত করে। কিন্তু পরে ১৯৭০ সালে সম্মিলিত বামফ্রন্টর মনোনীত প্রার্থী সালভাদর আলেন্দে নির্বাচিত হলে নেরুদা সরে দাঁড়ান এবং আলেন্দে বিপুল ভোট জয়ী হন। কিন্তু দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের চক্রান্তে চিলিতে নেমে আসে ঘোর অশান্তি। এ সময় সামরিক অভু্যত্থানে নিহত হন আলেন্দে। নেরুদাও তখন মৃতু্যশয্যায়। আলেন্দে নিহত হওয়ার মাত্র বারো দিন পর ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পাবলো নেরুদা মৃতু্যবরণ করেন। জীবন্ত কিংবদন্তি নেরুদার মৃতু্যতে সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পিনোচেট নেরুদার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকে জনসমক্ষে অনুষ্ঠিত করার অনুমতি দেননি। যদিও হাজারে হাজারে শোকাহত চিলিয়ান সেদিন কারফিউ ভেঙে পথে ভিড় জমান। পাবলো নেরুদার অন্ত্যেষ্টি পরিণত হয় চিলির সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম গণপ্রতিবাদে।